• বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৪:২০ পূর্বাহ্ন

লালমনিরহাট তুলা চাষ করে লাভবান কৃষক,তুলার উৎপাদন বাড়লে আমদানি নির্ভরতা কমে আসবে

/ ১৪৫ বার পঠিত
আপডেট: শনিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২২

মিজানুর রহমান:
লালমনিরহাটে তামাকের জমিতে বিকল্প ফসল হিসেবে তুলা চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে তুলা চাষীরা,সম্ভবনাময় এই ফসলটির উৎপাদন বাড়লে চাষীরা যেমন লাভবান হবে পাশাপশি আমদানি নির্ভরতা কমে আসবে।

দেশের অর্থনিতীতে অবদান রাখা রপ্তানি যোগ্য পন্যের প্রধান খাত বস্ত্র,এই বস্ত্রখাতের অন্যতম কাঁচামাল হচ্ছে তুলা,দ্রুত বর্ধনশীল এই শিল্পের কাঁচামালের যোগান ঠিক রাখতে বিদেশ থেকে প্রচুর পরিমানে তুলা আমদানি করতে হয়,প্রতিবছর তুলা আমদানি বাবদ প্রচুর পরিমানে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যায় হয়ে থাকে।

অর্থকরি ফসল তুলা উৎপাদনে ব্যাপক সম্ভবনা রয়েছে,বাংলাদেশ তুলা উন্নয়ন বোর্ড লালমনিরহাট জেলার কালিগঞ্জ,আদিতমারি,লালমনিরহাট সদরে ২০০বিঘা জমিতে পরিক্ষামুলক তুলা চাষ করে, জেলার আবহাওয়া ও মাটির গুনাগুন তুলা চাষে উপযোগী হবার কারনে ব্যাপক সম্ভবনা আছে তুলা চাষে।প্রতি বিঘা জমিতে ১৫/২০ হাজার টাকা খরচ করলে ০৬মাস মেয়াদী ফসল তুলা ঘরে তুলে বিক্রি করলে ৭৫/৮০ হাজার টাকা বিক্রি আসে,এতে বিঘা প্রতি ৫৫/৬০ হাজার টাকা লাভ পাবেন কৃষক। ফলে তামাকের বিকল্প হিসেবে তুলা চাষে আগ্রহী হচ্ছে লালমনিরহাটের কৃষক।

লালমনিরহাট সদর উপজেলা মোগলহাট ইউনিয়ন জিরামপুর,কর্নপুর,কাটানদিঘী এলাকায় তুলা চাষী নবাব,রহমান,ধীরেন বাবু জানান তুলা উন্নয়ন বোর্ড তামাকের বিকল্প ফসল হিসেবে তাদের তুলা চাষে সহায়তা করেন,পরিক্ষামুলক গতবছর তুলা চাষ করে সাফল্য পান এবং তামাকের চেয়ে লাভ বেশী হবার কারনে এবার তারা বেশী করে তুলা চাষ করেছেন।সরকার সহায়তা ও পরামর্শ দিলে তুলা চাষে আগ্রহী হবে কৃষক বলে জানান।

তুলা উন্নয়ন বোর্ড রংপুর জোনের প্রধান কৃষিবীদ ফজলে রাব্বী জানান,লালমনিরহাট জেলার মাটি ও আবহাওয়া তুলা চাষে উপযোগী,জেলার উর্বর ফসলি জমিতে তামাক কোম্পানি গুলো সার, বীজ, কীটনাশক,সুবিধা দিয়ে চাষীদের প্রলুবদ্ধ করে তামাক উৎপাদন করে নিচ্ছে,সাময়িক লাভের আশায় জেলার কৃষক তামাক চাষে ঝুঁকে পড়েছে, জমিতে তামাক চাষ করায় প্রতিবছর জমি উর্বরতা হারাচ্ছে এর প্রভাবে ভুট্টা,ধান উৎপাদন বিঘা প্রতি ৫/৬ মন কমছে।তামাক চাষের বিকল্প হিসেবে আয়ের দিক থেকে তুলা চাষে কৃষক লাভবান হবে পাশাপাশি জমির উর্বরতা ঠিক থাকবে। এক বিঘা জমিতে গত বছর ১৮ মন তুলা উৎপাদন হয়েছিল এ বছর আবহওয়া এবং অভিজ্ঞতার কারনে ২০মন পার হবে বলে কৃষক আশাবাদী।তুলা চাষের বড় গুন হচ্ছে তুলার পাতা ঝড়ে পরার পর মাটিতে মিশে তা কম্পোষ্ট তৈরী করে এতে জৈব সারের কাজ করে।তুলা উঠার পর তুলার গাছ শুকিয়ে জ্বালানি হিসেবে ব্যাবহার হয়ে থাকে।তুলা উঠার পর জমিতে বোরো ধান,ভুট্টা সহ অন্যান্য ফসল চাষ করতে কোন বাঁধা থাকেনা।সার্বিক বিবেচনা করে এই অঞ্চলের কৃষক তুলা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে।

তুলার উৎপাদন বৃদ্ধি করা গেলে দেশের বস্ত্র শিল্পে যোগান দেওয়া গেলে আমাদের আমদানী নির্ভরতা কমবে সেই সাথে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে।


আরো পড়ুন