• মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:১২ অপরাহ্ন

পশ্চিম বাকলিয়ায় জুয়ারী জসিমের খালপাড়ে যত অপকর্ম

/ ১৯০ বার পঠিত
আপডেট: মঙ্গলবার, ৬ জুন, ২০২৩

মোহাম্মদ জুবাইর, নিজস্ব প্রতিবেদক:-
চট্টগ্রাম নগরীর পশ্চিম বাকলিয়া দেওয়ান বাজার এলাকা যেন‌ জুয়াড়ি জসিমের অপরাধের স্বর্গরাজ। চট্টগ্রাম নগরীর পশ্চিম বাকলিয়া দেওয়াযন বাজার পুলের গোড়া এলাকার এক মুক্তিমান আতংকের নাম জসিম প্রকাশ জুয়াড়ি জসিম। যিনি এলাকায় প্রেম কলোনির ইনচার্জ হিসেবে সামান্য বেতনে চাকরি করে হয়েছেন আগুল ফুলে কলা গাছ ।

সূত্র বলছে, অর্থবিত্তের লোভে ভগ্নিপতি সোর্স শাকিলের প্রভাব কাঠিয়ে সুকৌশলে কলোনি ইনচার্জ থেকে বনে যান লক্ষ লক্ষ টাকার মালিক।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, লুলুপ জুয়ারী জসিম টাকার নেশায় এতটা বেপোরোয়া যে, তিনি পুরো এলাকায় সুদের ব্যবসা চালু করে অসহায় দুঃস্থ মানুষকে সর্বসান্ত করছে। দিনদিন জসিম প্রকাশ জুয়ারী জসিমের অপকর্ম বেড়েয় চলছে।

সূত্র আরো বলছে শত অপরাধ যেন জসিমের নিত্যদিনের সঙ্গী। প্রতিনিয়ত তিনি আইন তুলে নিচ্ছে তার হাতে। এলাকায় প্রকাশ্য জুয়া, মাদক ব্যবসা ও সুদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন দাম্ভিকতার সাথে। এলাকায় ইতোমধ্যে গড়ে তুলেছেন মাদক বাণিজ্যের স্বর্গরাজ্য।

অনুসন্ধানে জানা যায়, জসিমের প্রকশ্য মাদক সুদ বানিজ্য ও অপারাধের আশ্রয় প্রশ্রয় তার আপন ভগ্নিপতি সোর্স শাকিল।যার প্রভাবে মূলত জসিমের সব অপকর্ম। মূলত ভগ্নিপতি সোর্স শাকিল বিভিন্ন প্রশাসনের সাথে সোর্সের কাজ করার সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে এলাকায় কঠিন ক্ষমতায় আসীন জুয়ারি জসিম। সোর্স শাকিলের ক্ষমতা দাপটে আর জসিমকে ভয়ে এলাকার লোকজন মুখ খুলতে নারাজ।

অনুসন্ধানে জানা যায়, কুমিল্লায় জন্ম নেওয়া জসিম অভাব অনটন আর চরম দরিদ্রতায় এমসয়ম বাবা মৃত নুর ইসলাম মাঝির হাত ধরে খুব শৈশবে ভাগ্য অন্বেষনে আসেন চট্টগ্রামে। ভাগ্য পাল্টাতে এসে জসিমের বাবা মৃত নুর ইসলাম মাঝি ছেলেকে নিয়ে উঠেন চট্টগ্রাম নগরীর পশ্চিম বাকলিয়া দেওয়ানবাজার খালপাড়া এলাকায় ।
অভাব অনটনে আর চরম দারিদ্র্যতার মাঝে তার বাবা বিভিন্ন স্থানে মাঝির কাজ করে সংসারের ঘানি টানতেন। কোন সময় একবেলা কখনও দুবেলা আবার কখনো একেবারে না খেয়ে চলত তাদের সংসার। অবশেষে চরম খিদে আর অভাবের তাড়নায় একসময় ছোট জসিম বাবার সাথে যোগদেন‌ মাঝির যোগানি হিসেবে । এভাবে বড় হতে থাকা জসিম একসময় জড়িয়ে পরের জুয়া মাদকসহ নানা অপকর্মে।

সূত্র আরো বলছে শুরুতে জসিম প্রকাশ জুয়ারি জসিম মাদক আইপিএল জুয়া, মারামারি, রাহাজানি সহ আরো বিভিন্ন অপকর্মের সাথে যুক্ত হন। তার বাবার মৃত্যুর পর মূলত সে বেশী বেপরোয়া হয়ে উঠে ও তার ভয়াল রূপটাও‌ স্পষ্ট হয় উঠে। মূলত এলাকায় প্রেম কলোনির ইনচার্জ হিসেবে কাজ করা অবস্থায়। ইনচার্জ এর কাজটাকে ভাল হিসেবে ব্যবহার করে তিলে তিলে গড়ে তুলেন‌ তার মাদক আর নানা অপকর্মের সম্রাজ্য।

স্থানীয়রা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, দীর্ঘদিন ধরে জসিম এলাকায় নানা অপরাধ, অপকর্মের সাথে লিপ্ত। এমন কোন অপরাধ নেই যেটি জসিম করেনি জসিম যেখানে বর্তমানে বসবাস করেন সেই স্থানটা অধিকাংশই নোংরা মাদক ও আইপিএল ডুবে আছে বলে জানান তারা।

