• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৩০ অপরাহ্ন

পুলিশের সহযোগিতায় সাংবাদিকদের পেটালেন ক্লিনিক মালিক, এসআই বরখাস্ত, গ্রেফতার – ৪ 

জুয়েল খন্দকার, নিজস্ব প্রতিবেদক / ২৩৯ বার পঠিত
আপডেট: বুধবার, ১০ আগস্ট, ২০২২

রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর এলাকায় এসপিএ ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামে একটি বেসরকারি ক্লিনিকের অনিয়ম নিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছেন ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের দুই সাংবাদিক। তাঁদের মারধর করেছেন ক্লিনিকটির মালিক ওসমান। পরে পুলিশ এয়াআই মিলন এসে দুই সাংবাদিককে আরেক দফা মারধর করেন।

আহতেরা হলেন ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সিনিয়র সাংবাদিক হাসান মেসবাহ ও ক্যামেরাপারসন সাজু মিয়া। তাঁদের গাড়িটিতেও ভাঙচুর চালানো হয়েছে। এই ঘটনায় কামরাঙ্গীরচর থানার এক এসআই মিলনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে সাংবাদিকদের ওপর হামলার এ ঘটনা ঘটে।

আহত সাংবাদিক হাসান মেসবাহ বলেন, ‘কামরাঙ্গীরচরে এসপিএ ক্লিনিকটিতে একজন ভুয়া চিকিৎসক বসেন। তিনি বিএমডিসির যে নম্বর ব্যবহার করেন সেটি ভুয়া বলে আমাদের কাছে তথ্য ছিল। সেই তথ্যের ভিত্তিতে আমরা সেখানে যাই এবং ক্লিনিকটির মালিক ভুয়া চিকিৎসক ওসমানের সাক্ষাৎকার নিতে শুরু করি। একপর্যায়ে ভুয়া ডাক্তার থাকার বিষয়ে কথা বললে ওসমান বলেন, এই তুই কি আমাকে একজন ভুয়া চিকিৎসক মনে করেছিস! জানিস আমি কে? দাঁড়া তোকে দেখাচ্ছি। এই যা, তোকর কাছে আর ইন্টারভিউ দেব না। তখন আমি তাঁকে বললাম যে, আপনি এই বিষয়টি নিয়ে কথা বইলেন না, শুধু বলেন আপনার ক্লিনিকে ভুয়া চিকিৎসক বসে কি না। তখন তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে প্রথমে আমার চশমাটা ভেঙে ফেলেন। এরপর আমার গায়ে হাত তোলেন। পরে ক্লিনিকের ১৫ থেকে ২০ জন লোক ডেকে আমাদের মারধর করেন। এরপর আমাদের ফোন, গাড়ির চাবি কেড়ে নিয়ে তিনিই পুলিশকে খবর দেন।

এসআই মিলন বরখাস্ত

মেসবাহ আরও বলেন, ‘পুলিশ এলে মিলন নামের একজন এসআই আমাকে এসেই বলেন, তুই কোন টিভির সাংবাদিক। তখন আমি তাঁকে বলি, আমরা ইন্ডিপেনডেন্ট টিভি থেকে এসেছি। এবার তিনি সাজুকে বলতে লাগলেন, তোরা যদি আসল সাংবাদিক হয়ে থাকিস তাহলে তোদের কার্ড দেখা। এ সময় সাজু তাঁর কার্ডটি বের করে দেখালে সেটি দেখে বলতে লাগলেন, এই তোরা তো ভুয়া সাংবাদিক। তাকে আমি বারবার বলার চেষ্টা করছিলাম, আমরা আমাদের অফিস থেকে অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে এখানে এসেছি, আপনি অফিসে ফোন করে বিষয়টি যাচাই করতে পারেন। কিন্তু তিনি আমার কোনো কথা না শুনে সরাসরি তেড়ে এসে আমার মুখে ঘুষি মারেন। এরপর অন্যরা তাঁর সঙ্গে যোগ দেয়। আমাদের দু’জনকে সেই এসআই মিলনের সামনে আবারও মারধর করা হয়।

হাসান মেসবাহ বলেন, তারা আমাদের সঙ্গে থাকা ক্যামেরা ও গাড়ি ভাঙচুর করেছে। আমাদের কাছে অফিসের যাবতীয় সব সরঞ্জামাদি থাকার পরও এসআই ভুয়া সাংবাদিক বলে মারধর করেছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কামরাঙ্গীরচর থানার ডিউটি অফিসার নুসরাত বলেন, এ ঘটনায় এক পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

এ ঘটনায় কামরাঙ্গীরচর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে । কামরাঙ্গীরচর থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন এই ঘটনায় নিয়মিত মামলার মামলা রজু করা হয়েছে। চার জনকে আটক করা হয়েছে আগামীকাল তাদেরকে আদালতে প্রেরণ করা হবে আর বাকিদের দ্রুত গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা চেষ্টা চলছে আমাদের।


আরো পড়ুন