• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৬:১৮ অপরাহ্ন

মাহবুবে আলমের মরদেহ হিমঘরে, জানাজা সকাল ১১ টায়

/ ৩৭৩ বার পঠিত
আপডেট: সোমবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০
মাহবুবে আলমের মরদেহ হিমঘরে, জানাজা সকাল ১১ টায়
মাহবুবে আলমের মরদেহ হিমঘরে, জানাজা সকাল ১১ টায়

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের মরদেহ হিমঘরে রাখা হয়েছে। আগামীকাল সকাল সাতটায় মরদেহ নিজ বাসায় নেওয়া হবে। এরপর সকাল ১১টায় সুপ্রীম কোর্টে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আরও শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। শোক জানিয়েছেন বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ।

শোক প্রকাশ করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ, পরিবেশমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, মৎস্য ও প্রাণী সম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন, পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান, বিজ্ঞান ও প্রযু্ক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ।

রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা (অ্যাটর্নি জেনারেল) মাহবুবে আলম ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার সন্ধ্যা ৭ টা ২৫ মিনিটে মারা যান।

মৃত্যুকালে মাহবুবে আলমের বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েকে রেখে গেছেন।

গত ৪ সেপ্টেম্বর সকালে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের জ্বর আসায় চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়। সেখানে পরীক্ষার পর তার কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়। তবে পরবর্তী করোনামুক্ত হলেও শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে অ্যাটর্নি জেনারেলকে সিএমএইচ এর আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি আজ মারা গেলেন।

মাহবুবে আলম ১৯৪৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মৌছামান্দ্রা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৮ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স ও ১৯৬৯ সালে লোক প্রশাসনে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন।এরপর ১৯৭২ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন মাহবুবে আলম। ১৯৭৩ সালে তিনি বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে তালিকাভূক্ত হয়ে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য হন।

পরে ১৯৭৫ সালে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে এবং ১৯৮০ সালে আপিল বিভাগে আইনপেশা পরিচালনার অনুমতি পান তিনি। এরপর ১৯৯৮ সালে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন মাহবুবে আলম। এছাড়া তিনি ১৯৭৯ সালে ভারতের নয়াদিল্লির ‘ইনস্টিটিউট অব কনস্টিটিশনাল অ্যান্ড পার্লামেন্টারি ষ্ট্রাডিজ’ থেকে সাংবিধানিক আইন ও সংসদীয় প্রতিষ্ঠান ও পদ্ধতি বিষয়ে ডিপ্লোমা ডিগ্রি অর্জন করেন।

১৯৯৮ সালের ১৫ নভেম্বর থেকে ২০০১ সালের ৪ অক্টোবর পর্যন্ত রাষ্ট্রের অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মাহবুবে আলম। এরমধ্যে ১৯৯৩-৯৪ সালে তিনি দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবীদের সংগঠন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরে ২০০৫-২০০৬ মেয়াদে তিনি আইনজীবী সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন।

২০০৯ সালের ১৩ জানুয়ারি মাহবুবে আলম রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা (অ্যাটর্নি জেনারেল) হিসেবে নিয়োগ পান। এরপর থেকে টানা ১১ বছর ধরে তিনি এই দায়িত্ব পালন করছেন। সেই সাথে পদাধিকার বলে তিনি আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের মামলায় আইনজীবী হিসেবে যুক্ত থাকা মাহবুবে আলম সংবিধানের ৫ম, ৭ম, ১৩তম ও ষোড়শ সংশোধনীর মামলা রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইনজীবী ছিলেন। এছাড়া তিনি বিডিআর বিদ্রোহ হত্যা মামলাসহ সর্বোচ্চ আদালতে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা পরিচালনা করেন।

ভ্রমণপ্রিয় ও রবীন্দ্র ভক্ত হিসেবে পরিচিত মাহবুবে আলম দেশে ও দেশের বাইরে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সেমিনার-সিম্পোজিয়ামে অংশগ্রহণ করেন। এরই অংশ হিসেবে তিনি ভারত, শ্রীলঙ্কা, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, মিশর, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, হংকং, কোরিয়া ও তানজানিয়াসহ বিশ্বের অনেক দেশ সফর করেছেন।


আরো পড়ুন