আরো জানা যায় দেওয়ান বাজার খালপাড়ের জসিমের আস্তানায় সন্ধ্যা ঘনিয়ে মাদক কেনা বেচার ধুম পড়ে। এসময় মাদক ব্যবসায়ী ও সেবীদের ছুটাছুটি চোখে পডরে।

নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক কয়েকজন সচেতন নাগরিক বলেন আমরা চাইলেই মাদক বিক্রয় সেবন বন্ধ করতে পারবো না, কারণ এখানে যারা মাদক বিক্রয় করে বা মাদক সেবন করে তারা খুব উশৃংখল তারা যে কোন সময় আমাদের ওপর হামলা করতে পারে। তাই আমরা দেখেও নীরবতা পালন করি।‌

সূত্র আরো জানায় মাদক নয় জসিমের আছে আইপিএলের জুয়ার বিশাল একটা সিন্ডিকেট। জসিমকে অনেকের কাছে গাঁজা জসিম, মাঝি জসিম, চোরা জসিম,আইপিএলের জুয়াড়ি চিহ্নিত গডফাদার হিসেবে সু-পরিচিত।

আবার অনেকের অভিযোগ জুয়াড়ি জসিমের অপকর্মের কেউ বাঁধা দিলে‌ তার প্রতি নেমে আসে নানা অত্যচার নির্যাতন। ভগ্নিপতি সোর্স শাকিলকে দিয়ে দেন মিথ্যে মামলা হুমকির। এমনকি মাদক কারবারে বাঁধা দেওয়ায় বেশ করেক জনকে মারধরের অভিযোগ ও পাওয়া যায়। অনেক সময় জসিম নিজেই তার শরীরের অঙ্গ পতন কেটে থানায় উপস্থিত হয়ে মামলার ভয় দেখান এলাকাবাসীকে।

স্থানীয়রা প্রতিবেদককে আরো জানান, প্রশাসনের নানা তৎপরতায় জসিমসহ এলাকার আরো বেশ কিছু মাদক কারবারি কিছু সময়ের জন্যে আত্মগোপনে গেলেও এখনও আড়ালে চলছে তার মাদক বাণিজ্য।

স্থানীয়রা জানান, নানা সযয়ে মাদক নিয়ে অনেকেই গ্রেফতার হলেও জেল থেকে ফিরে এসে মাদক কারবারিরা আগের সেই মাদক বাণিজ্যে ঘা ভাসিয়ে দেন।

যেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাদকের বিরুদ্ধে “জিরো টলারেন্স” নীতি গ্রহণ করেছেন। এরপরেও যেন‌ থামছে না মাদক কারবারী জসিম। তার মত মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে থাকলেও কোনরকমে থামছে না জসিমের মাদক, সুদ বানিজ্য ছোবল।‌ তার কারনেই ধ্বংস হচ্ছে যুব সমাজ দিন দিন বাড়ছে অপরাধ চুরি ছিনতাই সহ খুন খারাবি এমন অভিযোগ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশিরভাগ এলাকাসীর।

মাদক, জুয়াসহ নানা অপকর্মের সাথে প্রতিবেদক জসিমের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি প্রতিবেদকের সাথে ক্ষিপ্ত হয়ে সব অভিযোগ অস্বীকার করে বললে আমার একটি ছোট্ট পান সিগারেটের দোকান আছে আমি কোন অপকর্মের সাথে জড়িত নই এবং আমি প্রেম কলোনির ইনচার্জ। জসিম আমাদের প্রতিবেদককে আরো জানান অত্র এলাকার বেশ কিছু লোক তার পেছনে লেগেছে। জসিম ও জসিমের ভগ্নিবতী সোর্স সাকিলে নামে আছে একাধিক মামলা যার একটি মামলার নং ২১২/২০২০

এ বিষয়ে দেওয়ানবাজার সমাজের সেক্রেটারি মোঃ সিরাজুর রহমানের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, খালপাড় নয় যেন মাদকে আখড়া, আমরা বিগত ১০-১৫ বছর শত চেষ্টা করেও এসব মাদকের আখড়া ধ্বংস করতে পারিনি। তিনি আমাদের প্রতিবেদককে আরো জানান আমরা বাকলিয়া এবং চকবাজার থানার প্রশাসনকে অনেকবার জানিয়েছি এবং প্রশাসন তৎক্ষণিক মাদক কারবারীদেরকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। জেল হাজত থেকে মাদক কারবারি’রা বেরিয়ে আবারো পুনরায়

মাদক বিক্রয় শুরু করেন।

এ বিষয়ের ১৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শহিদুল আলমকে তার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিল ও তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে বাকলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রহিম এর সাথে কথা বললে আমাদের প্রতিবেদককে বলেন মাদকের বিরুদ্ধে আমরা খুব কঠোর অবস্থায় আছি। যদি কেউ আমার থানা এলাকায় মাদকের সাথে সংযোগ থাকে অবশ্যই তাকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।


আরো পড়ুন