• রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৪৫ পূর্বাহ্ন

মাদকের রেইটিং টিমকে ডাকাত বললেন মোতালেবঃ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল

বদরুল আমীন, স্টাফ রিপোর্টার / ১৬৫ বার পঠিত
আপডেট: রবিবার, ৮ মে, ২০২২

ময়মনসিংহ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সার্কেল “ক” রেইটিং টিমকে ডাকাত বলে দাবী করেছেন ভুক্তভোগী মোতালেব। তার দাবী তাকে বাসা থেকে উঠিয়ে নিয়ে কাঠগোলা পিও দেখিয়ে ৬শ পিস ইয়াবা উদ্ধার দেখিয়ে মামলা ঠুকে দিয়েছে। ময়মনসিংহ “ক” সার্কেলের পরিদর্শক কাজী হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে ৭ জনের একটি দল মোতালেবের দু’টি সোনার আংটি, নগদ টাকা ও বিকাশে রাখা টাকা উঠিয়ে নিয়ে গেছে। মোতালেবের প্রতিবেশীরাও এই রেইটিং টিমকে ডাকাত বলে দাবী করে জানান, মোতালেব গেইট খোলার পর কোনরূপ অনুমতি না নিয়ে তারা ঘরে ঢুকে বিভিন্ন মালামাল তছনছ করে। কোন কিছু না পেয়ে তারা মোতালেবকে উঠিয়ে নিয়ে যায়।

ময়মনসিংহে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে কর্মরত “ক” সার্কেলের পরিদর্শক কাজী হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে একটি অভিযানে মোতালেবকে আটকিয়ে সাজানো মামলা, বাসা থেকে উঠিয়ে নেয়া ব্যক্তিকে অন্যত্র আটক দেখিয়ে মামলা দায়ের ও ধৃত ব্যক্তির কাছ থেকে নগদ টাকা, দু’টি সোনার আংটি এবং আটক থাকা সময়ে বিকাশ থেকে টাকা উঠিয়ে নেয়ার অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন ময়মনসিংহ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ বাবুল সরকার। তদন্ত প্রতিবেদনে এএসআই আরিফকে সবচেয়ে বেশী অভিযুক্ত করে আপরাপরদের চরম ব্যর্থতা ও ঘটনায় জড়িত কথা উল্লেখ করে উপ-পরিচালক মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বরাবরে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। যার ডায়েরী নং ১৮৯ তাং ৩০/৩/২০২২।

ময়মনসিংহ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ বাবুল সরকার এর তদন্তে প্রকাশ পেয়েছে, রাত ৮টা থেকে ৯টায় মোতালেবকে তার নিজ বাসা থেকে ময়মনসিংহ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে ময়মনসিংহ “ক” সার্কেলের পরিদর্শক কাজী হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে ৭ জনের একটি দল উঠিয়ে নিয়ে কাঠগোলা পিও দেখিয়ে মামলা ঠুকে দিয়েছে। যা কোতোয়ালী থানার মামলা নং ৮৬ (১১)২১। সিজার লিস্টের স্বাক্ষীরা বলেছে তাদের মাদক দেখানো হয় কাঠগোলায় এবং আটককৃতরা মাইক্রোবাসে ছিলো।

তদন্তকারী কর্মকর্তাকে মোতালেবের প্রতিবেশীরা ও বিভিন্ন স্বাক্ষীরা জানান, আভিযানিক দল অভিযান পরিচালনা করে ধৃত ব্যক্তির কাছ থেকে মাদক উদ্ধার করে মামলা দেয়ার পর আভিযানিক টিম দুটি সোনার আংটি সহ নগত ৭৬ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে ও বিকাশ থেকে উত্তোলন করে ৩৯ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছে।

৯ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনে ময়মনসিংহ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ বাবুল সরকার উল্লেখ করেছেন, মোঃ আরিফ মিয়া সহকারী উপ-পরিদর্শক রেইটিং পার্টির যোগসাজসে বিকাশের ৩৯ হাজার টাকা আত্নসাৎ করেছেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা পিও পরিবর্তন, মাদক পেলো কিনা? সোনার দু’টি আংটি নিয়ে যাওয়া, নগদ টাকা নেয়ার ব্যাপারে তেমন কোন মতামত দেননি!

আদালতে বরাবরে মোতালেব অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, মোঃ আব্দুল মোতালেবকে কাজী হাবিবুর রহমান সঙ্গীয় ফোর্সসহ গত ২৩ ফ্রেব্রুয়ারী তাকে গ্রেফতার দেখান। তারপর মোতালেব এর কাছ থেকে দু’টি সোনার আংটি ও ৭৬ হাজার টাকা কেড়ে নেয়। মোতালেবের হাতে থাকা বাটন মোবাইল সেটটি-যার ব্যবহিৃত নম্বর ০১৯৮১২৪৯০৪২ নিয়ে বলে এটি কি বিকাশ করা? নিশ্চিত হয়ে বিকাশের পিনকোর্ট চায়। না দেয়ায় মোতালেবকে মারধর করে। মাদকের এএসআই আরিফ ও ফারুক মিয়া মোবাইলটি তাদের হেফাজতে নিয়ে পরদিন ২৪ ফেব্রুয়ারী দু’দফায় ৩৯ হাজার টাকা উত্তোলন করে নেয়। পরে মোতালেব দীর্ঘদিন হাজতবাস করে ১লা মার্চ জামিনে মুক্তি পায়। ২ মার্চ তার ব্যবহিৃত সীম উত্তোলন করে দেখতে পায় তার মোবাইল থেকে টাকা উঠানো হয়েছে। মোতালেব জানায়, রেইটিং লোকেরা তার ০১৭২২৩৮৬২৮৮ ও ০১৮৪৯৩৮৪৮১২ সীমের মাধ্যমে টাকা উঠিয়ে নিয়েছে। পরবর্তীতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অফিসে গিয়ে মোতালেব টাকা, দু’টি সোনার আংটি ও মোবাইল দাবী করলে মামলার তদন্তকারী অফিসার তাকে আরো মামলা দিবে বলে হুমকী দেয়। এতে সে ভীত হয়ে ফিরে আসে।


আরো পড়ুন