• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:১৩ অপরাহ্ন

লক্ষ্মীপুরে ঘরে ঢুকে হামলা! স্কুল ছাত্রীসহ আহত ৪

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি / ৪৮৯ বার পঠিত
আপডেট: বুধবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২০

জমিজমা বিরোধের জের ধরে লক্ষীপুরের চন্দ্রগঞ্জে ঘরে ঢুকে এক স্কুলছাত্রীসহ ৪ জনকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করার খবর পাওয়া গেছে।

থানায় দায়েরকৃত এজাহার ও ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে জানা গেছে- ছমি হাজি বাড়ীর মৃত ছিদ্দিক উল্লাহ দুই ছেলে ৪ মেয়ে। আব্দুর রহিম দীর্ঘদিন ধরে এক ভাই আবদুল মান্নান ও অপরাপর বোনদের সম্পত্তি জবর দখল করে আসছিল। শুধু তাই নয় আব্দুল মান্নানের খরিদকৃত সম্পত্তি সাড়ে ৫ একরও জোরপূর্বক ভোগ দখল করে।

আব্দুল মান্নানের মালিকীয় ২৩ শতাংশ জমিতে দীর্ঘদিন ধরে কচু চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল। এই ২৩ শতাংশ জমিতে আব্দুর রহিম জোরপূর্বক ধানের বীজ ছিটিয়ে দখলের চেষ্টা চালালে আব্দুল মান্নান বাধা দেয়। এতে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে আব্দুর রহিম তার স্ত্রী আয়েশা বেগম রোববার সন্ধ্যার পরে আব্দুল মান্নানের বসত ঘরে ঢুকে হামলা চালায়। এ সময় আয়েশা আক্তার ও আবদুর রহিমের হাতে থাকা ধারালো দায়ের কোপে আব্দুল মান্নান ও তার স্ত্রী আয়েশা বেগম, স্কুলপড়ুয়া কন্যা ফাতেমা আফরিন মোহনা রক্তাক্ত জখম হয়। শুধু তাই নয় পাঁচ বছরের ছোট্ট শিশু জান্নাতুল পিয়াকেও রহিমের ছেলে জিহাদ মারধর করে বলে ছোট্ট প্রিয়া অভিযোগ করে।

জানা গেছে আব্দুর রহিম ও তার স্ত্রী আয়েশা আক্তার মান্না যখন-তখন যাকে-তাকে মারধর করতে উদ্যত হয়। আইনের তোয়াক্কা না করে ধারালো দা ছেনি কিবা লোহার রড হাতে তেড়ে আসে যাকে তাকে মারার জন্য। এক্ষেত্রে আব্দুর রহিম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে তার স্ত্রী আয়েশা আক্তার মান্নাকে। মান্না অকথ্য ও অবর্ণনীয় ভাষায় যার তার দিকে তেড়ে আসে বলে ভুক্তভোগী পরিবার জানায়।

তারা আরো জানায় আব্দুর রহিম দীর্ঘদিন ধরে আব্দুল মান্নানের খরিদকৃত সম্পত্তি জবর দখল করে আসছে। শুধু তাই নয় অপরাপর চার বোনের পৈত্রিক সম্পত্তিও আব্দুর রহিম ভোগ দখল করছে। বোনদের কেউ এলে আব্দুর রহিম তাদের তাড়িয়ে দেয় বলে জানায়।

আব্দুল মান্নান ঘর থেকে বের যেন না হতে পারে সেজন্য দরজা লক করে দেয়াসহ রান্নাঘর করার জন্য জায়গাটুকুও দিচ্ছে না বলে আব্দুর রহিম জানায়।

