• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৫৮ পূর্বাহ্ন

কুমিল্লায় ৪০ কোটি টাকা নিয়ে ডেভেলপার কোম্পানির মালিক লাপাত্তা!!

/ ২৮১ বার পঠিত
আপডেট: রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

আব্দুল্লাহ আল মামুন ভূঁইয়া(বাবু)-(কুমিল্লা জেলা থেকে):কুমিল্লায় শতাধিক গ্রাহকের আনুমানিক ৪০ কোটি টাকা নিয়ে গোল্ড ডায়মন্ড প্রপার্টিজ কোম্পানির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক দুই ভাইয়ের পরিবারসহ হঠাৎ উধাও হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

শুক্রবার রাতে নগরীতে এ ঘটনার পর গ্রাহকদের মাঝে আতঙ্ক-ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। গ্রাহকদের মধ্যে রাজনীতিবিদ,চিকিৎসক,সাংবাদিক ও ব্যবসায়ী রয়েছেন। অনেকে সারা জীবনের সঞ্চয়, কেউ আবার ব্যাংক ঋণ করে টাকা দিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর তাল পুকুর পাড়ে তিনটি,নওয়াব ফয়জুন্নেছা স্কুলের পাশে একটি,বাগিচাগাঁয়ে একটি, পুরাতন চৌধুরী পাড়ায় একটি,মিশনারী স্কুলের পাশে একটিসহ তাদের ১০-১২টি নির্মাণাধীন প্রকল্প রয়েছে।
নগরীর ছাব্বি অ্যান্ড রিজভী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক সুলতান সফিউল্লাহ রিজভী বলেন,গোল্ড ডায়মন্ড প্রপার্টিজ কোম্পানির চেয়ারম্যান পিন্টু সাহা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মন্টু সাহা দেশ ছেড়ে ভারত চলে গেছে বলে তিনি জেনেছেন।

মিশনারী স্কুলের পাশের নির্মাণাধীন নাজমা পার্ক হেভেনে ফ্ল্যাট দেয়ার কথা বলে তার থেকে ৩২ লাখ ৭০ হাজার টাকা নিয়েছে। ভবনের কাজ শেষ হয়নি। তিনি তার টাকা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। এ নিয়ে জমির মালিকের সাথে কথা বলে সমাধান করবেন। নতুবা আইনের আশ্রয় নিবেন।

তিনি অভিযোগ করেন,তারা এক ফ্ল্যাট তিনবারও বিক্রি করেছে।কোথাও ফ্ল্যাটের দাম ৫০ লাখ হলেও তারা ১০ লাখ করে ১০ জন কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়া।
নাজমা পার্ক হেভেনের জমির মালিক ওমর জামান বলেন,তারা উধাও হয়ে গেছে কিনা তিনি নিশ্চিত নন। আরও কয়েকদিন পর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে। চুক্তি ছিল তাকে ৪০ ভাগ দিয়ে বাকি ৬০ ভাগ তারা নিবে। তারা কাজে সময় নিচ্ছিল। তিনি দেড় কোটি দামের বাড়ি ভেঙে ভাড়া বাসায় আছেন। আর গ্রাহকদের বিষয়ে তিনি বলেন, গ্রাহকদের সঙ্গে তার কোনো চুক্তি হয়নি।এই বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারবেন না।
এদিকে কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত বলেন,রানীর দিঘির পাড়ের একটি ভবনে ফ্ল্যাট দেয়ার কথা বলে তার থেকে ৪২ লাখ টাকা নিয়েছে।গোল্ড ডায়মন্ড প্রপার্টিজ কোম্পানির মালিকপক্ষ উধাও হয়ে গেছে বলে তিনি শুনেছেন।বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহাকে জানানো হয়েছেন।এখন তিনি দেশের বাইরে আছেন।এমপি সাহেব দেশে আসলে মালিক পক্ষের সাথে বসে বিষয়টি সুরাহা করবেন বলেও জানান তিনি।

বিএনপি নেতা জাফর ইকবাল জানান,নাজমা পার্ক হেভেনে ফ্ল্যাট দেয়ার কথা বলে তার ভাগিনা থেকে ২০ লাখ টাকা দিয়েছে।তিনি এই বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চান।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,নগরীর রানীর বাজারে গোল্ড ডায়মন্ড প্রপার্টিজ কোম্পানির অফিসে তালা মারা রয়েছে।একই এলাকায় তাদের পৈত্রিক বহুতল ভবন রয়েছে।সেখানে দুই ভাইয়ের বাসাতেও তালা।তারা কখন কোথায় গেছে আশপাশের কেউ বলতে পারেনি।

তাদের মেঝ ভাই পিয়াস সাহা বলেন,তারা দুইজন শনিবার থেকে স্ত্রী সন্তানসহ বাসায় নেই।কোথায় গেছে জানেন না।তাদের ফোনও বন্ধ।মানুষ তাদের টাকার জন্য তার কাছে আসছেন।তিনি তাদের ব্যবসার বিষয়ে কিছু জানেন না।বাড়িটিও তারা ইউসিবিএল ব্যাংকে বন্ধক রেখেছে বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র মনিরুল হক সাক্কু বলেন,গোল্ড ডায়মন্ড প্রপার্টিজ কোম্পানির কাছে একটি পক্ষ টাকা পেত,তিনি দরবার করে ২৬ লাখ টাকার মধ্যে ১৪ লাখ টাকা উদ্ধার করেছিলেন।এখন শুনেছেন তারা দেশ ছেড়ে চলে গেছে।ক্ষতিগ্রস্তরা যোগাযোগ করলে মালিক পক্ষের সাথে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোঃআবুল ফজল মীর বলেন,বিষয়টি এখনও তার দৃষ্টিগোচরে আসেনি। ক্ষতিগ্রস্তরা যোগাযোগ করলে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।


আরো পড়ুন