• রবিবার, ০১ অক্টোবর ২০২৩, ০৪:১৫ পূর্বাহ্ন

মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্রকে শারীরিক নির্যাতন করে নৃশংসভাবে হত্যায গ্রেফতার ০১

/ ৪৬ বার পঠিত
আপডেট: মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

নিহত ভিকটিম শাবিব শাইয়ান (১১) চট্টগ্রামের চকবাজার থানাধীন মেহেদীবাগস্থ একটি মাদ্রসার হেফ্জ বিভাগের ছাত্র। প্রতিদিনের ন্যায় গত ১৩ মার্চ ২০২৩ ইং তারিখ সকাল ০৬.০০ যমিনিটের সময়ে ভিকটিম শাবিব শাইয়ান’কে তার বাবা মশিউর রহমান চৌধুরী বাসা থেকে মাদ্রাসায় দিয়ে আসেন। পরবর্তীতে রাত আনুমানিক ০৯.০০ ঘটিকায় ছেলেকে মাদ্রাসা থেকে বাসায় নিয়ে যাওয়ার জন্য মাদ্রাসার গেইটের সামনে উপস্থিত হলে মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মোঃ ফোরকান মোবাইল ফোনে জানায় তার ছেলে মাদ্রাসার ৪র্থ তলায় অবস্থিত বাথরুমে গিয়েছে। বাথরুম থেকে ফিরতে দেরি হওয়ায় মাদ্রাসার অন্যান্য শিশু শিক্ষার্থীরা ভিকটিম শাবিব শাইয়ান’কে অনেক ডাকাডাকি করে কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে মাদ্রাসায় উপস্থিত শিক্ষকদেরকে জানালে শিক্ষক রিদুয়ানুল হক শিক্ষার্থীদের নিয়ে বাথরুমের দরজা ভেঙ্গে দেখতে পান ভিকটিম শাবিব শাইয়ান তার পরিহিত প্যান্টের বেল্ট গলায় দিয়ে বাথরুমের টাওয়াল স্ট্যান্ড এর সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে।

তখন শিক্ষার্থীরা ভিকটিম শাবিব শাইয়ানের মুমূর্ষ অবস্থার কথা তার বাবা মশিউর রহমান চৌধুরীকে জানায়। খবর পেয়ে মশিউর রহমান চৌধুরী দ্রুত মাদ্রাসার ৪র্থ তলায় ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষক রিদুয়ানুল হক ও অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সহযোগীতায় ভিকটিম শাবিব শাইয়ান’কে ঝুলন্ত অবস্থা হতে উদ্ধার করে নিকটস্থ মাক্স হাসপাতাল নিয়ে যায়। হাসপাতালে ডাক্তারী পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশু ভিকটিম শাবিব শাইয়ান’কে মৃত ঘোষণা করেন। উক্ত নৃশংস হত্যাকান্ডটি চট্টগ্রামসহ সারাদেশের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।

উক্ত নির্মম ও নৃশংস হত্যার ঘটনায় গত ১৬ মার্চ ২০২৩ ইং তারিখ নিহত ভিকটিমের পিতা মশিউর রহমান চৌধুরী বাদী হয়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর চকবাজার থানায় ৩ জনকে এজাহার নামীয় আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।  যার মামলার নং-০৮, তারিখ ১৬ মার্চ ২০২৩ ইং ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০।

মামলা রুজু হওয়ার পর চট্টগ্রাম জেলার চকবাজার থানা পুলিশ কর্তৃক ঘটনার সাথে জড়িত ০২ জনকে আসামী’কে আটক করলেও উক্ত হত্যার সাথে জড়িত প্রধান আসামী এবং হত্যার রহস্য উদঘাটনের জন্য র‍্যাব-৭, চট্টগ্রাম ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারী ও ছায়া তদন্ত অব্যাহত রাখে। এরই ধারাবাহিকতায় র‍্যাব-৭, চট্টগ্রাম বিশেষ গোয়েন্দা সূত্রে জানতে পারে যে, বর্ণিত নির্মম ও নৃশংস হত্যা মামলার এজাহার নামীয় প্রধান আসামী রিদুয়ানুল হক কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানাধীন বমুবিলছড়ি এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৮ সেপ্টেম্বর   ২০২৩ ইং তারিখ র‍্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামী রিদুয়ানুল হক (৩২), পিতা- বদিউল আলম, সাং-পূর্ব চরণদ্বীপ, থানা-চকরিয়া, জেলা-চট্টগ্রাম’কে আটক করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে সে অকপটে স্বীকার করে যে, উক্ত হত্যাকান্ডের সাথে সরাসির জড়িত।

উল্লেখ্য, বর্ণিত হত্যাকান্ডের ঘটনাটি প্রাথমিক পর্যায়ে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ আত্মহত্যা বলে দাবি করলেও পরবর্তীতে লাশের ময়না তদন্তে নিহত ভিকটিমের শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের প্রমান পাওয়া যায় এবং অনৈতিকভাবে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের আলামত পাওয়া যায়। গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে


আরো পড়ুন