• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০২:০২ পূর্বাহ্ন

দুই রাজস্ব কর্মকর্তার ঘুষ নেওয়ার ভিডিও ভাইরাল

/ ৭৯ বার পঠিত
আপডেট: শুক্রবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২২
মাদারীপুরে দুই রাজস্ব কর্মকর্তার কার্যালয়

মাদারীপুরে দুই রাজস্ব কর্মকর্তার ঘুষ নেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ১০ মিনিট ১৩ সেকেন্ডের ভিডিটিতে দেখা যায়, দুই রাজস্ব কর্মকর্তা এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে দর-কষাকষি করছেন। বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) রাত থেকে ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

ভিডিওতে দেখা যায়, কাস্টমস ও এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগ মাদারীপুর সার্কেল অফিসের রাজস্ব কর্মকর্তা (সার্কেল-২) রফিকুল ইসলাম ও (সার্কেল -১) মো. ইমরান কবীর অফিস কক্ষে বসে ঘুষের টাকা গ্রহণ করছেন।

ফাঁস হওয়া ভিডিওর শুরুতে এক ব্যবসীয়কে উদ্দেশ্য করে রফিকুল ইসলাম বলেন, এইডা কি আনছেন? পরে ৫০০ টাকার কয়েকটি নোট হাতে গুণে পকেটে ভরেন রফিকুল। এরপর রাজস্ব কর্মকর্তা রফিকুল ওই ব্যবসায়ীকে বলেন, কি যে করেন আপনারা। মানে.. মাদারীপুরের লোক এত ধনী, দেশের মধ্যে তৃতীয় ধনী জেলা। আপনারা কেন এমন করেন?

একপর্যায় ব্যবসায়ীর ওপর ক্ষুদ্ধ হয়ে রফিকুল ইসলাম বলেন, যা দিছেন আমি এটা নিতে পারব না। এটা ইমরান সাহেবকে কি দেব? আমি কীভাবে বুঝাব? স্যার তো বকবো! আমি এটা নিতে পারব না। এই ৩ (তিন হাজার) আমি নিতে পারব না। বাকিটা কখন দেবেন? আপনারা স্যারকে বলে যান, দেখা করে যান। কারণ, তিনি (ইমরান কবীর) আপনার অরজিনাল স্যার। সেই আপনাকে বাঁচাতে পারব, মারতে পারব। বুঝচ্ছেন!

রফিকুল ইসলাম ওই ব্যবসায়ীকে আরও বলেন, প্রতি মাসে অফিস খরচ ১ হাজার টাকা দিয়ে যাবেন। এটা যেন আর না বলা লাগে। কথা যেন নড়চড় না হয়। মাসের ১০ তারিখের মধ্যে টাকা আমার কাছে দিয়ে যাবেন।

ভিডিওটির ৮ মিনিট ৩৫ সেকেন্ডে পরে দেখা যায় রাজস্ব কর্মকর্তা (সার্কেল-১) মো. ইমরান কবীরকে। তিনি ওই ব্যবসায়ীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনার দোকানের আশপাশে যারা দিচ্ছে ওয়েল অ্যান্ড গুড। আর যারা দিচ্ছে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। আপনার নম্বর দিয়ে যান। পরে ওই ব্যবসায়ী এক হাজার টাকা ইমরান কবীরের টেবিলে রাখলে তিনি টাকাটা গ্রহণ করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভিডিওতে থাকা ওই ব্যবসায়ীর নাম অমিত হাসান। তিনি মাদারীপুর পুরান বাজারের পোশাক ব্যবসায়ী। জানতে চাইলে ওই ব্যবসায়ী বলেন, আমার ছোট পোশাকের দোকান। প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা করে ভ্যাট দিতে বলেন স্যারেরা। পরে অফিসে গেলে তারা এক হাজার টাকা করে ভ্যাট দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়। কিন্তু শর্ত হলো, প্রতি মাসে অফিসে তিন হাজার টাকা দিতে হবে।

ভিডিও সম্পর্কে রাজস্ব কর্মকর্তা (সার্কেল -১) মো. ইমরান কবীর বলেন, ভিডিওটি আমাদের নয়, এটি সাজানো। এ বিষয় আমার কোনো মন্তব্য নেই।

এ বিষয়ে মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক রহিমা খাতুন বলেন, দুই রাজস্ব কর্মকর্তা ঘুষ গ্রহণের ভিডিওটি আমি দেখেছি। পুরো ঘটনাটি যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। অনৈতিক কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত এসব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


আরো পড়ুন