• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৫৪ অপরাহ্ন

স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে স্বামীর যাবজ্জীবন

/ ১৪৩ বার পঠিত
আপডেট: বৃহস্পতিবার, ২৫ আগস্ট, ২০২২

সোহেল হোসেন লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি :

লক্ষ্মীপুরে জোরপূর্বক মুখ চেপে কীটনাশক খাইয়ে ও মাথায় আঘাত করে শিল্পী আক্তার নামে এক গৃহবধূকে মারার দায়ে স্বামী মো: হোসেনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন।

লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আসামি হোসেন তার স্ত্রীকে পরিকল্পনা করে হত্যা করেছেন। আদালতে ঘটনাটি প্রমাণিত হয়েছে। এতে আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেয়। তবে আসামি পলাতক রয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্ত হোসেন সদর উপজেলার ১৭নং ভবানীগনু ইউনিয়নের চরমনসা গ্রামের সফিক উল্যাহর ছেলে।

আদালত ও এজাহার সূত্রে জানা যায়, হোসেনের সঙ্গে ২০০৩ইং সালের দিকে সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নের যাদৈয়া গ্রামের আব্দুল হাসেমের মেয়ে শিল্পীর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে তিন মেয়ে ও এক ছেলেসন্তান আছে। ২০১৬ইং সালের দিকে হোসেন দ্বিতীয় বিয়ে করেন।

দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে তিনি চট্টগ্রামে বসবাস করতেন। এরপর থেকে তিনি প্রথম স্ত্রী সন্তানদের ভরণপোষণ বন্ধ করে দেয়। হোসেন প্রথম স্ত্রীকে পথের কাটা মনে করতেন। এজন্য তিনি শিল্পীকে হত্যার পরিকল্পনা নিয়েই চট্টগ্রাম থেকে চরমনসা গ্রামের বাড়িতে আসেন।

২০১৮ইং সালের ২৭ আগস্ট সন্ধ্যায় পার্শ্ববর্তী তোরাবগঞ্জ বাজার থেকে হোসেন কীটনাশক কেনেন। পরে বাড়িতে গিয়ে কীটনাশক পানিতে মিশিয়ে স্যালাইন বলে শিল্পীকে খেতে বলেন। পানি ঘোলা ও গন্ধ হওয়ায় শিল্পী তা খেতে চায়নি। এ সময় তাদের মেয়ে সীমা আক্তার খেতে চাইলেও হোসেন তাকে খেতে দেয়নি। এক পর্যায়ে হোসেন জোর করে মুখ চেপে শিল্পীকে বিষ খাইয়ে দেয়। পরে শিল্পী কয়েকবার বমি করেন। এতে শিল্পীকে সুপারি খাওয়ানোর কথা বলে হোসেন ঘর থেকে বের হয়ে যায়।

এই দিকে রাতে হঠাৎ হোসেন ও শিল্পীর ঘর থেকে আওয়াজ আসে। এক পর্যায়ে শিল্পীর চিৎকার শোনা যায়। এ সময় মেয়ে সীমা আক্তারসহ অন্য সন্তানরা ওঠে আসলে হোসেন তাদের ঘুমানোর জন্য ধমক দেয়। পরে হোসেন তার মাথায় আঘাত করেন। এতে কীটনাশকের প্রভাব ও আঘাত পেয়ে শিল্পীর অবস্থার অবনতি হয়।

ঘটনাটি অন্যদিকে প্রভাবিত করতে পার্শ্ববর্তী এক গ্রাম্য চিকিৎসকের থেকে একটি স্যালাইন পুশ করা হয়। গ্রাম্য চিকিৎসক তখন শিল্পীকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে শিল্পী মারা যায়। এই ঘটনার দুদিন পর আব্দুল হাসিম বাদী হয়ে হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে ভিকটিমের পেটে বিষ ও মাথায় আঘাতের জখম পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের ভিত্তিতে ২০১৯ইং সালের ২০ অক্টোবর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোসলেহ উদ্দিন আদালতে হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আসামির সাজা দেন


আরো পড়ুন