• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৩৫ পূর্বাহ্ন

হিলি বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে!

/ ৯০ বার পঠিত
আপডেট: শুক্রবার, ১৭ মার্চ, ২০২৩

হিলি প্রতিনিধি:-
সরকার নতুন করে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি (আইপি) পারমিট না দেওয়ায় দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে। এর প্রভাব পড়েছে বন্দরের খুচরা বাজারে সেই সাথে দেশের বাজারে সরবরাহ কমে দাম বাড়ার আশঙ্কা করছেন আমদানিকারকরা। এক দিনের ব্যবধানে ২২ টাকা কেজি দরের পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৬ টাকা কেজি দরে।
আমদানি স্বাভাবিক হলে আবারও বাজার দর স্বাভাবিক হবে বলে জানয়েছেন পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে রমজান মাসে পেঁয়াজের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি (আইপি) পারমিট দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন আমদানিকারকরা।

শুক্রবার (১৭ মার্চ) দুপুরে হিলি পেঁয়াজ বাজার ঘুরে জানা যায়, ভারত থেকে আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কেজিতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৪ টাকা। এদিকে বাড়তে শুরু করেছে দেশি পেঁয়াজের দামও। দেশি ২৬ টাকার পেঁয়াজ বেড়ে বিক্রি হচ্ছে পাইকারি বাজারে ২৮ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে। খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ দুই থেকে চার টাকা বেশি দরে বিক্রি করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। সামনে রমজান মাসে দাম বাড়ার সম্ভাবনা বেশি বলছেন ব্যবসায়ীরা। হঠাৎ দাম বাড়ায় বিপাকে পড়ছেন সাধারণ ক্রেতা-বিক্রেতারা।

হিলি বন্দরের তথ্য মতে বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) সকাল থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে কোনও পেঁয়াজ আমদানি হয়নি। তবে বুধবার (১৫ মার্চ) পেঁয়াজ আমদানি অনুমতির শেষ দিনে বন্দর দিয়ে সাতটি ট্রাকে ১৯২ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।

হিলি বাজারে পেঁয়াজ বিক্রেতা শাকিল আহম্মেদ বলেন, ২২ থেকে ২৪ টাকা দরে পাইকারি কিনে ২৬ টাকা দরে খুচরা বিক্রি করেছি পেঁয়াজ। বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হওয়ায় আজ ২৬ টাকা পাইকারি কিনলাম, এখন এসব পেঁয়াজ ২৮ থেকে ৩০ টাকা বিক্রি করতে হবে।

হিলি বাজারে পাইকারি পেঁয়াজ ব্যবসায়ী শাহাবুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে। যার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বাজারে। গতকাল বৃহস্পতিবার যে পেঁয়াজ ২২ টাকা পাইকারি দিয়েছি, আজ তা ২৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, সামনে রমজান দেশে পেঁয়াজের চাহিদা প্রচুর রয়েছে। এরমধ্যে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে। মাত্র এক দিনের ব্যবধানে দাম বাড়তে শুরু করেছে, আগামীতে আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমদানি স্বাভাবিক হলে আশা করা যায়, পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক হবে।

হিলি বন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক শাহিনুর রেজা বলেন, পুরনো আইপির মেয়াদ ১৫ মার্চ পর্যন্ত ছিল যা গত বুধবার শেষ হয়ে গেছে। সরকার নতুন করে আর পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি না দেওয়ায় আমদানিকারকরা এলসি খুলতে পারছেন না। যার কারণে বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। এতে করে আমরা শঙ্কায় রয়েছি পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের এই সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজের মূল্য বাড়ালে রমজান মাসে  মানুষ পড়বে ভোগান্তিতে। সরকার যদি অন্তত রমজান মাসে আমদানির অনুমতি দেয় তাহলে এই মাসে বাজার স্বাভাবিক থাকতো। পেঁয়াজের আমদানি অনুমতি আইপি পারমিট যদি সরকার বন্ধ করে দেয় তাহলে রমজানের পরে বন্ধ করে দেওয়া হয় তাহলে আমরা সেই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানানো হবে। সরকারের এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।

হিলি স্থলবন্দরের পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন প্রতাপ বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বন্দর দিয়ে কোনও পেঁয়াজ আমদানি হয়নি। বুধবার ১৫ মার্চ শেষ দিনে বন্দর দিয়ে সাতটি ট্রাকে ১৯২ টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে।

হিলি স্থলবন্দর উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপসহকারী সংগনিরোধ কর্মকর্তা ইউসুফ আলী বলেন, আমদানির অনুমতিপত্র ঢাকার খামাড়বাড়িতে অথোরিটি ইস্যু করে। আমরা বন্দরের স্থানীয় অফিসগুলো শুধু অনলাইনে দেখতে পায় কে আইপি পেলো বা কতদিন মেয়াদ। সেই মোতাবেক পেঁয়াজ আমদানির অনুমতির ক্ষেত্রে বেশ কিছুদিন ধরেই দেখছিলাম যেসব অনুমতি দেওয়া হচ্ছিল সেগুলোর মেয়াদ ১৫ মার্চ পর্যন্ত। গত বুধবার সেই মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। তাই নতুন করে অনলাইনে কোনও আইপি দেখা যাচ্ছে না। আর আইপি যদি না পায় তাহলে এলসি খোলাসহ রিলিজ অর্ডার পাওয়ার সুযোগ নেই। যার কারণে বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে।


আরো পড়ুন