• মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ০৩:০৮ অপরাহ্ন

মালয়েশিয়ায় মুক্তিপণ দিয়েও লাশ হতে হলো বাংলাদেশি যুবককে !

/ ১১৬ বার পঠিত
আপডেট: শনিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২২

অবশেষে অপহরণের ১১ দিন পর মালয়েশিয়া প্রবাসী সোহেল মিয়ার (৩৯) অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) মালয়েশিয়ার সেলাঙ্গর রাজ্যের সেরিকাম বাগানের তামিং জায়া ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ১০ নম্বর রোডের একটি কারখানার পেছনের জঙ্গল থেকে সোহেল মিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয় পুলিশ।

মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন ও সোহেলের প্রবাসী স্বজনরা তার মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

কাজাং ওসিপিডির সহকারী কমিশনার মোহম্মদ জাইদ হাসান বলেছেন, ‘সোহেলের মরদেহে পচন শুরু হয়েছিল। তার হাত ও মুখ টেপ দিয়ে বাঁধা ছিল। অপহরণের ঘটনায় আটক চার প্রবাসী বাংলাদেশির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির সূত্র ধরে সোহেলের মরদেহ উদ্ধার করে মালয়েশিয়া পুলিশ। শুক্রবার সকালে সারডাং হাসপাতালে মরদেহ নিয়ে আসার পর সোহেলের মামা মিজান তা শনাক্ত করেন। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ হাসপাতালে রাখা হয়েছে।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় রাত ৯টার দিকে কুয়ালালামপুরের তামিংজায়া এলাকায় নিজ বাসার কাছ থেকে সোহেল মিয়াকে অপহরণ করা হয়। অপহরণকারী চক্র তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে দেশে তার পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করে। গত ২৭ সেপ্টেম্বর বরিশালের একটি ব্যাংকের মাধ্যমে অপহরণকারীদের দাবি করা ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ পাঠায় তার পরিবার। কিন্তু, এর পরও মুক্তি না দেওয়ায় মালয়েশিয়ায় দুটি ও দেশে একটি মামলা করে সোহেলের পরিবার। এছাড়া, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনেও সহায়তা চেয়ে আবেদন করা হয়।

১৫ বছর ধরে মালয়েশিয়া থাকা সোহেল টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার দক্ষিণ ধলাপাড়া গ্রামের মরহুম আহমেদ মিয়ার ছেলে।

মালয়েশিয়ার কাজাং পুলিশ জানায়, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ৫ অক্টোবর বিকেলে বেরানং এলাকা থেকে দুই বাংলাদেশি এবং পরদিন সেমেনিহে এলাকা থেকে আরও দুই বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে মামুন শিকদার ও আলমগীরের নাম প্রকাশ করা হলেও তদন্তের স্বার্থে বাকি দুজনের নাম এখনো জানায়নি পুলিশ।

একই ঘটনায় গত ৪ অক্টোবর বরগুনা থেকে মুক্তিপণের টাকাসহ নাসির উদ্দিন (৩৮) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। টাঙ্গাইলের ঘাটাইল থানায় সোহেলের ভগ্নিপতি বিল্লাল হোসেনের দায়ের করা মামলায় নাসিরকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার ঘাটাইল থানা পুলিশের করা ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করে নাসিরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের কাউন্সিলর কনসুলার জিএম রাসেল রানা বলেছেন, চার অপহরণকারীকে গ্রেফতার এবং তাদের জবানবন্দির ভিত্তিতে সোহেল মিয়ার মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি মালয়েশিয়া পুলিশ প্রশাসন আমাদের নিশ্চিত করেছে। কী কারণে, কিভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে, সেসব বিষয়ে বিস্তারিত এখনো জানা যায়নি। অপহরণের ঘটনায় আরও যারা জড়িত আছে, তাদের গ্রেফতার করতে কাজ করছে মালয়েশিয়া পুলিশ।

মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার বলেছেন, সোহেল মিয়াকে অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় জড়িত চক্রের সবাইকে কঠোর শাস্তির আওতায় আনার ব্যবস্থা করা হবে। প্রবাসে যারা দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করবে, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।


আরো পড়ুন