আব্দুল মান্নানের খরিদকৃত সম্পত্তির মধ্যে আব্দুর রহিম থেকে ১০০৪০ দলিল মূলে এক একর ৬৫ শতাংশ, বোন লাকি আক্তারের থেকে ৪৭০১ দলিল মূলে ৩২শতাংশ, ও ৪৭০২ দলিল মূলে ৩১ শতাংশ, চার বোন থেকে একত্রে ১২১৭৮ নং দলিল মূলে ৮১শতাংয়, আব্দুল মান্নানের বাবা সিদ্দিক উল্লার কাছ থেকে ০০৭নং দলিল মূলে ৬০শতাংশ, হরিপদ দের কাছ থেকে ৯৬০৮ দলিল মূলে সাড়ে ৭ শতাংশ, আসমত উল্লার কাছ থেকে ৪৫২৯ নং দলিল মূলে সোয়া ৫শতাংশ, ইসমাইল কাছ থেকে ৫৬৪৫ দলিল মূলে সাড়ে ৪ শতাংশ, মরণ চন্দ্র ঘোষের কাছ থেকে ৪৭২৯ দলিল মূলে ৬ শতাংশ,নেপাল চন্দ্র দের কাছ থেকে ৩৪০৩ দলিল মূলে সোয়া ৮ শতাংশ, জীবন চন্দ্র ঘোষের কাছ থেকে ৪২৯৯ দলিল মূলে সাড়ে ১১ শতাংশ, তনু মিয়ার কাছ থেকে ৭০৯ দলিল মূলে ৩ শতাংশ ও অন্যান্যদের কাছ থেকে ৭ শতাংশ জমি এককভাবে খরিদ করেন আবদুল মান্নান। এছাড়াও তাঁর পৈত্রিক সম্পত্তি ১একর সাড়ে ১২ শতাংশ সম্পূর্ণরূপে বেআইনিভাবে জবরদখল করে আসছে আব্দুর রহিম।

আব্দুল মান্নান জানায় কোনরুপ প্রতিকার করতে গেলে আব্দুর রহিম তার স্ত্রীর হাতে দা ছেনি দিয়ে এগিয়ে দেয় মারধোর করার জন্য। কেউ প্রতিবাদ প্রতিরোধ করতে যেন না পারে।
আব্দুর রহিম তার স্ত্রী আয়েশা আক্তার মান্নাকে দিয়ে নারী নির্যাতনের মিথ্যা মামলা দায়ের করে আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে। যা পরবর্তীতে আদালতে মিথ্যা প্রমাণিত হলে খারিজ হয়ে যায়। অভিযোগের ভিত্তিতে আরো জানা গেছে আব্দুর রহিম তার জন্মদাতা বাবা সিদ্দিকুল্লা ও গর্ভধারিনী মা মেহেরুন্নেসাকে মারধর করেন। এই নিয়ে মা বাদী হয়ে লক্ষ্মীপুর আদালতে আব্দুর রহিমের বিরুদ্ধে মামলা করেন। যার নং ২০৬/১০ তারিখঃ ২১/০৪/২০১০

আব্দুর রহিম ক্যাডার পোষাসহসহ একাধিক নারী কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে মোটা অংকের টাকাও জরিমানা দেন বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে আব্দুর রহিমের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

ঘটনার দিন আব্দুল মান্নানের বসত ঘরের ভেতরে আব্দুর রহিম তার স্ত্রী আয়েশা আক্তার মান্নাসহ অজ্ঞাত আরও ২/৩ জনকে সাথে নিয়ে ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। হামলায় আবদুর রহিমসহ তার স্ত্রী আয়েশা বেগম, স্কুলপড়ুয়া কন্যা ও পাঁচ বছরের শিশুকন্যা জান্নাতুল প্রিয়া আহত হয়। এদের উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে ভর্তি রেজি নং ৭০২৮/১৩, ৭০২৫/১৪, ৭০২৬/১৬, ৭০২৭/১৫, তারিখ ১৫/১১/২০২০.

এনিয়ে আব্দুল মান্নান তার জমি উদ্ধার পূর্বক তাদের মারধরের সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন প্রশাসনের কাছে।


আরো পড়ুন