• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১২:৫২ অপরাহ্ন

বানারীপাড়ায় সন্ধ্যা নদীতে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে এলজিইডির পিডি’র পরিদর্শন!

/ ২৩৬ বার পঠিত
আপডেট: সোমবার, ৯ নভেম্বর, ২০২০

কে.এম শফিকুল আলম জুয়েল, বানারীপাড়া প্রতিনিধি :- বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার মাঝ দিয়ে প্রবাহমান সন্ধ্যা নদীতে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. শাহে আলমের জাতীয় সংসদে সন্ধ্যা নদীতে সেতু নির্মাণের দাবীর প্রেক্ষিতে এ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এর প্রেক্ষিতে সেতু নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই করতে এলজিইডি’র প্রকল্প পরিচালক মো. এবাদত আলী সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন। ৯ নভেম্বর সোমবার দুপুরে তিনি পৌর শহরের ২ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ নাজিরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সম্মুখে সন্ধ্যা নদীর ওপরে সেতু নির্মাণের সম্ভাব্যতা এবং সম্ভাব্যস্থান পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি বলেন, এ স্থান থেকে সেতু নির্মাণ হলে সরকারের অনেক অর্থ সাশ্রয় হবে।কেননা এখানে তেমন ঘর-বসতি এবং বড় ধরনের কোন স্থাপনা নেই।

এতে করে সাধারণ মানুষ খুব একটা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না বরং সেতু নির্মিত হলে উপকৃত হবেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা প্রকৌশলী মো. হুমায়ুন কবির, ভাইস চেয়ারম্যান মো. নুরুল হুদা, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক এটিএম মোস্তফা সরদার, আওয়ামী লীগ নেতা ডা. খোরশেদ আলম সেলিম, পৌর শাখা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুব্রত লাল কুন্ডু প্রমুখ।প্রসঙ্গত সন্ধ্যা নদীতে সেতু নির্মিত হলে বরিশাল বিভাগের বেশ কয়েকটি জেলা ও উপজেলার সঙ্গে পিরোজপুর, কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ,খুলনা,বাগেরহাট, বেনাপোল, যশোর, ঝিনাইদহ ও কুষ্টিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন দ্বার উন্মোচন হবে। যার ফলে মৎস্য, কৃষিখাতসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারের পাশাপাশি আর্থসামাজিক উন্নয়ন ঘটবে।

বানারীপাড়া বন্দর বাজার ও সন্ধ্যা নদীর ওপর ভাসমান ধান-চালের হাটের ব্যবসার পাশাপাশি এ অঞ্চলের পোলট্রি ও মৎস্য ব্যবসা প্রসারতা লাভ করবে। সড়ক পথে এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হলে এ অঞ্চলের অনেক শিল্প কারখানা গড়ে উঠবে ।এছাড়া এ সেতুটি ব্যবহার করে এসব অঞ্চলের মানুষ টুঙ্গিপাড়ায় হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধীস্থলে খুব সহজেই যেতে পারবেন। উল্লেখ্য বানারীপাড়া উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫টি’ই সন্ধ্যা নদীর পশ্চিমপাড়ে এবং সেখানে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের কৃষির অপার সম্ভাবনা। সেতুটি হলে সেই সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হয়ে দেশের অর্থনীতিতে এই অঞ্চলের কৃষকরা অভূতপূর্ব সাড়া জাগাতে পারবেন।

এদিকে ১৯৬৫ সালে নদীর পশ্চিমপাড় বাইশারী ইউনিয়নের শিয়ালকাঠি হয়ে পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার সাথে সড়ক নির্মাণের যে রূপরেখা তৈরি হয়েছিলো সেটারও বাস্তবায়ন হবে। বরিশাল-২ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি এবং স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মো. শাহে আলম জাতীয় সংসদে সন্ধ্যা নদীর ওপরে সেতু নির্মাণের দাবী জানিয়েছিলেন।এলাকাবাসীর কাছে এটি ছিলো তার নির্বাচনী অঙ্গীকার। তার এ দাবীর প্রেক্ষিতে সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সম্ভাব্যবতা যাচাই করে সেতু নির্মাণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

এর আগে ২০১৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যা নদীতে সেতু নির্মাণের স্থান পরিদর্শন করেছিলেন সড়ক ও জনপদ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও দাতা সংস্থার প্রতিনিধি দল। তারা বানারীপাড়া পৌর শহরের দক্ষিণ নাজিরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন সন্ধ্যা নদীর তীর ও নদী পরিদর্শন করে সেতু নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই করেন।তখন উপস্থিত ছিলেন সড়ক ও জনপদ বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শিশির কুমার রাউথ, নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম মোস্তফা,উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. ফিরোজ আজম খান, উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. জুয়েল ও দাতা সংস্থা ফ্রান্সের ২ জন এবং চায়নার ১ জন প্রতিনিধি।

তার আগে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রতিনিধি দল বানারীপাড়ায় এসে সরেজমিন পরিদর্শন করেন এবং তারা সন্ধ্যা নদীর কয়েকটি স্থানের মাটি পরীক্ষার জন্য সংগ্রহ করে নিয়ে যান।সন্ধ্যা নদীতে সেতু নির্মাণের প্রাথমিক উদ্যোগ হিসেবে নদীর দু’তীরের সড়ক যোগাযোগের উন্নয়নে ইতোমধ্যে নদীর পশ্চিম তীরে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা ব্যয়ে দান্ডয়াট-বিশারকান্দি সড়কের দুই পাশ বর্ধিতকরণসহ প্রশস্ত সড়ক ও অসংখ্য ব্রিজ কালভার্ট নির্মাণ করা হয়।এদিকে সন্ধ্যা নদীতে স্বপ্নের সেতু নির্মাণে উদ্যোগ নেওয়ায় বানারীপাড়াবাসী বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা,সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. শাহে আলমের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

কে.এম শফিকুল আলম জুয়েল
তারিখঃ 09-11-2020


আরো পড়ুন