• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৩৬ পূর্বাহ্ন

আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন ওয়ার্ডবয়ের

/ ১০১ বার পঠিত
আপডেট: মঙ্গলবার, ২২ নভেম্বর, ২০২২

কুমিল্লায় একটি প্রাইভেট হাসপাতালের ওয়ার্ডবয়ের বিরুদ্ধে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন কলেজছাত্রীকে (১৭) যৌন নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে অভিযুক্ত ওয়ার্ডবয় দীপক চন্দ্র দাসকে হাসপাতাল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

রোববার (২০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ফেসবুকে ভিডিও বার্তায় ঘটনার বর্ণনা দিয়ে অভিযুক্তের বিচার দাবি করেন ভুক্তভোগী ছাত্রীর বড় ভাই। এর আগে শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) রাতে কুমিল্লা মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালে (টাওয়ার হাসপাতালের) এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর ভুক্তভোগী ছাত্রী বাড়ি ফিরে আবারও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ সময় তাকে অন্য একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করেছেন স্বজনরা। এ ঘটনার সময় আইসিইউতে থাকা চিকিৎসক ও নার্সদেরও শোকজ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে অভিযোগ ওঠার পর থেকে অভিযুক্ত দীপকের মোবাইল ফোন বন্ধ।

ফেসবুকে কলেজছাত্রীর বড় ভাই বলেন, ‘কুমিল্লা টাওয়ার হাসপাতালে ঘটে যাওয়া এক ভয়ঙ্কর ঘটনা আজ আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। শেষ রাতের দিকে শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) আমার বোন যখন কান্নাকাটি করতে থাকে, ভেতর থেকে আমাদের তার সঙ্গে দেখা করতে বললে আমরা দেখা করতে যাই। তখন সে কান্না করতে করতে আমাদের জানায়, দীপক নামের এক ওয়ার্ড বয় তার শরীরে একাধিকবার স্পর্শ করেছে। আমার পক্ষে আসলে এটা বর্ণনা করা সম্ভব নয়। তারপর আমরা ঘটনাটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানাই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যেন একটা দায় সারাভাবে আছে। তারা এমনভাব করছে যেন এমন ঘটনা অহরহ ঘটছে, আমরাই শুধু রিয়্যাক্ট করলাম। অভিযুক্ত ব্যক্তি ২০১৩ সাল থেকে চাকরি করছে। যদি দীপক প্রথম দিক থেকে আইসিইউতে থেকে থাকে, তাহলে সে রেগুলারই এই কাজগুলো করে গেছে। দীপকরা অন্য যেসব হসপিটালেও আছে। আমার মা-বোনরা হয়তো তাদের অত্যাচার অনাচারের শিকার হচ্ছেন। আমার এই ভিডিওর মাধ্যমে সতর্ক করাই মূল উদ্দ্যেশ্য।’

এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর বড় ভাই সাংবাদিকদের বলেন, ‘শুক্রবার আমার বোন অসুস্থ হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে আমরা তাকে কুমিল্লা মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালের (টাওয়ার হাসপাতালের) ইমার্জেন্সি ইউনিটে নিয়ে যাই। এ সময় সেখানে একজন চিকিৎসক আইসিইউতে নিয়ে যেতে বলেন। তখন আমরা আইসিইউতে নিয়ে যাই। সেখানে বিকেল থেকে পরদিন শনিবার সকাল পর্যন্ত ছিল সে।’

তিনি আরও বলেন, ‘শুক্রবার শেষ রাতের দিকে তার কান্নার কথা জানিয়ে দায়িত্বরতরা আমাদের ভেতরে যেতে দেন। পরে ভেতরে গেলে সে আমাদের জানায়, আইসিইউতে শেষ রাতের দিকে এক ব্যক্তি তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে স্পর্শ করে। তার নাম দীপক। সে হাসপাতালের ওয়ার্ডবয়। এই কারণেই সেখানে অসুস্থ বোন আমার কান্না করছিল। আমার বোন রোববার আবার অসুস্থ হয়ে গেলে হাসপাতালে নিতে হয়েছে। সে বিষয়টা মেনে নিতেই পারছে না। তবে টাওয়ার হাসপাতালে আমরা অভিযোগ দিয়েছি। তারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তারা নাকি তদন্ত কমিটিও করছে। কুমিল্লা মেডিক্যাল সেন্টারের (টাওয়ার হাসপাতালের) ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, এ ঘটনার পর অভিযুক্ত ওয়ার্ড বয়কে হাসপাতাল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া যারা ওই সময় আইসিইউতে দায়িত্বরত ছিলেন সবাইকে শোকজ করা হয়েছে। আইসিইউতে ডাক্তার ও নার্স আলাদা রয়েছে। দ্বিপক তাদের সাহায্যে নিয়োজিত ছিলেন।

এ বিষয়ে কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহাম্মদ সনজুর মোর্শেদ জানান, এ ঘটনায় এখনও কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আরো পড়ুন