• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৪৯ পূর্বাহ্ন

হিরো আলম ঝড়ে কাঁপছে রাজনীতির মাঠ

/ ১৭২ বার পঠিত
আপডেট: রবিবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের উপনির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী এ কে এম রেজাউল করিম তানসেনের কাছে ৮৩৪ ভোটের ব্যবধানে হেরেছেন হিরো আলম। ফল ঘোষণার পরপরই বুধবার রাত সাড়ে ১০টায় বগুড়া শহরতলীর এরুলিয়ায় সংবাদ সম্মেলনে এই ফল বয়কট করেন হিরো আলম। অভিযোগ করেন ভোট বেশি পেয়েছেন তিনি। কিন্তু তাকে ফেল করানোর জন্য কারচুপি করে ফল পাল্টে দেওয়া হয়েছে।

হিরো আলমের বক্তব্যের পরপরই যেন উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনীতির মাঠ। হিরো আলমকে কেন্দ্র করে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিয়েছেন প্রধান দুই দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি—দুই দলের নেতারা প্রতিপক্ষের ‘মান বোঝাতে হিরো আলমকে উদাহরণ হিসেবে টানছেন। দুই দলই মোটামুটি নিজেদের মতো করে হিরো আলমের একটা মান ঠিক করে নিয়েছেন।

হিরো আলম মনে করেন, ভোট জালিয়াতি করে তাঁকে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁর বিজয় ছিনতাই করা হয়েছে। এ জন্য তিনি প্রতিকার চেয়েছেন। এই চাওয়ার মধ্যে কোনো ভুল বা অন্যায় কিছু নেই। তাঁর সঙ্গে কেন এমন ঘটতে পারে, সেটিও নিজের বিবেচনামতো স্পষ্ট করেই বলেছিলেন ১ ফেব্রুয়ারি ভোটের ফল ঘোষণার পর সংবাদ সম্মেলনে। তিনি বলেন, শিক্ষিত সমাজের কিছু লোক আছেন, যাঁরা আমাকে মেনে নিতে চান না। তাঁরা মনে করেন, আমি পাস করলে বাংলাদেশের সম্মান যাবে, তাঁদের সম্মান যাবে। আমরা এত শিক্ষিত, হিরো আলমের মতো মূর্খকে স্যার বলে ডাকতে হবে। এ জন্য তাঁরা আমাকে মানতে চান না। তাঁরা আমার বিজয় মেনে নিতে পারেননি। নির্বাচন নিয়ে এ রকম প্রহসন হলে, কারচুপি হলে মানুষ নির্বাচন ভুলে যাবে।

হিরো আলমের বক্তব্যের পর শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এই সরকার শুধু চাপার জোরে টিকে আছে। হিরো আলম হিরো হয়ে গেছে। কারণ আওয়ামী লীগ হিরো আলমের কাছেও অসহায় হয়ে পড়েছে। তারা হিরো আলমের কাছেও মাত্র ৮০০ ভোটে জিতেছে। তাও চুরির অভিযোগ এনেছেন হিরো আলম।

অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এক অনুষ্ঠানে দাবি করেছেন, জাতীয় সংসদকে খাটো করতে বিএনপি হিরো আলমকে উপনির্বাচনে প্রার্থী করেছিল। ৪ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে দলের এক সমাবেশে তিনি বলেন, ফখরুল সাহেব বললেন, রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে হিরো আলমকে হারানো হয়েছে। হায়রে মায়া! হিরো আলমের জন্য এত দরদ উঠল তাঁর। তিনি ভেবেছিলেন, হিরো আলম জিতে যাবে। কিন্তু হিরো আলম এখন জিরো হয়ে গেছে। হিরো আলমকে বিএনপি নির্বাচনে দাঁড় করিয়েছে। তারা সংসদকে ছোট করার জন্য হিরো আলমকে প্রার্থী করেছে। অবশেষে ফখরুলের স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের বিষয়ে পরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লাইভে এসে প্রতিক্রিয়া জানান হিরো আলম। বিএনপির মহাসচিব যে বক্তব্য দিয়েছেন সেই প্রসঙ্গ তুলে হিরো আলম বলেন, মির্জা আলমগীর বলেন, এই সরকার এখন অসহায় হয়ে গেছে। এই সরকার অসহায় হয়েছে কি না, আমি জানি না। তবে আমি হিরো আলম যে অসহায় হয়েছি, এই প্রশ্নের জবাব কে দেবে?

অন্যদিকে ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের বিষয়ে হিরো আলম বলেন, আমি যদি পার্লামেন্টে গেলে পার্লামেন্ট ছোট করা হয়, তবে যখন মনোনয়ন কিনছি, তখন কিন্তু আপনাদের বলা উচিত ছিল, হিরো আলমের কাছে যেন মনোনয়ন বিক্রি করা না হয়। আপনারাই বলেছেন, গণতান্ত্রিক দেশ, সবাই নির্বাচন করতে পারবে। সবার যদি নির্বাচন করার কথা আইনে থাকে, তাহলে আমি ভোটে দাঁড়ালে সংসদ ছোট হবে কেন? তাহলে সংসদ সদস্য হওয়ার যোগ্যতা নিয়ে আইন করতে হবে?

তিনি বলেছেন, ‘আপনারাই বলেছেন, গণতান্ত্রিক দেশ, সবাই নির্বাচন করতে পারবে। সবার যদি নির্বাচন করার কথা আইনে থাকে, তাহলে আমি ভোটে দাঁড়ালে সংসদ ছোট হবে কেন? তাহলে সংসদ সদস্য হওয়ার যোগ্যতা নিয়ে আইন করতে হবে?’


আরো পড়ুন