খোলা চিঠি – মু. আরিফুজ্জামান
আহবায়কঃ নাথেরপেটুয়া উপজেলা বাস্তবায়ন পরিষদ।
প্রতি,
জনাব জাকির হোসাইন
চেয়ারম্যান
মনোহরগন্জ উপজেলা
কুমিল্লা।
আসসালামু আলাইকুম। আশা করি পূর্বের তুলনায় অনেক বেশী ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ। দীর্ঘদিন পরে হলেও এই এলাকা থেকে কেউ একজন প্রশাসনিক প্রতিনিধি হয়েছেন। আশা রাখি যে এর ফল এ অঞ্চলের জনগনের জন্যে ভালো হবে।
আমাকে আপনি হয়তো চিনবেন না। আর চেনার কথাও না। আমি নগন্য মু আরিফুজ্জামান কে চিনতে হবে এতোটা গুরুত্বপূর্ণ কেউ নই আমি। তবে মনোহরগন্জ উপজেলার একজন সাধারন, সচেতন এবং শিক্ষিত জন আমি।
আমার মতে রাজনীতির গতানুগতিক মানে হলো
” জনগনের জন্যে সুনীতির চর্চা ।”
আমরা আপনাকে নিয়ে আশাবাদী। আমরা আশা করি আপনি প্রশাসনিক প্রতিনিধির পাশাপাশি জনগনের প্রতিনিধিতেও পরিনত হবেন।আপনার ব্যাক্তি যোগ্যতার বলে মনোহরগন্জ উপজেলার জনগনের মনের গহীনে এমনভাবে স্থান করে নিবেন যাতে করে আপনি শুধু আওয়ামিলীগের “ডোনার জনাব জাকির হোসেন” থেকে দলমত নির্বিশেষে আমাদের সাধারন জনগনের ” জাকির ভাই ” এ পরিনত হবেন। আপনার বিরোধী মতের লোকজনও যাতে আপনার ব্যাক্তি জনপ্রিয়তায় মুগ্ধ হয়ে ” আমার ভাই তোমার ভাই- জাকির ভাই জাকির ভাই ” শ্লোগান ধরতে দ্বিধাবোধ না করে।
আপনার প্রতি আমি চারটি মৌলিক দাবী পেশ করছি এবং যদি কোন ভুল না হয় তাহলে এগুলো আমার মতো বাকী সকল সাধারন জনগনেরও মৌলিক এবং প্রানের দাবী।
১ঃ- উপজেলার প্রতিটি সড়ক পর্যায়ক্রমে চলাচল উপযোগী করা। সড়কগুলোর দশা এতোটাই বেহাল যে একটু বৃষ্টি হলেই ভদ্রতা বজায় রেখে চলা শুধু কঠিনই নয় অসম্ভবও বটে।আর শীত ও গরমের দিনে বালুর বিষয়টাও ভয়ানক বিরক্তিকর। সড়কের নাজুক এই অবস্থাটা গরীব অটোরিকশা চালক, রিক্সাওয়াল , সিএনজিচালিত গাড়ীওয়ালাদের জন্যেও বিষফোঁড়ার মতো। সারাদিনের মাথার ঘাম পায়ে ফেলে উপার্জন করা টাকাটা গ্যারজগুলোতে দিয়ে আসতে হয় তাদের। তাদের ঘরের স্ত্রী পুত্র কন্যারা মাস শেষে একটা সুন্দর ড্রেসের আবদার করতেও ভয় পায় আয়ের কারনে।আর যাত্রীর দুর্ভোগ তো চরমে গিয়ে ঠেকে।রোগী হলেতো কি অবস্থা হয় সেটা আপনি বুঝেন বলেই আমার বিশ্বাস।
২ঃ-মনোহরগন্জ উপজেলাকে গ্যাস সংযোগ এর আওতায় নিয়ে আসা। জনগুরুত্বপূর্ণ এ কাজটি আপনার হাত ধরেই সম্পাদন হবে আশা করি। এই বিষয়টা কতোটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা আপনি হয়তো এতোদিনে আঁচ করতে পেরেছেন।মরহুম হাসেম সাহেব এ নিয়ে জনাব তাজুল ইসলাম এমপির সাথে কয়েকবার কথা বলেছিলেন বলে আমরা লোকমুখে শুনেছি। আর আশা করি আপনি এ অঞ্চলের জনগনের এ শুণ্যতার পূর্ণতা ঘটাবেন।
