• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০২:১১ অপরাহ্ন

চালু হচ্ছে স্বপ্নের মেট্রোরেল: ৯ শতাংশ কমবে যানজটের ক্ষতি

/ ৮৬ বার পঠিত
আপডেট: রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২২

আগামী ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেলের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে পাল্টে যাচ্ছে উত্তরা, মিরপুরসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকার মানুষের জীবন যাত্রা। শুরুতেই স্বপ্নের মেট্রোরেল চলবে উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত। ফলে মেট্রোরেলের পাশাপাশি সড়কে চলাচলকারী মানুষের দুর্ভোগ কমে আসবে অনেকাংশে।

এতে যাত্রা হবে নির্বিঘ্ন, সময় বাঁচার ফলে বাড়বে কর্মপরিকল্পনা। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) ও ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) সূত্রে জানা যায়, বছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২ দশমিক ৫ শতাংশ ক্ষতি করছে যানজট। টাকার অঙ্কে যা প্রায় ৮৭ হাজার কোটি। ঢাকা শহরের ১২৮ কিলোমিটার সড়কের যানজটে মূলত এই ক্ষতি হয় দেশে। এসব ক্ষতির কথা মাথায় রেখে ২০৩০ সাল নাগাদ ১২৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মোট ছয়টি মেট্রো লাইন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এর মধ্যে এমআরটি-৬ এর আওতায় উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার লাইন উন্মুক্ত করা হবে ২৮ ডিসেম্বর। এতে ক্ষতি কমবে ৯ শতাংশ।

মেট্রোরেল ঢাকাবাসীর কাছে এখন আর স্বপ্ন নয়। ট্রায়াল রান এরই মধ্যে দেখে ফেলেছে নগরবাসী। এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষা। উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ২১ দশমিক ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই মেট্রোরেল লাইনটি এমআরটি-৬ নামে পরিচিত। উভয় দিকের ২৪টি ট্রেন প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী এবং দিনে পাঁচ লাখ যাত্রী বহন করতে পারবে। প্রতিটি ট্রেনে ছয়টি কোচ থাকবে, যা ভবিষ্যতে আপগ্রেড করা যেতে পারে এবং প্রতিটি ট্রেন সর্বাধিক দুই হাজার ৩০৮ জন যাত্রী বহন করতে সক্ষম হবে। উত্তরা থেকে মতিঝিল হয়ে কমলাপুর পৌঁছানো যাবে মাত্র ৪০ মিনিটে, যা যানজট কমাবে এবং কর্মঘণ্টা ও সময় বাঁচাবে। তবে আগামী বছর মেট্রোরেল লাইন-৬ পূর্ণমাত্রায় চালু হলে ক্ষতির পরিমাণ কমে আসবে প্রায় ২০ শতাংশ।

ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম এ এন সিদ্দিক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘সড়কপথে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। যেমন উত্তরা থেকে কমলাপুরে কেউ নিশ্চয়তা দিতে পারবে না কত সময় নিয়ে পৌঁছানো যায়। তবে মেট্রোরেলে বলা যায়, ৩৮ থেকে ৪০ মিনিটে পৌঁছানো যাবে। ’

তিনি বলেন, ‘অপচয়ের এসব তথ্য ফিজিবিলিটি স্ট্যাডিতে বের হয়েছে। এসব বিষয় মাথায় রেখেই মেট্রোরেল নির্মিত। মেট্রোরেল-৬ এর মাধ্যমে কিছুটা হলেও ক্ষতির মাত্রা কমে আসবে। যখন ফুল ফেজে ছয়টি মেট্রোরেল চালু হবে তখন জটলাজনিত কারণে ঢাকায় ক্ষতির পরিমাণ থাকবে না বলা যায়। ’

মেট্রোরেল সম্পূর্ণ এলিভেটেড এবং বিদ্যুৎচালিত। এই রুটে ১৭টি স্টেশন রয়েছে। এগুলো হলো- উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজিপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়, মতিঝিল ও কমলাপুর।

আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ২৪ সেট মেট্রোরেল ট্রেন নিয়ে শুরু হবে এমআরটি লাইন-৬ এর যাত্রা। প্রতি সেট মেট্রোরেল ট্রেনে প্রাথমিকভাবে ছয়টি করে কোচ থাকবে, যাতে পরবর্তীকালে আরও দুটি কোচ যোগ করে কোচ সংখ্যা আটটিতে উন্নীত করার ব্যবস্থা থাকবে। মেট্রোরেলের সুষ্ঠু পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ এবং উন্নত সেবা নিশ্চিত করতে থাকবে একটি অত্যাধুনিক অপারেশন কন্ট্রোল সেন্টার।

যাত্রীদের সুবিধার্থে মেট্রোরেলের স্টেশনগুলো হবে এলিভেটেড। টিকিট কাউন্টার ও অন্যান্য সুবিধা থাকবে দোতলায় এবং ট্রেনের প্ল্যাটফর্ম থাকবে তিনতলায়। প্রত্যেকটি মেট্রোরেল স্টেশনে লিফট, চলন্ত সিঁড়ি, সার্বক্ষণিক সিসিটিভি ক্যামেরার পর্যবেক্ষণ, প্রবেশপথে স্বয়ংক্রিয়ভাবে টিকিট সংগ্রহের মেশিনসহ আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন সর্বাধুনিক ব্যবস্থা থাকবে। র‌্যাপিড পাস ব্যবহার করে যাত্রীরা নির্ঞ্ঝাটে মেট্রোরেলে যাতায়াত করতে পারবেন।


আরো পড়ুন