• শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৯:৩১ পূর্বাহ্ন

মুক্তাগাছা আসাদ খুনের আসামী “মনি” পুলিশের নিমন্ত্রনে অতিথি

/ ৪৮০ বার পঠিত
আপডেট: শনিবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৩

বদরুল আমীন, ময়মনসিংহ প্রতিনিধি:-
ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা উপজেলার শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম মাহবুবুল আলম মনি। ডাক্তার পেটানো, সরকারী কাজে বাধাঁ, টেন্ডারবাজী, চাঁদাবাজী, খুন খারাবীতে তার নের্তৃত্ব ও খুনেরসহ একাধিক মামলা থাকলেও স্থানীয় পুলিশে কাছে সে ভালো মানুষ। যাকে পথ চলতে হয় একাধিক সাঙ্গ-পাঙ্গ নিয়ে। স্থানীয় জনগনের কাছে সর্বাধিক সমালোচিত হলেও সড়কে চাঁদাবাজীর কাজের ভাগে খুশি স্থানীয় পুলিশও! চলাফেরায় তার রয়েছে এডবাঞ্চপার্টী। ব্যবহর করে পুলিশের মতই ওকিটকি! ছাত্রদল থেকে ডিকবাজী খেয়ে এসেছেন স্থানীয় যুবলীগে। সে স্থানীয় এমপির ক্যাডার হিসেবে পরিচিত। তার দলে সদস্য সংখ্যা হলো ৩৫/৪০ জন। যারা নামে বেনামে এমপির প্রকল্প পেয়ে থাকেন। এই সরকারী উন্নয়ন বরাদ্দ দিয়ে লালিত-পালিত হয় সন্ত্রাসী বাহিনী এমন অভিযোগ স্থানীয় নেতাকর্মীদের।


প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, বর্তমানে মুক্তাগাছা থানায় কর্মরত ওসি আব্দুল মজিদ যেকোন অনুষ্ঠানে বিতর্কিত সন্ত্রাসী বলে খ্যাত মাহবুবুল আলম মনিকে নিমন্ত্রন করেন। বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত থাকার পরও কমিনিটি পুলিশিং সভায় ও গেল সপ্তাতে পুজা নিয়ে পুলিশের সভায় বক্তব্য দিতে দেখা গেছে। অথচ মনি সম্প্রতি যুবলীগ নেতা আসাদ হত্যার মূল আসামী।


কল মিস্ত্রীর পুত্র মাহবুবুল আলম মনি। এক সময় উনুনের উপর হাড়ি বসিয়ে তার মা অপেক্ষা করতো দুমুঠো চালের জন্য, সেই মাহবুবুল আলম মনি আজ কোটি কোটি টাকার ও সম্পদের মালিক! মনি দখল করেছে ডিস ক্যাবল ব্যবসা, পুকুর, অন্যের দুটি বাসা, সড়কে চাঁদাবাজী, স্থানীয় এমপির উন্নয়ন প্রকল্পে কর্তৃত্বসহ সব কিছুতেই তার আধিপত্য রয়েছে। স্থানীয় ভাবে প্রভাব বিস্তার করতে গিয়ে গত ৫ বছরে কমপক্ষে ৩০ জন আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীকে পিটিয়ে, কুপিয়ে আহত ও খুনের মধ্যদিয়ে একক আধিপত্য অর্জন করেছে। আর এটা সম্ভব হয়েছে স্থানীয় সাংসদের ছত্রছায়ায় থেকে। এর পরও তিনি বর্তমানে মুক্তাগাছা থানার কর্মরত ওসি আব্দুল মজিদের নিমন্ত্রনে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অতিথি হন। মনি‘র আস্তানা থেকে উদ্ধার হয়েছে সম্প্রতি যুবলীগ নেতা আসাদ খুনে ব্যবহরিত অস্র।সে আস্থানায় অনেকের আসাযাওয়া রয়েছে। কি হয়না সেখানে?


গত ৬ জুলাই/২০২১ মুক্তাগাছার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার সালেকিন মামুনকে বেধরক পিটায় মাহবুবুল আলম মনি ও তার দলবল। মামলা হওয়ার পর ডাক্তারকে তাৎক্ষনিক প্রত্যাহার করা হয়। এই মামলা রেকর্ডকারী পুলিশ পরিদর্শক দুলাল আকন্দকেও প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। সিসিফুটেজে এর বাস্তবতা থাকলেও পুলিশ এ মামলা থেকে মাহবুবুল আলম মনিকে অব্যহতি দিয়ে চার্জশীট দেয়। ঐ সময়ে মুক্তাগাছা থানায় ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মাহমুদুল আলম ও ওসি তদন্ত হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। এই মামলার তদন্তকারী অফিসার ছিলেন মাহবুবুল আলম মনির প্রিয়ভাজন এস আই আমিনুল।

মামলায় এক মাত্র চিহ্নীত মাহবুবুল আলম মনিকে আসামী করে মামলা করা হলেও পুলিশ তাকে বাদ দিয়ে আজ্ঞাত আসামী সনাক্ত করে চার্জশীট দেন। চার্জশীট দাখিলের পরে তিনি শেরপুর জেলায় বদলী হন, ফের বদলী হয়ে বর্তমানে মুক্তাগায় কর্মরত আছেন। এ ব্যপারে ডাক্তার সালেকিন মামুন জানান, এরপরও কি আইনের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধাবোধ থাকতে পারে?


