• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৫৬ অপরাহ্ন

লক্ষ্মীপুরে সদরে ৮০ বছর ধরে জল্লাদের খেয়ায় পারাপার হচ্ছে মানুষ!

অ আ আবীর আকাশ,লক্ষ্মীপুর / ৩২১ বার পঠিত
আপডেট: বুধবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০২১

৮০ বছর ধরে খেয়া পারাপার হচ্ছে তিন অঞ্চলের মানুষজন। নূর হোসেন নামের এই বৃদ্ধলোক ১৫ বছর ধরে এ অঞ্চলের মানুষ জন পার করছেন।শুধু মানুষ নয় একই সাথে পার করছেন মোটরসাইকেল, রিক্সা, বাইসাইকেলসহ নানা সবজি বোঝাও।
প্রতি খন্দে বা মৌসুমে খেয়া-পারাপার বাবদ নূর হোসেনকে নিকটবর্তী স্থানীয়রা নির্দিষ্ট করে বা ঘরের লোক অনুপাতে হার করে ধান বা সমপর্যায়ের অন্য যে কোন ফসল অথবা টাকা দিয়ে থাকেন। দূরবর্তী স্থানীয়রা গন্তব্য অনুযায়ী নগদ টাকা পরিশোধ করে পার হন।
‘জল্লাদের খেয়া’ নামে অধিক পরিচিত। এলজিইডি কর্মকর্তা নিজেই এ নামে চেনেন বলে জানালেন। জল্লাদের খেয়া কেন নামকরণ করা হয়েছে তা যৎসামান্য জানা গেল। তবে বিশদভাবে কেউ কিছু বলতে পারবেন না। জল্লাদের খেয়া বলতে একসময় এখানে জল্লাদেরা মানুষকে ধরত, মানে ডাকাতেরা স্থানীয় মানুষকে ধরে সর্বশান্ত করে সব নিয়ে যেতো। কেউ যদি জোর করতে চাইতো তবে তাকে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করতো। তাদের কাছে এই জন্য এরা জল্লাদের খেয়া নামেই পরিচিত।
লক্ষ্মীপুর জেলা সদরের ২১ নং টুমচর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডে এই জল্লাদের খেয়া। প্রথমে আমরাও দুইটি মটরবাইক নিয়ে দ্বিধায় পড়ে গেলাম। পরে ওপার থেকে যাত্রী বোঝাই করে আসা খেয়া ঘাটের মাঝি অভয় দিলেন এবং খুব সতর্কতার সাথে ওপারে খাড়া ঢাল থাকা সত্ত্বেও নিরাপদে পৌঁছে দিলেন।
কলেজছাত্র রাকিব হোসেন জানালেন তার জীবনের প্রভাব ফেলা এই খেয়া-পারাপার টির কথা। ছোটবেলায় স্কুলে যাওয়ার সময় সে নিজে কয়েকবার পা পিছলে খেয়া থেকে পানিতে পড়ে যায়। নিদিষ্ট সময়ের এক দেড় ঘণ্টা আগে তাকে বাড়ি থেকে রওনা দিতে হয়। এ খেয়া পার হতে গিয়ে দুইজন স্কুলের শিশু বাচ্চাও মারা গেছে নদীতে পড়ে।
জন্মের পর থেকে খেয়া পার হওয়া রহিম উদ্দিন বলেন- কী কমু বাপু! এই খেয়া পার হয়েই এই জীবন পার হয়ে গেল। বাপ-দাদা এ খেয়াতে পার হয়েছেন, আমিও পার হয়েছি। আমার নাতি পুতিরাও এই খেয়াতে পার হচ্ছে। আর ব্রীজের দেখা পাবো বলে মনে হয়না। ব্রিজ তো আমাদের জন্য স্বপ্ন।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য প্রার্থী বেল্লাল হোসেন বলেন-বহু চেষ্টা করেছি একটা ব্রিজের জন্য। কতবার ইঞ্জিনিয়াররা এলো গেলো, মাপজোক হলো, আদতে কাজের কাজ কিছুই হল না। এরকম বহু বার হয়েছে, সয়েল টেস্ট সম্পন্ন হয়েছে। কই ব্রীজ তো হল না।
এলজিইডির দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র সহকারী ইঞ্জিনিয়ার ফখরুল ইসলাম বলেন -সয়েল টেস্ট ও মাপ নেয়াসহ প্রোফাইল তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠানো হয়েছে। পাশ হয়ে এলে আশা করছি শিগগিরই ব্রিজের কাজ শুরু হবে।


আরো পড়ুন