মোঃ গিয়াস উদ্দিন সরদার, পাবনা প্রতিনিধি: বর্বরোচিত সন্ত্রাসী হামলায় আহত সাংবাদিক মানিকের পায়ের অপারেশন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।গত ৪ মে শনিবারে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতাল তার এই অপারেশন সম্পন্ন হয়। বর্তমানে তিনি অভিক্ষ ডাক্তারের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। এতে তার খরচ হয়েছে প্রায় দুই লক্ষ টাকা। হাঁটুর হাড়ের অংশ জোড়া দিতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
এর আগে নকল দুধ তৈরির সংবাদ প্রকাশের জেরে পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার দৈনিক খোলা কাগজের প্রতিনিধি মানিক হোসেন কে প্রকাশ্যে দিবালোকে বেধড়ক পিটিয়ে বাম পা ভেঙে দিয়েছিল নকল দুগ্ধ ব্যবসায়ীদের ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা। উপজেলার পুঁইবিল গ্রামে এই মারধরের ঘটনা ঘটে। মারধরের সময় মানিকের মোটরসাইকেল ও মোবাইল কেড়ে নেয় চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা। মানিক ভাঙ্গুড়া প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। ঘটনার বেশ কয়েকদিন অতিবাহিত হলেও তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করতে পারলেও মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করতে পারেননি পুলিশ ।
জানা যায়, ভাঙ্গুড়া উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের চক লক্ষীকোল গ্রামের দুগ্ধ ব্যবসায়ী রাজীব আহমেদ এবং কৈডাঙ্গা গ্রামের আবুল বাশার দীর্ঘদিন ধরে নকল দুধ তৈরির করে বাজারজাত করেন। এ নিয়ে কিছুদিন আগে মানিক আহমেদ সহ কয়েকজন সাংবাদিক নকল দুধ তৈরির ভিডিও ধারণ করে। এসব ভিডিও উপজেলা প্রশাসন ও থানা প্রশাসনকে দেখালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মত বিনিময় সভায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সুশীল সমাজের বক্তারা এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনকে অবহিত করেন। পরে এ নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রাজিব আহমেদ ও আবুল বাশারের নেতৃত্বে বায়েজিদ, রাজিব ও মাহাতাব সহ দশ বারো জন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী মঙ্গলবার সকালে পুইবিল সড়কে মানিককে একা পেয়ে বেধড়ক পিটিয়ে পা ভেঙে দেয়। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে মানিককে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায়। অবস্থা মুমূর্ষ হওয়ায় হাসপাতালের চিকিৎসকরা মানিককে পাবনা সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। সেখানে অবস্থার আরো অবনতি হলে সাংবাদিক মানিক উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে রেফার করেছেন সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক। সাংবাদিক মানিকের বাম পায়ের হাঁটুর হাড় ভেঙে গিয়েছে। গত শনিবার ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে তার পায়ের অপারেশন সম্পন্ন হয়।
আহত সাংবাদিক মানিক বলেন, সংবাদ প্রকাশের পর থেকেই নকল দুধ তৈরীর ব্যবসায়ীরা বাড়িতে এসে কয়েকদিন হুমকি দিচ্ছে। এ অবস্থায় আমাকে পিটিয়ে পা ভেঙে দিয়েছে এবং সেই পেটানোর ভিডিও করেছে ধারণ করেছে সন্ত্রাসীরা । আমার মোটরসাইকেল ও মোবাইল ছিনতাই করে নিয়েছে । আমি আমার পরিবার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। এদিকে হামলাকারী সন্ত্রাসীদের চারজন কোর্ট থেকে আগাম জামিন নিয়ে এসেই সাংবাদিক মানিকের পরিবারের উপর মামলা প্রত্যাহার করার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে। এমন অভিযোগ করেছেন মানিকের বাবা ইসমাইল হোসেন। পরে পুলিশ মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করলেও মোবাইল ফোনটি এখনো উদ্ধার করতে পারেননি থানা পুলিশ।
তবে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় আহত মানিকের পিতা বাদী হয়ে ভাঙ্গুড়া থানায় পাঁচজন কে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় চারজন কোর্ট থেকে আগাম জামিল নিলেও প্রধান আসামী রাজিব কে কোট জামিন দেননি অপরদিকে ওই আসামীকে এখনো আটক করতে পারেনি থানা পুলিশ। স্থানীয় একাধিক ব্যক্তির অভিযোগ প্রধান আসামি রাজিব নিয়মিত ভাঙ্গুড়া বাজারে ঘোরাফেরা করলেও পুলিশ বলছেন তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।