• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:২৮ পূর্বাহ্ন

মনোহরগঞ্জে বিয়ের প্রলোভনে তরুণীকে ধর্ষণ, বরযাত্রা থেকে জেলহাজতে ধর্ষক!

/ ৪০৪ বার পঠিত
আপডেট: সোমবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৯

কুমিল্লা প্রতিনিধিঃ- কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে বিয়ের প্রলোভন দেখয়ি এক তরুণীকে (১৮) দীর্ঘদিন ধরে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ধর্ষক মানিক মিয়াকে বিয়ে করতে যাবার সময় আটক করে পুলিশে দিয়েছে এলাকাবাসী। মানিক উপজেলার উত্তর হাওলা গ্রামের মনতাজ মিয়ার ছেলে। ২৮ অক্টোবর, সোমবার সকালে ধর্ষক মানিককে কুমিল্লার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ, স্থানীয় সূত্র ও ধর্ষিতার পরিবার জানায়, উপজেলার উত্তর হাওলা ইউনিয়নের উত্তর ফেনুয়া গ্রামের হতদরিদ্র পরিবারের এক তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে উত্তর হাওলা গ্রামের মানিক মিয়ার সঙ্গে। এক পর্যায়ে মেয়েটিকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে শারিরীক সম্পর্ক শুরু করে সে। এভাবে গত প্রায় এক বছরে ওই তরুণীকে বেশ কয়েকবার ধর্ষণ করতে থাকে মানিক। এরই মধ্যে পাশের গ্রামের অন্য এক মেয়ের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয় মানিকের। এরপর এ ঘটনার খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। সর্বশেষ ২৭ অক্টোবর, রবিবার দুপুরে বিয়ে করতে যাবার সময় মানিককে আটক করে পুলিশ খবর দেয় এলাকাবাসী। পরে পুলিশ এসে ধর্ষিত ওই তরুণীর কাছ থেকে বিস্তারিত জেনে মানিককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে এ ঘটনায় ধর্ষিতার মা বাদি হয়ে রবিবার রাতে মনোহরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ধর্ষক মানিককে সোমবার সকালে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করে।

ধর্ষিত ওই তরুণীর মামা জানান, আমরা বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ এবং ধর্ষক মানিকের বিয়ের খবর জানতে পেরে শনিবার রাতে থানায় যাই মামলা করতে। পরে স্থানীয় মহিলা মেম্বার কাজল রেখা আমাকে ফোন করে বলে আপনি মামলা না করে এলাকায় চলে আসেন, আপনার ভাগ্নির সঙ্গে ছেলের বিয়ে হবে। এরপর মেম্বারের আশ্বাসে আমরা এলাকায় এসে দেখি উত্তর হাওলা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবদুল হালিম অভি, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা সাহাব উদ্দিন সাকিল, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল হান্নানসহ প্রভাবশালীরা ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে। তারা আমাদের টাকার লোভ দেখাতে থাকে। পরে আমার কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে আমাকে জোর করে ৯৬ হাজার টাকা ধরিয়ে দিয়ে বলে এ ঘটনা দিয়ে বাড়াবাড়ি না করতে। পরে স্থানীয় এলাকাবাসী ঘটনাটি জানতে পেরে বিয়ে করতে যাবার সময় মানিককে আটক করে পুলিশে দেয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে উঠেপড়া লাগা ব্যক্তিরা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও আ.লীগ নেতা আবদুল হান্নান হিরনের অনুসারী। চেয়ারম্যানের প্রভাবে তারা এসব অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে।
এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উত্তর হাওলা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবদুল হালিম অভি বলেন, ছেলের (ধর্ষক) পক্ষের লোকজন শনিবার গভীর রাতে আমাদেরকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে এ ঘটনাটি সমাধান করার জন্য বলে। পরে মেয়ের মামাও দেখলাম টাকার বিনিময়ে ঘটনাটি মিমাংসা করতে রাজি। তিনি (ধর্ষিতার মামা) আড়াই লক্ষ টাকা দাবি করেন। পরে দুই পক্ষের সম্মতিতে ১ লাখ ১০ হাজার টাকায় ঘটনাটি মিমাংসা হয়। এরপর ৯৬ হাজার টাকা নিয়ে কাগজে স্বাক্ষর করেন মেয়ের মামা। বাকি টাকা রবিবার সন্ধ্যায় মেয়ের স্বাক্ষর এনে নেওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু এর মধ্যে জানতে পারি দুপুরে বরযাত্রা থেকে ছেলেকে আটক করে এলাকার লোকজন। এখন বিষয়টি পুলিশ দেখেছে। আর চেয়ারম্যান সাহেব এ ঘটনায় জড়িত নন। মনোহরগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো.মাহাবুব কবির বলেন, এ ঘটনায় মেয়েটির মা বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেছে। আসামীকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে


আরো পড়ুন