• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০২:১২ পূর্বাহ্ন

বিশাল সব সমস্যা নিয়ে আমেরিকা সফরে ইরাকের প্রধানমন্ত্রী

/ ৩০৩ বার পঠিত
আপডেট: বৃহস্পতিবার, ২০ আগস্ট, ২০২০
বিশাল সব সমস্যা নিয়ে আমেরিকা সফরে ইরাকের প্রধানমন্ত্রী
বিশাল সব সমস্যা নিয়ে আমেরিকা সফরে ইরাকের প্রধানমন্ত্রী

ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মোস্তফা আল কাজেমি দু’দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে যুক্তরাষ্ট্র সফরে গেছেন। বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তার সাক্ষাত হওয়ার কথা রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে ইরাকের প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্র সফরের উদ্দেশ্য কি হতে পারে সেটাই এখন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাতে তিনি দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক নানা বিষয় নিয়ে মতবিনিময় করবেন বলে কথা রয়েছে। ইরাক-মার্কিন সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে ইরাকে মার্কিন সেনা উপস্থিতি। গত ৫ জানুয়ারি ইরাকের পার্লামেন্টে একটি বিল পাশ হয় এবং তাতে সেদেশ থেকে মার্কিন সেনা বহিষ্কারের দাবি জানানো হয়েছিল। এরপর ২৪ জানুয়ারি ইরাকের জনগণও ব্যাপক বিক্ষোভ  প্রদর্শন করে সেদেশ থেকে মার্কিন সেনা বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছিল। কিন্তু অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত ইরাকের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়ে আমেরিকা সেদেশে তাদের সেনা উপস্থিতি বজায় রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

ইরাকে মার্কিন সেনা উপস্থিতি নিয়ে গত জুনে দুদেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু তাতে চূড়ান্ত কোনো কথা মার্কিন কর্তৃপক্ষ দেয়নি। বর্তমানে ইরাকের প্রধানমন্ত্রীর ওয়াশিংটন সফরের সময় এ বিষয়টি আবারো উত্থাপিত হবে।  এ অবস্থায় ইরাকের জোট সরকারের প্রতিনিধি আব্দুল হাদি আল সাআদাভিসহ আরো বেশ ক’জন পার্লামেন্ট সদস্য প্রধানমন্ত্রীকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ইরাকে মোতায়েন অবশিষ্ট মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ব্যাপারে যদি কোনো সিদ্ধান্ত না হয় তাহলে পার্লামেন্ট প্রধানমন্ত্রীকে অপসারণ করবে।

ইরাকের প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্র সফরের গুরুত্বের আরেকটি কারণ হচ্ছে ইরাক বর্তমানে প্রচণ্ড অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছে। অর্থনৈতিক সংকটকে কেন্দ্র করেই আদেল আব্দুল মাহদির নেতৃত্বে ইরাকের আগের সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছিল। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মোস্তফা আল কাজেমিও একই ইস্যুতে তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হতে পারে বলে তিনি শঙ্কিত। এরইমধ্যে তার সরকারের বিরুদ্ধে দুই দফা বিক্ষোভ হয়েছে। এ কারণে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাতে তিনি তার কাছে অর্থনৈতিক সহায়তা চাইতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ট্রাম্পের সঙ্গে কাজেমির সাক্ষাতে নিরাপত্তা বিষয় নিয়েও কথা হবে। কারণ একদিকে ইরাকে মার্কিন দূতাবাসে রকেট হামলার কারণে ইরাকের প্রধানমন্ত্রী স্বেচ্ছাসেবী মিলিশিয়া বাহিনী তথা প্রতিরোধ যোদ্ধাদের কার্যক্রমকে সীমিত করতে চান। অন্যদিকে, তিনি এটাও জানেন যে এই কাজের পরিণতি তার সরকারের জন্য ভাল হবে না এবং আসন্ন পার্লামেন্ট নির্বাচনে তার ভরাডুবি ঘটবে। এ ছাড়া আঞ্চলিক ঘটনাবলীও তাদের আলোচনায় গুরুত্ব পাবে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে তেহরানের সঙ্গে বাগদাদের সম্পর্কের বিষয়টি। মার্কিন সরকার চায় ইরানের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টির কার্যক্রমে ইরাক সহযোগিতা করুক। এরই মধ্যে তেহরানের সঙ্গে সহযোগিতা কমিয়ে আনতে বাগদাদের ওপর ওয়াশিংটন ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করেছে।

ইরাকের প্রধানমন্ত্রী এমন সময় ওয়াশিংটন সফরে গেছেন যখন আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অত্যাসন্ন। যদিও ট্রাম্প ইরাককে ইরান থেকে দূরে সরিয়ে রেখে নির্বাচনী ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করবেন কিন্তু প্রধানমন্ত্রী কাজেমি সে ব্যাপারে কোনো প্রতিশ্রুতি দেবেন বলে মনে হয় না।


আরো পড়ুন