• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৫৯ অপরাহ্ন

কক্সবাজারের টেকনাফে সাংবাদিকের সুখের সংসারে ওসি প্রদীপের ভয়াল থাবা!

/ ৪৬৮ বার পঠিত
আপডেট: মঙ্গলবার, ১১ আগস্ট, ২০২০
কক্সবাজারের টেকনাফে সাংবাদিকের সুখের সংসারে ওসি প্রদীপের ভয়াল থাবা!
কক্সবাজারের টেকনাফে সাংবাদিকের সুখের সংসারে ওসি প্রদীপের ভয়াল থাবা!

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ- কক্সবাজারের টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাস ও কক্সবাজারের এসপি মাসুদ হোসেনের রোষানলে সর্বনাশ নেমে এসেছে স্থানীয় সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা ও তার পরিবারে। এসপি ও ওসির যোগসাজশে টেকনাফ থানায় ৩টি মাদক মামলা এবং কক্সবাজার সদর থানায় আরো ৩টি মাদক ও অস্ত্র মামলার আসামি হয়েছেন সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা।

টেকনাফে মামলার পর ক্ষান্ত হয়নি পুলিশ। ফরিদুলকে পুলিশ ঢাকা থেকে বিনা ওয়ারেন্টে আটক করে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা সাজিয়ে আসামি করে বলে অভিযোগ তার পরিবারের সদস্যদের।

সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফার স্ত্রী হাসিনা মোস্তফা ফেয়ার বার্তার নিজস্ব প্রতিবেদককে জানান, এসপির নির্দেশে ওসি প্রদীপের নেতৃত্বে আমার স্বামীকে বিনা দোষে আটক করে প্রথমে ১০ লাখ টাকা দাবি করে পুলিশ। আমার স্বামী এসপি ও ওসির বিরুদ্ধে মাদক সংশ্লিষ্ট, গ্রেফতার বাণিজ্য ও অনিয়মের সাংবাদ পত্রিকায় প্রকাশ করেন। এতেই ক্ষিপ্ত হন এসপি ও ওসি।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে ফরিদুলের স্ত্রী হাসিনা মোস্তফা বলেন, আমার স্বামীকে জামিনে মুক্ত করতে নিজের বাড়িঘর-জমিজমা সর্বস্ব বিক্রি করে দিয়েছি। এখন নিঃস্ব হয়ে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি আমি ও আমাদের ২ ছেলে এবং এক মেয়ে।

ফরিদুলের স্ত্রী কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, প্রধানমন্ত্রী ছাড়া আমাদের রক্ষা করার কেও নেই। আপনি বঙ্গবন্ধু কন্যা আপনিই পারবেন আমাদের রক্ষা করতে।

এলাকাবাসী, সহকর্মী সাংবাদিকদের সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজারে ফরিদুল মোস্তফা খান একজন নিরপেক্ষ ও মেধাবী সাংবাদিক হিসাবে সুপরিচিত । কৈশর থেকেই লেখালেখিতে অভ্যস্ত। দৈনিক কক্সবাজারবাণী ও জনতারবাণী ডটকম তার প্রকাশিত পত্রিকা। আজ তিনি ১১ মাস ধরে বিনা দোষে কারাজীবন ভোগ করছেন।

কক্সবাজারের এসপি ও টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশের রোষানলে পরে ৬টি মিথ্যা মামলার আসামি। তার জামিন করাতেও ব্যর্থ হয়েছেন পরিবারের লোকজন। ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে ৩ ছেলে-মেয়ের পড়ালেখা । স্ত্রী, ৩ সন্তান ও বৃদ্ধ মায়ের চরম অভাব অনটনে দিন কাটছে।

স্ত্রী হাসিনা মোস্তফা জানালেন, তার স্বামী সত্য ও বস্তুনিষ্ট সংবাদ করতেন । এসপি ও ওসি প্রদীপের বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘুষ বাণিজ্য নিয়ে লিখে গেছেন । তাই তাকে পরপর ৬টি মামলা দেয়া হয়েছে। তার স্বামীর চোখে এবং পায়ুপথে গুড়া মরিচ ঢেলে দিয়েছে ওসি প্রদীপ । এতেও ক্ষান্ত হয়নি । বৈদ্যুতিক শর্ট দিয়ে যৌনশক্তি নষ্ট করে দিয়েছে বলে জানা গেছে । অর্থাভাবে কারাগারে ঠিক মতো চিকিৎসা পাচ্ছেন না । একটু দেখা করতে অনেক ভোগান্তি পেতে হয়।

ফরিদুল মোস্তফার মেয়ে সুমাইয়া মোস্তফা খান জানিয়েছে, তাদের পরিবারের কারো বিরুদ্ধে কোন মামলা নেই। তারা কখনো অপরাধে জড়াননি । সংবাদ প্রকাশ করার কারণেই ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন বাবা । ওসি প্রদীপের নির্মম নির্যাতনে বাবার চোখ দুটি অন্ধ হওয়ার উপক্রম, ডান হাত এবং পা ভাঙা, আঙুল থেঁতলানো।

ছোট ছেলে সাদেক মোস্তফা জানান, বাবাকে ফিরে পেতে চাই। বাবাকে ছাড়া ঘুম আসে না।

হাসিনা মোস্তফা বলেন, আমার স্বামীকে হয়রানি না করতে হাইকোর্টে রিট করেছিলাম । ঐ রিট আদালতের নির্দেশে পিবিআই তদন্ত করছে । আট মাস ধরে পিবিআই কার্যালয়ে ফাইল পড়ে আছে । ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। এসপি ও ওসি প্রদীপের কারণে আমাদের জীবনে নেমে এসছে অন্ধকার।

এদিকে কারাবন্দি সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফার পরিবারের খোঁজ খবর নিতে কক্সবাজার আসেন বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামে(বিএমএসএফ) এর একটি টীম কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আহমেদ আবু জাফরের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় বিএমএসএফ’র সাংগঠণিক সম্পাদক ও অনলাইন এডিটরস ফোরামের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ,বাংলাদেশ অনলাইন সংবাদপত্র সম্পাদক পরিষদ (বনেক) সভাপতি মোঃ খায়রুল আলম রফিক,বিএমএসএফ’র কেন্দ্রীয় সহ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আহাদ,কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য নান্টু লাল দাস, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও ফেনী অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী সালাহ উদ্দিন(নোমান) কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোঃ সোহাগ,কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য আবুল হাসনাত তুহিন,বিএমএসএফ মালদীপ শাখার সভাপতি জুয়েল খন্দকার, এস এইম জীবন,এনামুল কবির সোহেলসহ দেশের বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

উল্লেখ্য, বিএমএসএফ’র প্রতিষ্ঠাতা ও কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আহমেদ আবু জাফর জানান, অচিরেই সাংবাদিকদেরকে নির্যাতনের হাতথেকে মুক্ত করতে পদক্ষেপ নেয়া হবে এবং এই লক্ষ্যেই কক্সবাজারের মত সারাদেশে সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি গঠণ করা হচ্ছে ।


আরো পড়ুন