নিজস্ব প্রতিনিধিঃ- কক্সবাজারের টেকনাফের বাহার ছড়ায় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যাকাণ্ড, সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফাকে নির্যাতনসহ অসংখ্য নিরীহ মানুষকে হত্যা ও নির্যাতন ইস্যুতে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেনের গ্রেফতার ও রিমান্ড দাবি করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কাবেরী।
সেইসঙ্গে তিনি আরো বলেন,শুধু ওসি প্রদীপের বিচার করলে হবে না,মূল দোষী এসপি মাসুদ হোসেনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও পূর্ব অপরাধের বিচার দাবিও করেছেন তিনি।
গত মঙ্গলবার (১১ আগষ্ট) বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম(বিএমএসএফ) ও সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি কক্সবাজার জেলা শাখা কর্তৃক আয়োজিত সাংবাদিকদের সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠণিক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কাবেরী এ দাবী করেন।
উক্ত,অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বিএমএসএফর প্রতিষ্টাতা ও কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আহমেদ আবু জাফর, তিনি তার বক্তব্যে সাংবাদিক
ফরিদুল মোস্তফার মুক্তির দাবীতে এবংং ওসি প্রদীপ কর্যৃক দাখিলকৃত ভূয়া মামলা সমূহ প্রত্যাহারের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা,স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী,পুলিশের আইজি সহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের মেসেজ দেওয়ার সভায় উপস্থিত কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠণিক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কাবীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, তিনি সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফার পরিবারকে বাঁচানোর হাত বাড়িয়ে দেন এবং এব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে, আওয়ামী লীগ নেত্রী আরো বলেন, পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেনের বিরুদ্ধে এমন কঠোর অবস্থানে থাকার কথা উপস্থিত সাংবাদিকরা জানতে চাইলে, আওয়ামী লীগ নেত্রী নাজনীন সরওয়ার কাবেরী বলেন, কক্সবাজার জেলার কোন থানায় টাকা ছাড়া মামলা হয়না। সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা হয়। মামলার টাকার ভাগ পুলিশ সুপার পান । না হলে তিনি ব্যবস্থা কেন নেন না?
তার দাবি, অনেক নিরীহ মানুষ জনের পকেটে ইয়াবা, অস্ত্র ঢুকিয়ে দিয়ে ফাঁসানো হয়। অধীনস্থ অফিসারদের বিরুদ্ধে সঠিক তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে অভিযোগ করার পরও পুলিশ সুপার ব্যবস্থা নেন না।
নাজনীন সরওয়ার কাবেরী বলেন, ব্যবস্থা তো নেন না, বরং শ্রেষ্ঠ অফিসার হিসেবে পুরস্কৃত করেন ।
তিনি বলেন, মেজর সিনহা খুনের ঘটনায় জড়িত ইন্সপেক্টর লিয়াকতের সাথে ফোনালাপে এসপি মাসুদ হোসেনের অপরাধ স্পষ্ট প্রমাণিত।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ জুলাই কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ রোডে মেজর সিনহা তাঁর কক্সবাজারমুখী প্রাইভেট কারটি নিয়ে টেকনাফের বাহারছরা শামলাপুর পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের চেকপোস্টে পৌঁছালে গাড়িটি পুলিশ থামিয়ে দেয়। তখন তিনি উপর দিকে তার হাত তুলে তার প্রাইভেট কার থেকে বের হওয়ার সাথে সাথে বাহারছরা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রর ইনচার্জ লিয়াকত আলী পরপর চার রাউন্ড গুলি করে হত্যা করে বলে সেনা সদর থেকে গণমাধ্যমে প্রেরিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়।
আপনারা সাংবাদিক মহল জানেন, ঘটনা তদন্তে গত ২ আগস্ট চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মো. মিজানুর রহমানকে আহবায়ক করে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্ত্বা বিভাগ। ৪ আগষ্ট থেকে তদন্ত শুরু হয়েছে। কক্সবাজার পরিদর্শন করেছেন সেনাবাহিনীর প্রধান ও পুলিশ প্রধান। আমি জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠণিক সম্পাদক হিসেবে আর দেখতে চাইনা কোন সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফার মত নির্যাতিত হোক ।
কক্সবাজারের সাংবাদিক সভায়, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএমএসএফ’র কেন্দ্রীয় সাংগঠণিক সম্পাদক ও অনলাইন এডিটর কাইন্সিল এর সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ অনলাইন সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি খায়রুল আলম রফিক।
বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার জেলা সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাহীদ আলমগীর। সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির জেলা সভাপতি সাংবাদিক পলাশের সভাপতিত্বে সভাটি পরিচালনা করেন, বিএমএসএফ কক্সবাজার জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন ।
উল্লেখ্য উক্ত সভায় বিএমএসএফ’র কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সহ সংগঠণিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আহাদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য নান্টু লাল দাস, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য কাজী সালাহ উদ্দিন (নোমান), কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য সোহাগ আরেফিন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য এস এম আকরাম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য এস এম জীবন,কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য আবুল হাসনাত তুহিন, বিএমএসএফ মালদ্বীপ শাখার সভাপতি জুয়েল খন্দকার, সাংবাদিক জাবেদ হোসেন ও কক্সবাজার জেলা শাখা বিএমএসএফ ও সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির প্রমূখ সাংবাদিক সদস্যবৃন্দ ।