• রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৪:০৭ পূর্বাহ্ন

টেন্ডারবাজ রিফাত বাহিনীর নিকট জিম্মি বিজিবির জব্দকৃত চিনি নিলামে ক্রয়কারীগন

/ ১২০ বার পঠিত
আপডেট: শনিবার, ৮ জুলাই, ২০২৩

এম কে নুর আলম:-
ভারতীয় আমদানি নিষিদ্ধ চিনি বিজিবির অভিযানে আটকের পর তা সরকারের বিধিবিধান মেনে দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে নিলামে বিক্রয় করা হয়ে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার (৭ জুলাই) কুমিল্লা কোটবাড়ি ১০ বিজিবির প্রধান কার্যালয়ে কাস্টমসের মাধ্যমে দরপত্রের নিলামডাকের ব্যবস্থা করা হয়।

নিলামে অংশগ্রহণের জন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে পকৃত ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান আসলে বিজিবির প্রধান ফটক (৪নং গেইট) প্রবেশের আগেই স্থানীয় সাবেক কাউন্সিলর ফজল খানের ভাতিজা রিফাত পরিচয়ে তার সঙ্গীয় ১৫/২০ জনের একটি বাহিনী চিনি ক্রয় থেকে বিরত থেকে এলাকা ত্যাগের নির্দেশ দেন। এসময় রিফাতসহ তার সাঙ্গপাঙ্গরা চিনি ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান প্রধানদের হুমকি দিয়ে বলেন “বিজিবির সাথে আমরা আগেই কথা বলে রেখেছি! এই চিনি আমরা ছাড়া অন্য কোথাও বিক্রি করতে দেয়া হবে না। এখানে কেউ চিনি ক্রয়ে বেশি আগ্রহী হলে বাড়ি না, হাসপাতাল যেতে হবে।

তাদের বাঁধা উপেক্ষা করে ভিতরে প্রবেশ করে নিলাম পক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে চাইলে রিফাত বাহিনীর সদস্যরা নিলামে অংশগ্রহণকারী মিঠু মিয়া সহ ২০/২৫ জনকে ঘিরে ফেলেন এবং হুমকি দিয়ে বলেন, আপনারা এখানে চিনির কোনো দাম করবেন না। যদি দাম বলেন তাহলে বিজিবি অফিস থেকে বের হয়ে হেটে বাড়ি যেতে পারবেন না, হাত পা ভেঙে সোজা হাসপাতাল পাঠানো হবে।

রিফাত তার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বার চিনি ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান প্রধানদের দিয়ে বলেন চিনি লাগলে ফোন দিয়েন আপনারা সরাসরি বিজিবি থেকে চিনি নিতে পারবেন না। নিতে হলে আমাদের থেকে নিতে হবে। এমন হুমকির মুখে চিনি ক্রয়কারীগন কথা না বাড়িয়ে জীবনের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

এসময় নিলামে অংশ গ্রহণকারী সদস্যরা বিষয়টি কাস্টমস কর্মকর্তাদের ও বিজিবি সদস্যদের জানান। গেইটে দায়িত্বরত বিজিবি সদস্যদের হুমকির বিষয়টি জানালে তারা (বিজিবি) উর্ধতন কর্মকর্তাদের জানানোর পরামর্শ দেন।

সূত্র জানান, ১১৪ বস্তায় ৭ টন চিনি ১২০ টাকা ধরে কিনতে আগ্রহী ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান। এদিকে রিফাত বিশেষ ব্যক্তির ইশারায় ১৭ টাকা ৫০ পয়সা ধরে এই চিনি ক্রয় করেন।

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানান, রিফাত সিন্ডিকেট সীমান্তের চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করছে। বিজিবির চিনি নিলামে কিনে, এই কাগজ দেখিয়ে অবাধে ভারতের অবৈধ আমদানি নিষিদ্ধ পন্য বাংলাদেশে নিয়ে আসেন।

রিফাত এলাকার বকে যাওয়া যুবকদের নিয়ে একটি সিন্ডিকেট করে বার্ড ও কোটবাড়ির টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ ছাড়াও বিভিন্ন অপরাধ মূলক কর্মকান্ডে জড়িত থাকলেও তার বাহিনির ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না। স্থানীয় সূত্র জানান, রিফাতের চাচাতো ভাই কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেন।

এই বিষয়ে অভিযুক্ত রিফাতের কাছে জানতে চাইলে সে এই প্রতিবেদককে গালমন্দসহ দেখে নেয়ার হুমকি দেন। সাবেক কাউন্সিলর মো: ফজল খানের কাছে রিফাতের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার কিছু হয় না। মোবাইল নাম্বার টা দেন আমি দেখছি বিষয়টা।

২৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মহিবুর রহমান তুহিন বলেন, এরা এলাকার পোলাপাইন চিনি টেন্ডার নিয়ে ব্যবসা করে। সংবাদ করার দরকার নেই।
কুমিল্লা ১০ বিজিবি সেক্টর কমান্ডার কর্নেল আবুল কালাম শাহাবুদ্দিন রানা বলেন, যখন বাধা দিয়েছিলো তখন ফোন দিলেন না কেনো? এখন নিলাম শেষ, ঠিক আছে আমি বিষয়টি দেখতেছি।


আরো পড়ুন