• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৫৭ অপরাহ্ন

বগুড়ায় আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরকসহ ‘৪ জঙ্গি’ গ্রেফতার !

/ ৩৪১ বার পঠিত
আপডেট: রবিবার, ৮ নভেম্বর, ২০২০

আশুলিয়া থেকে পালিয়ে যাওয়ার ১০ মাস পর বগুড়া ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন নব্য জেএমবির দুই শীর্ষ নেতাসহ চারজন। গতকাল শুক্রবার রাত দেড়টায় শিবগঞ্জ উপজেলার চন্ডিহারা ঈদগাহ মাঠে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর শনিবার অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে বগুড়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, গ্রেফতারকৃতরা ড্রোন তৈরির মাধ্যমে নাশকতার পরিকল্পনা করছিল। উদ্ধার করা হয়েছে আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, নব্য জেএমবির আইটি শাখার সদস্য গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার তরশ্রীরামপুর গ্রামের তানভীর আহম্মেদ ওরফে আবু ইব্রাহিম (২৫), মিডিয়া শাখার প্রধান ও টাঙ্গাইলের ভুঞাপুর উপজেলার জগতপোড়া গ্রামের জাকারিয়া জামিল (৩১), সক্রিয় সদস্য ময়মনসিংহ সদরের চকশ্যামরামপুর গ্রামের আতিকুর রহমান (২৮) এবং একই গ্রামের আবু সাঈদ (৩২)। তাদের মধ্যে তানভীর আহম্মেদ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং আতিকুর রহমান নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র।

আজ শনিবার দুপুরে বগুড়ার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য তুলে ধরেন বাংলাদেশ পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আব্দুল বাতেন। তিনি বলেন গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা নব্য জেমমবির সক্রিয় কর্মী। তাদের কাছে থেকে একটি বিদেশী পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি, দুটি কার্তুজ, একটি ওয়ানগান শ্যুটার, একটি চাপাতি, তিনটি চাকু, এক কেজি বিস্ফোরক তৈরির পাউডার এবং গ্রেনেড তৈরির সরঞ্জাম পাওয়া গেছে। পুলিশ সদর দপ্তরের এলআইসি শাখার সহযোগিতায় বগুড়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা এই গ্রেপ্তার অভিযানে অংশ নেয়।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের রাজশাহী বিভাগের ডিআইজি আব্দুল বাতেন বলেন, জানুয়ারি মাসে আশুলিয়াতে তানভীরের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে জঙ্গিবিষয়ক বই ও ড্রোন তৈরির সরঞ্জামসহ তানভীর আহম্মেদের স্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সে ঘটনায় দায়ের করা মামলার তানভীর পলাতক আসামি। তিনি ড্রোন তৈরির মাধ্যমে নাশকতার পরিকল্পনা করছিলো বলে স্বীকার করে। আরেক আসামি জাকারিয়া জামিল নব্য জেএমবির মিডিয়া শাখার প্রধান। তিনি আইএস কর্তৃক অনলাইনে আরবি ভাষায় প্রকাশিত নিবন্ধনগুলো বাংলায় অনুবাদ করে প্রচার করতেন। জামিলও আশুলিয়ায় একটি মামলার পলাতক আসামি। আতিকুর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের ছাত্র। তিনি নতুন সদস্য এবং অর্থ সংগ্রহের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি ইসলামের পক্ষে যুদ্ধে অংশ নেওয়ার জন্য মধ্যপ্রাচ্য যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা নিজেদের নব্য জেএমবির দায়িত্বশীল পদে থেকে জঙ্গি কর্মকান্ড পরিচালনার কথা স্বীকার করেছেন। তারা নতুন করে নাশকতার উদ্দেশ্যে বগুড়ায় গোপন বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন।

পুলিশ বলছে, আটক জঙ্গিদের মধ্যে মো. তানভীর আহম্মেদ ওরফে আবু ইব্রাহিম ও জাকারিয়া জামিল এ বছরের ১৪ জানুয়ারি রাজধানীর আশুলিয়া এলাকায় একটি জঙ্গি আস্তানায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানকালে পালিয়ে গিয়েছিল। ওই অভিযানে তানভীর আহম্মেদের স্ত্রী ও নারী জঙ্গি সদস্য শায়লা শারমিন ওরফে দিপ্তী (২৩) গ্রেফতার হয়েছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে আশুলিয়া মডেল থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা বলেন, আটক জঙ্গিদের বিরুদ্ধে জেলার শিবগঞ্জ থানায় অস্ত্র, বিস্ফোরক দ্রব্য এবং সন্ত্রাস বিরোধী আইনে একাধিক মামলা দায়ের করার প্রক্রিয়া চলছে। তাদেরকে আরো অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বগুড়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হবে।


আরো পড়ুন