• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৪৫ পূর্বাহ্ন

ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে নির্যাতিত সাংবাদিক ফরিদের মামলা তদন্তে তৃতীয় বারের মত সময় চাইল পিবিআই, ৬ মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার হয়নি এখনো !

নিজস্ব প্রতিবেদক / ২৬০ বার পঠিত
আপডেট: রবিবার, ১৪ মার্চ, ২০২১

১৪ মার্চ ককসবাজারঃ সেই ওসি প্রদীপ এবং তার ২৬ পুলিশ সদস্য ও ৪ মাদক ব্যাবসায়ী সহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে জাতীয় দৈনিক আমাদের সময় মিডিয়া গ্রুপের কক্সবাজারস্থ আবাসিক সম্পাদক ও দৈনিক কক্সবাজারবানী সম্পাদক নির্যাতিত সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা খানের দায়ের কৃত মামলার প্রতিবেদন জমা দিতে তৃতীয়বারের মতো আবারও সময়ের আবেদন করেছে পিবি আই। ১৪ মার্চ রবিবার কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট জেরিন সুলতানের আদালতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআইর পুলিশ পরিদর্শক কায়সার হামিদ এই আবেদন করেন। তবে বিচারক জেরিন সুলতান এসময় ছুটিতে থাকায় কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। ফলে দিবালোকের মত স্পষ্ট ও বহুল আলোচিত সাংবাদিক নির্যাতনের এই মামলাটি আদৌ রেকর্ড হয়নি।

অপরদিকে মাদকের বিরুদ্ধেই লেখালেখির কারনে ফরিদুল মোস্তফা খানের বিরুদ্ধে পুলিশের সাজানো ৬ মিথ্যা মামলা এখনও প্রত্যাহার হয়নি। এই অবস্থায় একদিকে নিজের মিথ্যা মামলা অপরদিকে মামলা – হামলায় জড়িতদের শাস্তি ও ন্যায় বিচারের দাবিতে আদালতে র দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা খান। তিনি অভিযোগ করেছেন, মামলাগুলো প্রত্যাহারের জন্য বাংলাদেশ অনলাইন সংবাদ পত্র সম্পাদক পরিষদ প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন করছেন দীর্ঘ দিন হচ্ছে। যার রিসিভ কপি তাদের কাছে আছে।

এদিকে নির্যাতিত সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা নিজের সকল মিথ্যা মামলা দ্রুত প্রত্যাহার ও জড়িতদের বিরুদ্ধে তার দায়েরকৃত মামলা আমলে নিয়ে আসামিদের আইনের আওতায় আনতে বরাবরের মতই প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী,বিচার বিভাগসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট উচ্চ পর্যায়ের তড়িৎ হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তিনি বলেন,মাদক ও ঘুষের বিরুদ্ধে লিখেছি বলে প্রদীপ ও তার লালিত মাদকব্যাবসায়ায়ীরা পাষবিক নির্যাতন করছে। ৬ টি মিথ্যা মামলা দিয়ে টানা ১১ মাস কারাগারে রেখেছে। আমি বর্তমানে শারীরিক, মানসিক ও আর্থিক বিপর্যয়ে আছি। এই মামলা চালাতে পারছিনা।

সূত্রমতে, চলতি বছরের ৮ সেপ্টেম্বর মামলাটি দায়ের করেছিলেন সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা খান। যার নং সিআর ৬৬৬/২০২০ সদর। মূলত সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা খান কর্তৃক প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল জনতার বাণীতে ২০১৯ সালের ২৪ জুন ‘টাকা না দিলে ক্রসফায়ার দেন টেকনাফের ওসি’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর ওসি প্রদীপের রোষানলে পড়েন ফরিদুল মোস্তফা। একপর্যায়ে ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ সালে টেকনাফ থানার ওসি থাকাকালে প্রদীপ কুমার দাশ সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা খানকে রাতের অন্ধকারে ঢাকার মিরপুরের বাসা থেকে তুলে নিয়ে যান টেকনাফ থানায়।

 

পরে চালানো হয় অমানবিক বর্বরতা ও নির্মম নির্যাতন। কয়েক দিন ধারাবাহিক নির্যাতন শেষে অস্ত্র, মাদক, চাঁদাবাজিসহ পৃথক ৬টি মামলা দিয়ে চালান দেয়া হয়। এসব মামলায় সাংবাদিক ফরিদ টানা ১১ মাস ৫ দিন কারাভোগের পর চলতি বছরের ২৭ আগস্ট জামিনে মুক্তি পান। একপর্যায়ে তিনি শারীরিক, মানসিকভাবে নির্যাতনের অভিযোগে চলতি বছরের ৮ সেপ্টেম্বর বরখাস্ত ওসি প্রদীপকে প্রধান আসামি করে ২৬ পুলিশ সদস্য এবং ৪ জন মাদক ব্যবসায়ীসহ মোট ৩০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন সদর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহ।

পিবিআইর প্রতিবেদন দিতে দ্বিতীয় সময়ের দরখাস্তের পরবর্তী ধার্য তারিখ ১৪ মার্চ এ মামলার প্রতিবেদন দাখিলের কথা থাকলেও আদালতে আবারও ৩০ দিন সময় চাওয়ার কারণে মামলার বাদীসহ কর্তব্যরত সাংবাদিকরা এ মামলার ন্যায়বিচার নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে সরকারের ওপর মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। বাদীর প্রধান আইনজীবী মো. আবদুল মন্নান বলেন, দিবা লোকের মত স্পষ্ট সাংবাদিক নির্যাতনের একটি ঘটনার যথা সময়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল না করায় দেশের বিচার ব্যাবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে আদালতের মুল্যবান নষ্ট । ফৌজদারি কার্যবিধিতে তদন্তের বিধি বিধানের সময়সীমা অতিক্রম করা স্বত্তেও প্রতিবেদন দাখিলা না করায় অসন্তোষ প্রকাশের পাশাপাশি মামলাটি তদন্তের আন্তরিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেন সিনিয়র এই আইনজীবী। এদিকে মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে হত্যার ঘটনায় তার বোনের দায়ের করা মামলায় বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।


আরো পড়ুন