বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘ উপস্থিতি অর্থনীতি, পরিবেশ, নিরাপত্তা এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। তাদের প্রত্যাবাসনের অনিশ্চয়তা সর্বস্তরে ব্যাপক হতাশা সৃষ্টি করেছে। মানব পাচার, মাদক চোরাচালানসহ আন্তসীমান্ত অপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে রোহিঙ্গা সংকট সমাধান চেয়ে জাতিসংঘকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশ্ব সংস্থার সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে বাংলায় দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় বিকেলে (বাংলাদেশ সময় রাত ৩টা ২৭ মিনিট) সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে বাংলায় ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসংঘকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে বলেন বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের নিরাপদে ও মর্যাদার সঙ্গে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ তৈরিতে দ্বিপক্ষীয়, ত্রিপক্ষীয়, জাতিসংঘসহ অন্য অংশীজনদের নিয়ে আলোচনা সত্ত্বেও একজনও তাদের মাতৃভূমিতে এ পর্যন্ত ফেরত পাঠানো যায়নি। ’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গা সংকট উগ্রবাদকেও ইন্ধন দিতে পারে। এ সংকট প্রলম্বিত হতে থাকলে তা উপমহাদেশসহ বৈশ্বিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।
অধিবেশনের সভাপতির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে গণহারে বাংলাদেশে প্রবেশের পাঁচ বছর পূর্ণ হয়েছে গত মাসে। তাদের নিরাপদে ও মর্যাদার সঙ্গে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ তৈরিতে দ্বিপক্ষীয়, ত্রিপক্ষীয়, জাতিসংঘসহ অন্য অংশীজনদের নিয়ে আলোচনা সত্ত্বেও একজন রোহিঙ্গাকেও তাদের মাতৃভূমিতে এ পর্যন্ত ফেরত পাঠানো যায়নি। মিয়ানমারে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সশস্ত্র সংঘাত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনকে আরও দুরূহ করে তুলেছে। আশা করি, এ বিষয়ে জাতিসংঘ কার্যকর ভূমিকা রাখবে। ’
এছাড়াও ভাষণে রাশিয়া–ইউক্রেন সংঘাতের অবসান কামনা করে তিনি বলেস, ‘যুদ্ধ বা একতরফা জবরদস্তিমূলক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞার মতো বৈরী পন্থা কখনো কোনো জাতির মঙ্গল বয়ে আনতে পারে না। পারস্পরিক আলাপ-আলোচনাই সংকট ও বিরোধ নিষ্পত্তির সর্বোত্তম উপায়। ’