আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর অবশেষে সোমবার থেকে স্কুলে যেতে শুরু করেছে ফিলিপিন্সের শিশুরা।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে একসময় পুরো বিশ্বেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। টিকা উদ্ভাবনের পর ভাইরাস অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসায় ধীরে ধীরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলতে শুরু করে।
বর্তমানে অধিকাংশ দেশেই পুরোদমে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে হাতে গোণা যে দুই/একটি দেশে এখনও শিক্ষা কার্যক্রম পুরোপুরি চালু হয়নি ফিলিপিন্স তার একটি।
এভাবে দীর্ঘ সময় ধরে শিশুদের স্কুল থেকে দূরে রাখার ফলে শিশুরা অধিক ক্ষতি হচ্ছে বলে মত অনেক বিশেষজ্ঞদের।
কিন্তু ফিলিপিন্স সরকার হয়তো বিশেষজ্ঞদের এ পরামর্শ মানতে রাজি নয়। তাই সোমবার থেকে দেশটির প্রায় ২৪ হাজার স্কুলের মধ্যে অর্ধেকের কম স্কুলে সপ্তাহে পাঁচ দিন শ্রেণীকক্ষে পাঠদান শুরু হয়েছে।
বাকিগুলোতে অন্তত আগামী নভেম্বর মাস পর্যন্ত শ্রেণীকক্ষে এসে এবং অনলাইন উভয় মাধ্যমে ভাগাভাগি করে পাঠদান হবে বলে জানান দেশটির শিক্ষা কর্মকর্তারা।
নভেম্বরের পর দেশটির দুই কোটি ৭০ লাখ শিক্ষার্থীর সবাই শ্রেণীকক্ষে ফিরবে বলে আশা করা হচ্ছে।
যেসব স্কুল খুলেছে সেখানে শ্রেণীকক্ষে শিক্ষার্থীর ভিড় এড়াতে স্কুলের সময় ভাগ করে দেয়া হয়েছে। দেশটির শিক্ষা অধিদপ্তরের আশঙ্কা, স্কুলগুলো করোনাভাইরাসের নতুন ‘হটস্পট’ হয়ে উঠতে পারে।
দীর্ঘ সময় পর স্কুলে ফিরতে পেরে দারুণ খুশি শিশুরা। ১১ বছরের এক শিশু বলে, ‘‘স্কুলে আমরা অনেক মজা করি। এখন আবার অনেক মজা করতে পারব।”
শিশুদের মাস্ক পরে স্কুলে ঢুকতে হচ্ছে। স্কুলের প্রবেশ পথে তাদের হাত জীবানুনাশক দিয়ে জীবানুমুক্ত করা হচ্ছে।
ফিলিপিন্সে প্রায় আড়াই বছর ধরে দূরশিক্ষণের মাধ্যমে পাঠদান করা হয়েছে। কিন্তু ক্লাসে যাওয়ার সুযোগ না পাওয়ায় এইসব শিশুদের বেশিরভাগই মহামারীর আগের মানের শিক্ষা পায়নি।
গত বছর ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ফিলিপিন্সের ১০ বছর বয়সের প্রতি ১০ জন শিশুর নয়জই রিডিং পড়তে পারে না।
জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের এক বিবৃতি বলা হয়, ‘‘দীর্ঘ সময় ধরে স্কুল বন্ধ থাকা, দুর্বল স্বাস্থ্য এবং মহামারীর কারণে পারিবারিক আয় অনেক কমে যাওয়ায় ধাক্কা দরিদ্র পরিবারের শিশুদের উপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে।”