• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:২১ পূর্বাহ্ন

‘সাংবাদিকদের অধিকার ও দাবি আদায়ে বিএমএসএফ’র পথচলার ৭ বছর’

/ ২৮৫ বার পঠিত
আপডেট: রবিবার, ১৪ জুলাই, ২০১৯

আহমেদ আবু জাফর যুগে যুগে এদেশের সাংবাদিকরা নানাভাবে অধিকার বঞ্চিত হয়ে আসছে। তবুও পেশার মান ধরে রাখতে অবিরাম ছুটে চলছে এদেশের গণমাধ্যম কর্মীরা। রাষ্ট্রযন্ত্রের পাশে থেকে সাংবাদিকরা অতন্দ্রপ্রহরী হিসেবে দায়িত্বপালনে ছুটে চলছেন এপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে। তবুও অধিকার বঞ্চিত সাংবাদিকরা প্রতিনিয়ত মৃত্যু, মামলা, হামলা ও ভয়ভীতির ঝুঁকি নিয়ে দেশের জন্য কাজ করছেন।

সাংবাদিকদের ন্যায়সঙ্গত দাবি ও অধিকার আদায়ের জন্য ২০১৩ সালের ১৫ জুলাই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম-বিএমএসএফ। প্রতিষ্ঠা লাভের পর থেকে বিএমএসএফ সাংবাদিকদের পাশে থেকে অবিরাম কাজ করে চলছে। সাংবাদিকদের দাবি ও অধিকার আদায়ের লক্ষে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে। কাজ করছে সাংবাদিকদের দাবি, অধিকার ও মর্যাদা রক্ষার আন্দোলনে। ক্ষুদ্র থেকে বৃহৎ আকারে রুপ নেয়া বিএমএসএফ এখন দেশের সকল সাংবাদিকের প্রয়োজনে বিপদে-আপদে পাশে থাকছে। দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিএমএসএফ এখন আমেরিকা, লন্ডন, ইতালি, মালয়েশিয়া ও মালদ্বীপে বাংলাদেশী সাংবাদিকদের আস্থার-প্রাণের সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। সংগঠনটি দেশের প্রথিতযশা সাংবাদিক শহীদুল ইসলাম পাইলট সভাপতি ও আমি আহমেদ আবু জাফর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। আজ ১৫ জুলাই বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম তার পথচলার ৭বছর পেরিয়ে ৮মবর্ষে পদার্পণ করছে। এই শুভক্ষনে সংগঠনের পক্ষ থেকে দেশবাসিসহ সকল সাংবাদিকদের প্রতি জানাই অকৃত্রিম ভালবাসা, শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। যারা বিভিন্ন সময়ে পাশে থেকে আন্তরিক সহযোগিতায় সংগঠনকে এগিয়ে নিয়েছেন তাদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম সারাদেশের পেশাদার সাংবাদিকদের তালিকা প্রণয়ন করে আইডি নাম্বার প্রদানের জোর দাবি তুলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রীর নিকট স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। সরকার ও গণমাধ্যমের নিকট সাংবাদিক নিয়োগ নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধে যুগোপযোগি আইন প্রণয়ন, পাঠ্যবইয়ে গণমাধ্যম বিষয়ক একটি অধ্যায় অন্তর্ভুক্তকরণ, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমুহে পিআরও পদে প্রকৃত পেশাদার সাংবাদিকদের নিয়োগ দেয়ার দাবি করা হয়েছে। পেশাগত কাজে সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার হামলা-মামলার ব্যয়ভার সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমকে বহন করতে হবে। তালিকাভুক্ত সাংবাদিককে সরকার কর্তৃক মাসিক ভাতা প্রদান করতে হবে। হরতাল ও অবরোধে সাংবাদিক ও সংবাদপত্র বহনকারী যানবাহন আওতামুক্ত রাখতে হবে। প্রতিটি গণমাধ্যমে সাংবাদিকদের অনুকূলে কল্যান ফান্ড গঠন করতে হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন ও তদন্তে দোষি প্রমানিত হওয়ার আগে কোন সাংবাদিককে গ্রেফতার করতে পারবেনা। সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলে দায়ের করতে হবে এবং প্রেস কাউন্সিলের অনুমতি ব্যতিরেকে কোন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করা যাবেনা। বিটিভি, বাসস ও বাংলাদেশ বেতারে উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দিতে হবে। জাতীয়, আঞ্চলিক ও স্থানীয় পত্রিকাগুলোকে পূর্বের ন্যায় প্রয়োজনীয় কাগজ বরাদ্দ দিতে হবে। জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধিদের সরকার ঘোষিত ওয়েজবোর্ড অনুযায়ী বেতন ভাতা প্রদান করতে হবে। এই দাবিগুলো বাস্তবায়নের বিষয় নিয়ে সরকার এবং সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যম এখন ভাবছে।

এই সকল দাবির সাথে সারা বাংলাদেশের সাড়ে ৩শ শাখা কমিটির প্রায় ১০ হাজার সাংবাদিক নেতাকর্মী বিএমএসএফ ঘোষিত ১৪ দফা দাবির সাথে ঐক্যবদ্ধ থেকে কাজ করছে। নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে বিএমএসএফ সারাদেশের সাংবাদিকদের পেশাগত মর্যাদাবৃদ্ধি, কল্যান ও অধিকার রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে। বিভিন্ন সময় সংগঠনের নেতাকর্মীদেরকে বিভিন্ন অপশক্তি সংগঠনকে ক্ষতিগ্রস্থ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল। সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ থাকায় ওইসকল অপশক্তি চক্র কোন ক্ষতিসাধণ করতে পারেনি, পারবেওনা।

বিএমএসএফকে নিয়ে যারা বিভিন্ন সময় নানা ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছিল তারা সফল হতে পারেনি। কারন বিএমএসএফ একটি ঐক্যবদ্ধ সাংবাদিক সংগঠন। যেকোন ধরনের ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত বিএমএসএফ’র সৈনিকরা কঠোর হস্তে দমন করতেও প্রস্তুত রয়েছে। তাই আসুন, সকল ষড়যন্ত্র ছেড়ে সাংবাদিকদের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষার আন্দোলনে আপনিও একজন গর্বিক সহযোগি হোন। বিএমএসএফ’র পতাকা সমুন্নত রাখতে আপনিও ঐক্যবদ্ধ থাকুন। ১৪ দফা দাবি আদায়ে আপনিও একজন সহযোদ্ধা হিসেবে সাংবাদিকদের পাশে থাকুন।
পরিশেষে, আপনি কারো বিরোধীতা করবেন করুন। সমালোচনা করবেন বাঁধা নেই। বিরোধীতার খাতিরে যেন বিরোধীতা না হয় আর সমালোচনা শুধু আপনি নিজেকে আলোচনায় নিয়ে আসার জন্য নয়। সমালোচনা করুন চরম বাস্তবতা নিয়ে। অযথা কারো বিরুদ্ধে সমালোচনা সৃষ্টিকর্তা মহান রাব্বুল আলামিনও পছন্দ করেন না।
তাই আসুন, অযথা সমালোচনা ছেড়ে আমরা সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে বিএমএসএফকে শক্তিশালী একটি সংগঠনে রুপান্তরিত করে সাংবাদিকদের হারানো মর্যাদা রক্ষা ও অধিকার আদায়ে একজন গর্বিত সহযোগি হই। মহান রাব্বুল আলামিন আমাদের সহায় হোন, আমিন।
লেখক: আহমেদ আবু জাফর, প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম-বিএমএসএফ, ০১৭১২৩০৬৫০১, ১৪ জুলাই ২০১৯ ।


আরো পড়ুন