• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৩৫ পূর্বাহ্ন

স্বরূপকাঠিতে  ১৫৩ হেক্টর জমিতে ফুলের আবাদ, কর্মসংস্থান ১৬ হাজার শ্রমজীবী মানুষের

সুমন খান, নিজস্ব প্রতিবেদক / ২৯১ বার পঠিত
আপডেট: শনিবার, ২ জানুয়ারি, ২০২১

ক্ষুদ্র  ঋণে ফুল চাষীরা সাবলম্বী হয়ে উঠছে প্রায় ১৬ হাজার নারী-পুরম্নষ। বর্হিবিশ্বে প্রায় তিন ‘শত বছর আগে ফুলের সুচনা ঘটলেও, এ অঞ্চলে ফুলের বাণিজ্যিক আবাদ শুরু হয় প্রায় অর্ধশত বছর আগে। পিরোজপুরের  নেছারাবাদ স্বরূপকাঠি উপজেলা র  ছারছীনা, অলেংকারকাঠি, আরামকাঠি, জগন্নাথকাঠী, কুনিহারী,পান্নালস্নাপুর, সুলতানপুর, সঙ্গীতকাঠি, মাহামুদকাঠিসহ চারিদিকে দুই শতাধিক নার্সারিতে হাজারো রংঙের ফুলের সমরাহ ঘিরে আছে গ্রামকে-গ্রাম। পল্লীর মাঠ জুড়ে ফুটে আছে- ডালিয়া, গাঁদা, বেলী, গোলাপ, রজনীগন্ধা, টিউলিপ, অ্যাস্টার গোলাপ,কলাবতী, জুই, ডেইজি, ডায়াস্থান, জিনিয়া, চন্দ্রমলিস্নকা, পদ্ম, কারনেশন, কসমস, প্যানজি, সূর্যসুখী, স্টারপিটুনিয়া, পপি, অর্কিড়, সিলভিয়া, ভারবেন, লুপিংস, ফ্লক্স, পর্টুলেকা, এন্টিরিনাম লুপিংস, মনিং, ক্যালেন্ডলা, গেস্নারি, সুইটপি, ন্যাস্টারশিয়াম, হলিংকস, জারবেরা,অ্যাজালিয়া সহ শতাধিকফুল।
পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠি) উপজেলা ÿুদ্র কুটির শিল্পের জন্য বিখ্যাত। স্বরম্নপকাঠিতে মাটি আর আবহাওয়া অনুকুল পরিবেশ থাকায় অর্ধশত বর্ষ আগে বাণিজ্যিকভাবে শুরম্ন হয় এসব ফুলের চাষ। অন্য ফসলের চেয়ে অধিক লাভের আশায় প্রতিদিন বাড়ছে ফুলের আবাদ, বাড়ছে ফুল চাষী, গ্রামকে-গ্রাম ছড়িয়ে পড়ছে ফুলের আবাদ। সারি-সারি লাল, হলুদ, কমলা আর সাদা রংঙের সমহার দেখার জন্য বিভিন্ন জেলা থেকে দর্শনার্থীরা ছুটে আসে ফুলের মিলন মেলার দর্শনে। ২১ ফেরম্ন্রয়ারী, ১৬ ডিসেম্বরসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবস উৎযা্‌পনে এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ও রপ্তানী করা হয় এখানকার ফুল। নেছারাবাদে প্রায় ১৫৩ হেক্টর জমিতে প্রায় দেড় শতাধিক নার্সারিতে ১১ হাজার শ্রমজীবী নারী-পুরম্নষ ফুল চাষে প্রত্যÿ ও পরÿ ভাবে আয়ের পথ খুজে পেয়েছেন। এখানকার বসতি চাষীরা অধিক লাভের আশায় ফুলের চাষের আগে প্রায় ৬০-৭০ বছর ধরে বিভিন্ন ধরনের বনজ, ফলজ ও ঔষুধী গাছের চারার কলম উৎপাদন করে আসছেন। এসব ঔষধী চারাগুলো ্‌এখন ফুলচাষের পাশাপাশি বাগানের চারপাশের কান্দিতে ভরা।
কার্তিক মাসের প্রথম দিকেই ফুলের বিজ রোপন করা হয়, রোপনের প্রায় ৪০ দিনেই ফুলফোটা শুরম্ন হলেও একটি ফুলের জীবন কাল থাকে ৪-৬দিন। সৌন্দর্য্যের প্রতীকফুলের জীবনকাল ÿীন হলেও বিশ্বজুড়ে রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় দিবসগুলোতে ফুলের শোভাবর্ধন ছাড়া কোনো অনুষ্ঠানই সম্ভাব হয় না।কোনো-কোনো ফুলগাছ ফুলফোটার ৪১দিনের মধ্যে গাছটি মরে যায়, আবার অনেক ফুল গাছের জীবনকাল থাকে প্রায় আড়াই বছর হলেও সব ফুলের জীবনকাল এক নয়। এসব ফুল শুধূ সৌন্দর্য্যের শোভাবর্ধন করে না এটি দেশের অর্থকারী ফসলও বটে। মৌমাছি ফুল থেকে মধূ সংগ্রহ, ঔষুধী ফুল থেকে ঔষুধ তৈরী, সূর্যমুখী ফুল থেকে সু-গন্ধী তৈল উৎপাদন, টিউলিপ ও অ্যাস্টার ফুল দ্বারা বিভিন্ন ধরনে মূল্যবান সেন্ট তৈরী, সু-গন্ধযুক্ত ফুলের নির্যাস থেকে উন্নতমানের পারফিউম, সেন্ট ও আতর ইত্যাদি তৈরীর প্রায় শতাধিক শিল্পকারখানা দেশে গড়ে উঠায় ৫৫ হাজার শ্রমজীবী মানুষ জীবিকা নির্বাহ করছে। সারা দেশে ফুল সংশিস্নষ্ট এ সব পণ্য বর্হিবিশ্বে রপ্তানি করে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সারা দেশে প্রায় ৪৯ কোটি টাকার সমমুল্যের মুদ্রা অর্জন হলেও ২০১৯-২০২০ সালের অর্থবছরে করোনার কারণে ফুলের আবাদ ও ফুল রপ্তানীতে ধস নামায় প্রায় কোটি টাকার ÿতি হয় ফুল চাষীদের। ÿতিপুরণ কাটিয়ে ফের ফুলচাষে ঝুকছে চাষীরা।
সংশিস্নষ্ট দপ্তর সুত্রে জানা যায়, ফুল চাষীরা, ফুল বিক্রিতা, ফুল দোকানী,ব্যবসায়ী, রপ্তানী ব্যবসায়ী, ফুল দ্বারা বিভিন্ন শিল্পকারখানার পণ্য উৎপাদনের প্রায় অর্ধলÿ শ্রমিক করোনায় বিভিন্ন ফুলমূখী উৎসবগুলোতে ফুলের চাহিদা না থাকায় ফুলসংশিস্নষ্ট হাজার হাজার শ্রমজীবী মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ে। তবে ফুল চাষীরা করোনার ভয়ের মাঝেও আবার আগের মত ফুল চাষে মাঠে নেমেছে। কৃষি প্রধান দেশ হওয়ায় বাংলাদেশ বৈদেশিক মুদ্র অর্জনের আর একটি সম্ভাবনাময় খাত হতে পারে এই ফুল চাষ। ফুলঅতীত কালে কেবল মানুষের মনের ÿুধা মেটালেও আজকের দিনে ফুল থেকে উপর্জিত টাকা দিয়ে অনেকেরই পেটের ÿুধা মিটাচ্ছেন।


আরো পড়ুন