• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৫১ অপরাহ্ন

জলপথে লিবিয়া হইতে ইতালি যাওয়ার পথে নগরকান্দার ১২ যুবক নিখোঁজ

/ ১৬৩ বার পঠিত
আপডেট: শনিবার, ১৮ মার্চ, ২০২৩

মামুন মিঞা, ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি:-
লিবিয়া হইতে অবৈধ উপায়ে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্য সাগরে নৌকাডুবীর ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। এতে ফরিদপুরের বিভিন্ন উপজেলার ১২ যুবক রয়েছেন বলে জানা গেছে।গত রোববার লিবিয়া থেকে চোরাই পথে অবৈধভাবে ইতালি যাওয়ার সময় নৌকা বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে পড়ে এবং ডুবে যায়।

৪৭ জন যাত্রীর মধ্যে ১৭ জন উদ্বার হলেও ৩০ জন নিখোঁজ রয়েছে বলে ভুক্তভোগী সহ বিভিন্ন মাধ্যমে জানা যায়।

নগরকান্দার নিখোঁজ ১২জন যুবককেরা হলেন উপজেলার কোদালিয়া শহীদনগর ইউনিয়নের আটকাহনিয়া গ্রামের তোরাপ মোল্লার ছেলে শফিকুল ইসলাম রাসেল (৩০), ডাঙ্গী ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামের মোস্তফা মাতুব্বরের ছেলে আল আমিন মাতুব্বর (২০), সোবাহান মোল্লার ছেলে মাহফুজ মোল্লা (২২), এসকেন মোল্লার ছেলে নাজমুল মোল্লা (২৩), সেকেন বেপারীর ছেলে আকরাম বেপারী (২৭), বাশাগাড়ী গ্রামের ইছাহাক ফকিরের ছেলে স্বপন ফকির (২৭), শংকরপাশা গ্রামের সেকেন কাজীর ছেলে শামীম কাজী (২১), সরোয়ার মাতুব্বরের ছেলে বিপুল মাতুব্বর(২৫), মালেক শেখের ছেলে বিটুল শেখ (২৫), শ্রীঙ্গাল গ্রামের সলেমান শেখের ছেলে মিরান শেখ (২২), ইদ্রিস শেখের ছেলে তুহিন শেখ (২০) ও নারুয়াহাটি গ্রামের কাশেম তালুকদারের ছেলে শাওন তালুকদার (২২)।

সূত্রে জানা যায়,সবাই স্থানীয় একটি দালাল চক্র চুক্তির মাধ্যমে অবৈধভাবে ইতালিতে পৌঁছানোর কথা ।
নিখোঁজ রাসেলের বাবা তোরাপ মোল্লা বলেন , নগরকান্দা উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামের আদম বেপারী মুরাদ ফকির সাথে আট লাখ টাকার চুক্তি হয়। চলতি বছরের জানুয়ারী মাসের ৫ তারিখে বাড়ি থেকে ইটালির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। ৮ জানুয়ারি ঢাকা থেকে বিমান যোগে দুবাই হয়ে ১২ জানুয়ারি তারা লিবিয়া পৌঁছায়।

দু’মাস লিবিয়ায় অবস্থানের পর রোববার সাগর পথে নৌকায় ইটালির যাওয়ার পথে নৌকা ঝড়ের কবলে পড়ে নৌকা ডুবে যায় বলে জানা যায়। এ দিকে দাতব্য সংস্থা অ্যালার্ম ফোনের দাবি, শনিবার নৌকাটি বিপদে পড়েছে বলে জানানোর পরও ইতালি কর্তৃপক্ষ সময় মতো সেখানে তাদের কোস্টগার্ডকে পাঠায়নি।

গত রোববার সংস্থাটির এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘স্পষ্টত, ইতালি কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করছিল যে, ওই মানুষদের ইতালিতে না নিতে হয়। এর জন্য তারা দেরি করছিল। উল্লেখ্য, অভিবাসীবাহী কোনো নৌকা বিপদে পড়লে দাতব্য সংস্থা অ্যালার্ম ফোনের কাছে সংকেত পাঠিয়ে থাকে।মানব পাচারকারী চক্রের মূল হুতা নগরকান্দা উপজেলার ডাঙ্গী ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামের মোহাম্মদ ব্যপারীর পুত্র মোরাদ ব্যপারী।মুরাদ ব্যপারী এলাকায় দালাল হিসাবে লোকজন গুছিয়ে দেয়। তাদের লোভ লালসার ফাঁদে ফেলে মোরাদের ভাই গিয়াস ব্যপারী,মাশাউজান গ্রামের দলিল উদ্দিন মল্লিক এর ছেলে আবুল মল্লিক সহ আরও অনেকেই দালাল চক্রের সাথে জড়িত থাকার কথা ভুক্তভোগী সহ এলাকাবাসী জানান।

অবৈধ ভাবে সমুদ্র পথে পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়া পথে নৌকা ডুবে নিখোঁজ হওয়া যুবকদের বাড়িতে নিখোঁজের খবর পাওয়া মাত্রই কান্নার হৈচৈ পড়ে যায়।নিখোঁজের খবর আশপাশের লোকজনের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে।

এ খবর ছড়িয়ে পড়ে দেশের সর্বস্তরের দালাল মোরাদ লিবিয়া থাকলেও তার বানানো দালাল সদস্যরা বাড়িতে ঘরে তালা ঝুলিয়ে পরিবার নিয়ে এলাকা থেকে পালিয়ে আছে। দালাল চক্রের সদস্যরা এলাকা থেকে অল্প খরচে অবৈধ ভাবে সমুদ্র পথে ইতালি পৌছিয়ে দেওয়ার নামে বা বৈদেশিক দালাল চক্রের মাধ্যমে ইতালি পৌছিয়ে দিয়ে প্রতিটি যাত্রীর কাছ থেকে ৮ লাখ টাকার বেশি চুক্তিতে টাকা নিয়ে থাকেন।

অবৈধ পথে পার হলে কারও পৌষ মাস আবার যেতে না পারলে বা কোন বিপদ হলে তাদের সর্বনাশ।চোরাই পথে ইতালি পাঠানোর কথা বলে দালাল চক্র লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে নিজেরা গড়ে তুলছে অট্টালিকা। যুবক নিহতের বিষয় পুলিশ প্রশাসন দালাল চক্রের বিরুদ্ধে আইনিগত ভাবে নজরদারিতে রেখেছেন।


আরো পড়ুন