মুক্তাগাছা মাহবুবুল আলম মনির সন্ত্রাসী বাহিনীতে সদস্য সংখা ৩৫/৪০ জন। এরা মনির কতিথ চেম্বারে বসে আড্ডা দেয়। এর পিছনে মনির দখল করা আরেক আস্তানা। সেখানে মাদক আর মনোরঞ্জন এর আড্ডা বসে। এরা প্রত্যেকেই বিপথগামী। মনি’র নেতৃত্বে ও নির্দেশে এদের হাতে নির্যাতিত হয়েছে, সিদ্দিকুজ্জামান সিদ্দিক (৫৮), বড়গ্রাম, মনজুরুল হক মঞ্জু (৫৫),কাশিমপুর , জাহাঙ্গীর আলম( ৪৫),তারাটি, কাজী আলমগীর হোসেন (৪৮)তারাটি, আমিনুল ইসলাম আমিন (৪৩)তারাটি, আবু বকর সিদ্দিক (৬০),তারাটি, আসাদুজ্জামান আসাদ (৩০), তারাটি, কৃষিবিদ এমদাদুল হক, (৩৮),কাশিমপুর, জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, তারাটি ভুট্টু( ৪৫), মজাটি, নওশেদ মেম্বার (৪৫), দাওগাও, নাহিদ (২০), মজাটি, জাহিদ বয়স (২২), নয়ন কুমার দে, জাহাঙ্গীর আলম আরো অনেকে। সন্ত্রাসী কতিথ যুবলীগের একাংশ যারা মন্ত্রীর গ্রুফ বলে পরিচিত এদের সন্ত্রাসে ক্ষুদ আওয়ামীলীগ খন্ড বিখন্ড হয়ে গেছে। স্থানীয় এমপি আশ্রয়ে এধরনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে স্থানীয় জনগন বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সভায় ও প্রতিবাদ সভায় অবাঞ্চিত ঘোষনা করেছে। মনিকে দু’দফা বহ্নিস্কার করে ময়মনসিংহ জেলা যুবলীগ।তারপরও তার আধিপত্য কমেনি।


মুক্তাগাছার নিপিড়িত নির্যাতিত মানুষগুলো কতটাই ন্যায় বিচার পাবে? এই সন্ত্রাসী চক্রের রোষানলে পড়ে গত ৫ বছরে ৬ জন পুলিশ পরিদর্শকের বদলী হয়েছে। তাদের মধ্যে চৌকশ পুলিশ অফিসার আলীম মাহমুদ, বিপ্লব কুমার, আলী আহম্মেদ, দুলাল আকন্দ, মাহমুদুল হাসান উল্লেখ যোগ্য। বর্তমানে মুক্তাগাছা থানায় কর্মরত আছেন টাংগাইল জেলার আব্দুল মজিদ। অপর দিকে মুক্তাগাছার মেয়র বিল্লাল হোসেনের শশুর বাড়ি টাংগাইলে। চমৎকার যোগসুত্রে ওসি আব্দুল মজিদ মুক্তাগাছায় টিকে গেলেন অনেকটা সময়! আর দু’দফা সন্ত্রাসীদের সন্ত্রাসের শিকার হলেন যুবলীগ নেতা আসাদ। গত ২৮ আগষ্ট সন্ত্রাসীদের আক্রমনের শিকার আসাদের ঐদিনই মৃত্যু হয়।


এব্যপারে স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই জানান, জামাত, রাজাকার সমাজ ব্যবস্থা চাইনা। এজন্য যুদ্ধ করিনি। উপজেলা চেয়ারম্যান অনুষ্ঠানে দাওয়াত পায়না সেখানে খুনের আসামীকে দিয়ে পুলিশ পুজার আইন শৃংলার মিটিং করে। এমন পুলিশের প্রত্যাহার চাই।


মুক্তাগাছার সনাতন ধর্মের নেতা দেবাশীষ বাপ্পী জানান, খুনের মামলার আসামীর কথায় সনাতন ধর্মের নিয়মনীতি চলেনা। মায়ের পুজা শুরু বা বির্সজন করার বিষয়ে কোন সন্ত্রাসীর কথায় চলবেনা। তা ধর্মীয় রিতিনীতিতেই চলবে।


আরো পড়ুন