• বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৩:১১ অপরাহ্ন

করোনার সংক্রমন ও বিস্তার কমাতে,বায়ু দূষণ রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহনের দাবি

রিপোর্টার, মোঃ আনোয়ার হোসেন / ১০৮৮ বার পঠিত
আপডেট: রবিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২০

অপর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের কারণে নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত শুকনো মৌসুমে ধুলার দূষণ তীব্র হয়ে উঠে যা মানব স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতি করতে শীতকালীন অন্যান্য ফ্লু’র পাশাপাশি করোনভাইরাসকে সহায়তা করতে পারে।

করোনা ধূলিকণা এবং দূষণের সাথে ছড়িয়ে পরতে পছন্দ করে। সাম্প্রতিক অনেক গবেষণায় বলা হয়েছে যে শীতের সময় বাযু দূষণের অবনতি এ ভাইরাসকে আরও শক্তিশালী হতে এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে সহায়তা করতে পারে। এমতাবস্থায় আজ ১৪ নভেম্বর ২০২০, শনিবার, সকাল ১১:০০ টায়, রাজধানীর আজিমপুর বাস ষ্ট্যান্ডের সামনে পরিবেশ আন্দোলন মঞ্চ, সুবন্ধন সামাজিক সংগঠন, সচেতন নগরবাসী, আলু বাজার বন্ধু সংঘ, প্রতিভা জাগরনী সংঘ, ঢাকা যুব ফাউন্ডেশন, ও বিডি ক্লিক এর যৌথ উদ্যোগে করোনার সংক্রমন ও বিস্তার কমাতে,বায়ু দূষণ রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহনের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়।

পরিবেশ আন্দোলন মঞ্চ এর সভাপতি আমির হাসান মাসুদ এর সভাপতিত্বে মানববন্ধন কর্মসূচীতে বক্তব্য প্রদান করেন সচেতন নগরবাসীর সভাপতি জি.এম রোস্তম খান, সুবন্ধন সামাজিক কল্যান সংগঠনের সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব, সাধারন সম্পাদক মকবুল হোসেন, ঢাকা যুব ফাউন্ডেশনের সভাপতি শহীদুল ইসলাম, বাংলাদেশ নদী বাচাঁও আন্দোলনের সদস্য সচীব, শাকিল রেহমান, বাংলাদেশ সাইকেল লেন বাস্তবায়ন পরিষদের সভাপতি আমিনুল ইসলাম টাব্বুস, গৌর সুন্দর লেন যুব ঐক্যের সভাপতি ওয়াসিম, সুবন্ধন সংগঠনের সহ-সাধারন সম্পাদক মহসীন সুমন, সচেতন নগরবাসীর সহ-সভাপতি রুহুল আমিন প্রমুখ। বক্তারা বলেন, বায়ু দূষণ এক নীরব ঘাতক।

সাধারণত শুষ্ক মৌসুমে বায়ু দূষণের তীব্রতা বাড়ে। কারণ এসময় বাতাসে ধুলিকণার উপস্থিতি বেশি থাকে। শীতের শুরুতেই দেখা যায় মারাত্মক বায়ু দূষণে মানুষের জীবনে নাভিশ্বাস উঠে যায়। সুস্থ জীবন ও পরিবেশের জন্য বায়ু দূষণ বড় ধরনের বাধা। দূষিত বায়ুর কারণে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ নানা রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে, যেমন সর্দিকাশি, এলার্জি, ফুসফুসের অসুখ, শ্বাসকষ্ট, এজমা বা নিউমোনিয়া, চর্মরোগ, হৃদরোগ, স্ট্রোক, মানসিক অবসাদ, মাথাধরা, ঝিমুনি, স্মৃতিভ্রংশ, ক্যান্সার প্রভৃতি বিভিন্ন ধরনের রোগ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মতে, প্রতি বছর বায়ুদূষণের কারণে বিশ্বে প্রায় ৭০ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়। দীর্ঘকালীন ভিত্তিতে দূষিত বায়ু ফুসফুসে ঢুকে তাকে ক্রমশ দুর্বল করে দেয়, যা শ্বাসযন্ত্রের সমস্যাজনিত মৃত্যুকে ত্বরান্বিত করে।

কিন্তু বার্ষিক বায়ুদূষণের সঙ্গে এ বার যোগ হয়েছে সার্স-কোভ ২ ‘রেসপিরেটরি’ ভাইরাসের সংক্রমণ। যার প্রধান লক্ষ্য ফুসফুসই। শীতকালে বাযু দূষণজনিত অ্যালার্জির কারণে মানুষ সাধারণত জ্বর, কাশি, হাঁচি ও সর্দিতে ভোগেন। মানুষ যখন করোনার পাশাপাশি ঠান্ডায় আক্রান্ত হবেন তখন তারা কাশি এবং হাঁচি মাধ্যমে দ্রুত করোনার ফোঁটা ছড়িয়ে অন্যকে সংক্রমিত করবেন। সুতরাং, আগামী দিনগুলোতে বাযু দূষণ কমাতে এবং করোনার অধিকতর প্রকোপ রোধে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে। মানববন্ধন থেকে বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রনে নিন্মের ৮টি দাবি জানানো হয়।

১. ইট ভাটার থেকে সৃষ্ট দূষণ বন্ধে মালিকদেরকে জ্বালানি সাশ্রয়ী আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে বাধ্য করতে হবে।

২. শুষ্ক মৌসুমে ধুলার দূষণ প্রতিরোধে সিটি করপোরেশনকে সঠিকভাব রাস্তা পরিষ্কার এবং যথাযথ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পাশাপাশি ধুলা ছড়িয়ে পড়া বন্ধে নিয়মিত রাস্তায় পানি ছিটাতে হবে।

৩. রাস্তা-ঘাট ও ভবন নির্মাণের ফলে সৃষ্ট ধুলাবালি নিয়ন্ত্রণের জন্য নির্মাণকারীরা যাতে নির্মাণের এলাকা ঢেকে রাখেন এবং পানি ছিটানোর পাশাপাশি দূষণ সংক্রান্ত নিয়মাবলী মেনে চলেন, তা নিশ্চিত করতে হবে।

৪. যত্র-তত্র সিটি করপোরেশনের সংগৃহীত বর্জ্য পুড়ানো বন্ধ করতে হবে।

৫. শিল্পকারখানর বায়ু দূষণ কমাতে ইটিপি ব্যবহারে বাধ্য করতে হবে।

৬. যানবাহন ও নৌযান থেকে দূষণ এবং কালো ধোঁয়া নির্গমন রোধ করার জন্য কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

৭. সেবাদানকারী সংস্থাগুলোর খোড়াখুড়ি কাজের সমন্ময় সাধন করা।

৮. বায়ু দূষণের ভয়াবহতা সম্পর্কে অবহীত করতে ব্যাপক জনসচেতনতামূলক কর্মসূচী গ্রহন করতে হবে।


আরো পড়ুন