• মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ০৩:১৪ পূর্বাহ্ন

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, বুয়েটে সভা

/ ১১২ বার পঠিত
আপডেট: মঙ্গলবার, ১৬ আগস্ট, ২০২২

সেন্ট্রাল ডেস্কঃ

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের পর ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শনিবার (১৩ আগস্ট) বুয়েটে আলোচনা সভা ও দোয়ার আয়োজন করে বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা।

বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের থাকায় ছাত্রলীগের এ কর্মসূচির প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিক্ষোভ করেছে বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। রাজনৈতিক নয়, বরং বঙ্গবন্ধুর জন্য দোয়া করতে সভা বলে ছাত্রলীগ নেতারা দাবি করলে শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন তোলেন, ছাত্রলীগের ব্যানারে কেন?

শনিবার বিকেল ৫টা থেকে শুরু হয়ে সভা চলে রাত সোয়া ৮টা পর্যন্ত। এর আগে সন্ধ্যা ৭টা থেকে বিক্ষোভকারীরা ক্যাফেটেরিয়ার সামনে জড়ো হতে থাকে। এরপর সভা শেষে সাবেক বুয়েটে ছাত্রলীগ নেতারা বের হলে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ‘আবরারের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’, ‘রাজনীতির ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

সভা শেষে বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আতাল মাহমুদ বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, এটা কোনো রাজনৈতিক প্রোগ্রাম নয়। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার জন্য দোয়ার প্রোগ্রাম। এসময় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলে উঠেন, তাহলে ছাত্রলীগের ব্যানারে কেন? আপনারা বুয়েটের সাবেক শিক্ষার্থী হিসেবেও করতে পারতেন। পরে বুয়েটের ছাত্র কল্যাণ পরিচালকের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই এ প্রোগ্রাম করা হয়েছে বলে জানান ছাত্রলীগের নেতারা।

পরে ছাত্রলীগ নেতারা ক্যাম্পাস ত্যাগ করলে শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় তারা বলেন, বুয়েট প্রাঙ্গণে নিরীহ শিক্ষার্থীদের বারবার প্রাণ ঝরেছে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র সংগঠনের অপকর্মে। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর ছাত্রলীগের নৃশংস অত্যাচারে আবরার ফাহাদ নিহত হন। এর প্রতিবাদে বুয়েটের সব শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ১১ অক্টোবর এ বিশ্ববিদ্যালয়ে সব রাজনৈতিক সংগঠন এবং এর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকা সত্ত্বেও আজ সেমিনার হল বুয়েট অডিটোরিয়াম কমপ্লেক্সে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, বুয়েটের সাবেক নেতাদের আয়োজনে একটি ব্যানার দেখা যায়।

শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, এর আগে গত ২ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম হলে আরিফ রায়হান দিপের স্মৃতিফলকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং ৮ জুন সাবেকুন নাহার সনির স্মৃতিফলকে বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের পক্ষ থেকে ব্যানার টানানো হয়। ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র সংগঠনের বারবার নিজেদের উপস্থিতি জানিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করা এবং অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি পাওয়ায় বুয়েট কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। এমন কার্যক্রমের ব্যাপারে আমরা বুয়েটের সব সাধারণ শিক্ষার্থী কর্তৃপক্ষের অবস্থান এবং সুস্পষ্ট জবাব আশা করছি।

এ বিষয়ে বুয়েটের ছাত্র কল্যাণ পরিচালক (ডি এস ডব্লিউ) অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, বলা যায় তারা আমাদের থেকে অনুমতি নিয়েছে, আবার নেয়ওনি। অনুমতি নেওয়ার সময় জানিয়েছে, তারা সাবেক শিক্ষার্থী, পুনর্মিলনী করবে ক্যাম্পাসে। সে কারণে আমরা অনুমতি দেই। কিন্তু তারা বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের ব্যানারে প্রোগ্রাম করতে গেলে শিক্ষার্থীরা বাধা দেয়।

তিনি আরও বলেন, আমরা যদি জানতাম তারা বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক নেতা তাহলে অনুমতিই দিতাম না। তাই শিক্ষার্থীদের বিক্ষুব্ধ হওয়ার অধিকার আছে। আমি এই মুহূর্তে ক্যাম্পাসের বাইরে আছি। না হয় স্পটে যেতাম। কাল সকালে আমরা শিক্ষার্থীদের কথা শুনব।


আরো পড়ুন