• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৩৪ অপরাহ্ন

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ

/ ২৮২ বার পঠিত
আপডেট: বৃহস্পতিবার, ২০ আগস্ট, ২০২০
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ

লালমনিরহাটের কালিগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যানকে ছাত্রলীগ সভাপতির প্রাণনাশের হুমকির ঘটনায় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। ঘটছে সংঘর্ষের ঘটনাও। এদিকে ছাত্রলীগ সভাপতির পদত্যাগের দাবিতে ছাত্রলীগের অপর একটি গ্রুপ মাঠে নেমেছে। জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠিক সাজিদ মাহবুব জানান, ছাত্রলীগ সভাপতি হারুন দীর্ঘ ১১ বছর থেকে নিয়মবর্হিতভাবে পুর্নাঙ্গ কমিটি না করেই পদে আছেন, নানা অপকর্মেও জড়িয়ে আছেন তারা। ছাত্রলীগ করে তিনি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় তার পদত্যাগ ও বহিষ্কারের দাবিতে শনিবার থেকে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসুচি পালন করবে ত্যাগী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এদিকে গত তিনদিনে দু’দফা সংঘর্ষের ঘটনায় ৬ নেতাকর্মী আহত হয়েছে।

এ ঘটনায় ছাত্রলীগ সভাপতি হারুনসহ ৪জন কে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন সমাজকল্যান মন্ত্রীর ছোটভাই জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কালীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান মাহাবুবুজ্জামান আহম্মেদ। ১৫ আগষ্টের একটি অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগ  সভাপতি হারুন-উর রশিদকে আমন্ত্রণ না জানানোকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে গোটা উপজেলায়। ঘটে সংঘর্ষের ঘটনা। এই সংঘর্ষ এবং অসৌজন্যমূলক আচরণের ঘটনায় এই মামলা হয়।
মামলার এজাহার সুত্রে জানা গেছে, গত ১৫ আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে স্থানীয় বিডিএম নামের একটি ছাত্র সংগঠন দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে। সেখানে ছাত্রলীগের সভাপতি হারুন-অর রশিদকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এ নিয়ে আয়োজকদের সাথে হারুনের মোবাইল ফোনে ঝগড়া হয়। পরবর্তীতে বিষয়টি উপজেলা চেয়ারম্যান পর্যন্ত গড়ালে তাকেও মোবাইল ফোনে প্রাণনাশের হুমকি দেন হারুন। পরবর্তীতে এ ঘটনা জানতে পেরে উপজেলা চেয়ারম্যানের বড় ছেলে ও স্ত্রী সাজেদা রহমান হারুনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে বিষয়টি জানতে চাইলে তাদের উপর চড়াও হন হারুন ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। এসময়  জাকির হোসেন নামে একজনকে কুপিয়ে যখম সহ অন্তত চার জন নেতা-কর্মীকে আহত করেছেন সভাপতি হারুন ও তার সঙ্গে থাকা বহিরাগত সন্ত্রাসীরা। গুরুতর আহত জাকির হোসেন কে (২৩) কালীগঞ্জ উপজেলা সাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায়  কালীগঞ্জ বাজার রণক্ষেত্রে পরিনত হয়। বিক্ষোভে ফেটে পড়ে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা। সংঘাতময় পরিস্থিতি এড়াতে আইনের আশ্রয় নেন উপজেলা চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ। এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে উপজেলা চেয়ারম্যান মাহাবুবুজ্জামান আহম্মেদ বাদি হয়ে কালীগঞ্জ থানায় ছাত্রলীগ সভাপতি হারুন-উর রশিদ (৪২) সহ ৪জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা করেন। মামলা নং-১১।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে কালিগঞ্জ বাজারে বিক্ষুব্ধ জনতা, নেতা-কর্মীরা, ছাত্রলীগের কালীগঞ্জ উপজেলা সভাপতি হারুন উর রশিদ (৪২) এর বিরুদ্ধে শ্লোগান দিয়ে ও তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে। ছাত্রলীগ সভাপতি হারুনের অপকর্মের প্রতিবাদে নামে বঞ্চিত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। বৃহস্পতিবার সকালেও উপজেলার বিভিন্ন স্থানে উত্তেজনা দেখা দেয়। একাধিক স্থানে সংঘর্ষেরও ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে কালিগন্জ উপজেলা চেয়ারম্যান মাহাবুবুজ্জামান আহমেদ বাংলাদেশ প্রতিদিন কে বলেন, ছাত্রলীগ সভাপতির বেপরোয়া আচারনে উপজেলাবাসী অতিষ্ট, সে আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যকে প্রাননাশের হুমকি দেওয়ায় বিষয়টি নেতাকর্মীরা মেনে নিতে পারছেন না,উপজেলাবাসী অবিলম্ব হারুনের পদত্যাগ চায়। এছাড়া হারুন একটি সরকারী কলেজের প্রভাষক,১২ বছর ধরে নিয়মবর্হিতভাবে পদে আছে। তার সন্ত্রাসী আচারনে সাধারন নেতাকর্মী অতিষ্ঠ ও বঞ্চিত। তাই তার পদত্যাগ ছাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগ আর কিছু ভাবছে না। তবে ছাত্রলীগ সভাপতি হারুনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ সাজ্জাদ হোসেন বলেন,এটি তাদের নিজেদের কোন্দল,এ ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রয়েচে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে, আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।


আরো পড়ুন