• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৪৩ পূর্বাহ্ন

পুলিশ পরিচয়ে চেক পোস্ট বসিয়ে হাতিয়ে নেয় লক্ষ লক্ষ টাকা! গ্রেফতারের চেষ্টা প্রশাসনের !

/ ১২৯ বার পঠিত
আপডেট: বুধবার, ২২ মার্চ, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ:-
প্রতিদিন সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে রাতের শুরুতে কক্সবাজার টেকনাফ আরকান সড়কের উখিয়া টিভি রিলে কেন্দ্রের সামনে ও উত্তর দক্ষিণ পাশে রাস্তায় চেক পোস্ট বসিয়ে পুলিশ পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজিতে লিপ্ত হয় বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু উত্তর পাড়া এলাকার বদিউর রহমানের ছেলে ইউছুফ আলী (প্রকাশ সোর্স চোর ইউছুফ)।

সেই দীর্ঘদিন ধরে নাইক্ষ্যংছড়ি, উখিয়া ও টেকনাফে পুলিশের নাম ভাঙিয়ে এবং সোর্স পরিচয়ে প্রতি মাসে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। তার বিরুদ্ধে রয়েছে শত শত অভিযোগ। বর্তমানে কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন ইউছুফ আলী প্রকাশ সোর্স চোর ইউসুফ।

জানা যায়, পঞ্চম শ্রেণী পাস না করা ইউছুফ কখনো নিজেকে পুলিশ কখনো বা সাংবাদিক কখনো বড় নেতা পরিচয় দিয়ে প্রতিনিয়ত উখিয়াসহ বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি করে বেড়ায়। শুধু তা নয় তার বসবাস মায়ানমার সীমান্তে হওয়ার সুযোগে মায়ানমার থেকে মাদক সরবরাহ করে মাদকের কারবার চালিয়ে যাচ্ছেন। গোপন সুত্রে জানা যায়, তার এসব কর্মকাণ্ডে প্রশাসনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাও জড়িত আছেন বলে গোপন সূত্রে জানা গেছে।

ভুয়া সাংবাদিক ও পুলিশ এর ফেইসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাস

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইউছুফ অনেকদিন ধরে নিজ এলাকার (তুমব্রু) বাইরেও বসবাস করে। প্রশাসনের সোর্স পরিচয়ে চাঁদাবাজি ও সীমান্তে চোরাচালানে লিপ্ত থাকার কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছেও পিটুনি খেয়েছেন বলে জানান উখিয়ার সিএনজির ড্রাইভার হারুন। জানা যায়, মূলত এরপর থেকেই প্রায় সময় এলাকার বাইরে থাকেন ইউছুফ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বৃদ্ধা বলেন তার দালালির কারণে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে তাকে এলাকা ছাড়া করেন।

আরো জানা যায়, ইউছুফের রয়েছে একাধিক স্ত্রী। বর্তমানে এক রোহিঙ্গা মেয়েকে বিয়ে করে উখিয়ার কুতুপালংয়ে একটি বাসায় থাকছেন। ওই রোহিঙ্গা মেয়ে তার তৃতীয় স্ত্রী। তার দ্বিতীয় স্ত্রীও রোহিঙ্গা। তিনি বর্তমানে রোহিঙ্গা ক্যাম্প-৭-এ অবস্থান করছেন বলে জানা যায়৷ তার প্রথম স্ত্রী তাদের বড় ছেলেকে নিয়ে বর্তমানে চট্রগ্রামে থাকছেন। তার বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ রয়েছে সে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে মাদকের ভয় দেখিয়ে হাতিয়ে নেয় লাখ লাখ টাকা। সে সুবাদে তিনি বনে গেছে কোটি টাকার মালিক। স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি বলেন, তার রয়েছে একাধিক ব্যাংকের একাধিক অ্যাকাউন্টে তার টাকা জমা হয়। প্রশাসন এসব খতিয়ে দেখলে সঠিক তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে মনে করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, ইউসুফ নাইক্ষ্যংছড়ি থানার পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করেন।

সূত্র জানায়, ইউছুফ আলী ট্রাফিক পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশেরও দালালিও করে থাকেন। দালালি এবং মানুষকে ব্ল্যাক-মেইল করে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন ইউছুফ। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বিভিন্ন যানবাহনের চালকও তার বিরুদ্ধে ‘হয়রানির’ অভিযোগ করেছেন। তথ্য সুত্রে দেখা যায়, ইউছুফের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় পাঁচটি এবং নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় দুটি মাদক কারবার ও চোরাচালানের মামলা রয়েছে। এর মধ্যে উখিয়া থানায় ২০২১ সালের ১৬ মার্চ তারিখে (এফআইআর নং–২৬/১৭৯) মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়। এ ছাড়া ২০১৪ সালের ১৪ নভেম্বর (জিআর নং–৩৪০/১৪) এবং ২০১৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর (এফআইআর নং–২০/৬০৭), তার বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় কিছুদিন আগে আরও একটি রাস্তায় বৈধ ভাবে মানুষকে তল্লাশি করায় মামলা হয় তার বিরুদ্ধে। বাকি দুটি নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় ২০০৭ সালের ৮ মার্চ তারিখে (জিআরনং–৪২/০৭) বিশেষ ক্ষমতা আইনে এবং ২০১৫ সালের ২২ জুন (জিআর নং–১৩৮/১৫) তারিখে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়।


সর্বশেষ মামলাটি হয় গত বছরের ২৬ অক্টোবর উখিয়া থানায়। যার এফআইআর নং- ৮০/১৩৩৯। ধারা: ৩৪১/৩২৩/৩৭৯/৩৬৫/৪২৭/৫০৬/৫১১। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়, মারপিট করিয়া সাধারণ জখম করতো, ভায়ভীতি প্রদর্শন, অপহরণের চেষ্টা এবং চুরি করার অপরাধ।

পুলিশের এক সুত্রে জানা যায়, তাকে গ্রেপ্তারের জন্য প্রশাসন বার বার চেষ্টা করেও তার বিভিন্ন কৌশলের কারনে অধরা রয়ে যাচ্ছে। প্রশাসন গ্রেপ্তার করতে ব্যর্থ হচ্ছে।

উক্ত অভিযোগের বিষয়ে ইউছুফের সাথে মুঠোফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তথ্য সুত্রে জানা যায়, ইউছুফ আলীর এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে স্থানীয় ও জাতীয়সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলেও কোন অদৃশ্য শক্তির কারণে এখনো প্রশাসনের নজরে আসেনি সে চাঁদাবাজ ইউছুফ।

শুধু তাই নয় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইউছুফ ইউসুফ বানাতে পারেন মাত্র ২০ মিনিটে বোমা, রয়েছে জঙ্গি ঘুষ্টির সাথেও জড়িত ।

আবার করেন বনের বড় আকারের টিকিটিকির ব্যবসাও যা কিনা রাস্ট্রিয় আইন বিরুধী । এটি একটি ইউসুফের ব্যবসার অংশের ছবি।


আরো পড়ুন