৩ঃ- সর্বশেষ এবং কঠিন যে দাবীটি আপনার নিকট পেশ করবো তা হলো এ এলাকায় রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আপনার সর্বোচ্চ উদারতা এবং দলীয় পরিমন্ডলে সর্বোচ্চ কঠোরতা আশা করছি।
এক্ষেত্রে আপনি মরহুম চেয়ারম্যান তাহের ভাই এর মতো উদার হবেন এবং উত্তর হাওলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিরন মামার মতো কৌশলী হবেন এমনটাই কামনা। মরহুম তাহের কোম্পানি ভাই দলমত ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবার নিকট জনবান্ধব বলে যে জনপ্রিয়তা পেয়েছে তা তাঁকে আজীবন এ এলাকায় স্মরনীয় করে রাখবে৷ আর চেয়ারম্যান হিরন মামা তার নির্বাচনী এলাকায় দলমত নির্বিশেষে সবার জন্যে যেভাবে মাথার উপর ছায়া হয়ে আছেন তা তাঁকে অন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে। তার এলাকায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বিষয়টা তিনি খুব সযত্নে এবং কৌশলে বন্ধ রাখতে সফল হয়েছেন। তার এলাকার ভিন্নমতের অনেকের সাথেই আমার কথা হয়েছে তারা একটি বিষয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছে যে হিরন মামার এলাকায় খুব সহজে তার দলীয় লোকজন বা কোন সন্ত্রাসী বা পুলিশি অহেতুক রাজনৈতিক হয়রানী করতে সাহস পায় না।মনোহরগন্জ উপজেলাকে সামগ্রিক ভাবে পুলিশি বা রাজনৈতিক এ হয়রানী থেকে মুক্তির ঘোষণা দিবেন এবং দলীয় পরিমন্ডল সহ সকল রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের নিকট প্রিয়, জনদরদী এবং জনবান্ধব ” জাকির ভাই”য়ে পরিনত হবেন।
৪ঃ- আর সর্বশেষ ও চতুর্থ দাবীটি হলো নাথেরপেটুয়া উপজেলা বাস্তবায়নের দাবী। এটি এ অঞ্চলের আপামর জনতার দীর্ঘদিনের দাবী। এক্ষেত্রে আপনি সমাজের সম্মানীত সকলের সাথে সমন্বয়পূর্বক মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের কাছে আমাদের এ দাবী তুলে ধরবেন।
আমরা জানি পুলিশের সাথে জনপ্রশাসন বা জনপ্রতিনিধিদের কিছুটা দূরত্ব আছে । আমরা সাধারন জনগন চাইবো আপনি এ অঞ্চলে জনপ্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের মধ্যে “গুড আন্ডারস্ট্যান্ডিং” সৃষ্টিতে অগ্রণী ভুমিকা রাখবেন।
যাইহোক অনেক লম্বা চিঠি লিখলাম। ভালো থাকবেন। আর অপেক্ষায় রইলাম সেই দিনের জন্যে যেদিন আপনার কর্ম সফলতায় মুগ্ধ হয়ে জনগন আপনাকে অন্তর থেকে প্রাণঢালা ” অভিনন্দন ” জানাবে।
ইতি
মু আরিফুজ্জামান।
আহবায়কঃ- নাথেরপেটুয়া উপজেলা বাস্তবায়ন পরিষদ।