• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:২৬ অপরাহ্ন

পাতি নেতা সেলু’র শীর্ষ সন্ত্রাসী কান্ড

/ ১৫৮ বার পঠিত
আপডেট: শনিবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২৩

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
পাতিনেতা সেলুন নয় সেলু পাবলিকের সঙ্গে জোরজুলুম করে। রাস্তায় যদি কেউ একটা অটো নামায় সেলু কয়, ট্যাকা দেও। ট্যাকা না দিলে গাড়ি চালাইবার দিব না। সপ্তাহে তারে ৫০০-১০০০ ট্যাকা দিতে হইব। না দিলে মারে, অটো চালাইতে দেয় না। আমাগো এলাকার ৪০০-৫০০ জন অটোর চালক হ্যাগো যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ। এলাকার প্রভাবশালীদের শেল্টারে সে এগুলা করে।

বলছি অস্ত্র মামলার আসামী আহমেদ প্রকাশ সেলুর আতঙ্কে অতিষ্ঠ পশ্চিম বাকলিয়া এলাকাবাসী চট্টগ্রামের বাকলিয়া থানাধীন বগারবিল শান্তিনগর এলাকার কুখ্যাত সন্ত্রাসী, কিশোর গ্যাং লিডার চাঁদাবাজ ও ছিনতাইকারী’র লিডার মোঃ সোহেল আহমেদ প্রকাশ সেলুর অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী।

জানা যায় গত ২৮ শে নভেম্বর ২০২১ সালে রেপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ানের হাতে শুটার গান ও দুই রাউন্ড গুলি সহ শীর্ষ সন্ত্রাসী মোঃ সোহেল আহমেদ প্রকাশ সেলু গ্রেফতার হয়েছিলেন। কিন্তু, গত ২০২২ সালের জুন মাসের দিকে অস্ত্র মামলায় জামিন পেয়ে সোহেল প্রকাশ সেলু পুনরায় তার অপরাধ অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন দেদারসে।

মো.সোহেল আহমেদ প্রকাশ সেলু চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন স্থানে তার আছে বেশ কিছু কিশোর গ্যাং গ্রুপ প্রতিনিয়ত তাদেরকে দিয়ে বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম করিয়ে থাকে সেলু। মো. সোহেল আহমেদ প্রকাশ সেলুর গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায়। ছোটবেলা থেকেই নগরীর পশ্চিম বাকলিয়া থানাধীন শান্তিনগর বগার বিলে বেড়ে ওঠা, নেই কোন তেমন লেখাপড়া।পেটের তাগিদে প্রথমে সে ভিক্ষাবৃত্তের কাজ করেন । দীর্ঘ অনেকদিন পড় ভিক্ষাবৃত্তির কাজ ছেরে দিয়ে, নগরীর বিভিন্ন নালা নর্দমা থেকে কাগজ,বোতল ও ভাংগারি কুড়িয়ে সেগুলো বিক্রি করতেন । সেই সুবাদে তার সাথে বিভিন্ন এলাকার চোর ছিনতাইকারীর বড় বড় অপরাধীদের সাথে তার পরিচয় হয়। তার বয়স যখন ১৩-১৪ বছর ঠিক তখন থেকেই সে বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়েন ।

প্রথমে ছিনতাই,চুরি, ডাকাতি, মাদক ব্যবসা, পাশাপাশি ড্রাগস ইউজ করা সহ বিভিন্ন মাদক বিক্রয় শুরু করেন। তার বয়স যখন ১৬ তখনই বিভিন্ন বাসা বাড়ির চুরির দায়ে গ্রেপ্তার হন। বয়স বাড়ার সাথে সাথে তার অপরাধ যেন দিন দিন বেড়ে ওঠে। এখনো পর্যন্ত অপরাধ থেকে সেলু নিজেকে ফিরিয়ে আনতে পারিনি। যদিও বহুবার জেল হাজতে গিয়েছিলেন বিভিন্ন অপরাধ অপকর্মের কারণে । তার নামে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন থানা রেপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান ৭ ও ডিবিতে ১৬/১৭টি মামলা রয়েছে। চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন স্থানের ছিনতাই চুরি,ডাকাত ও মাদক কারবারীদের সাথে তার আছে ভালো সখ্যতা।

রেপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন গত ১৮ নভেম্বর ২০২১ সালে অস্ত্র সহ মো.সোহেল আহমেদ প্রকাশ সেলুকে অস্ত্র মামলায় গ্রেফতার করেছিলেন। দীর্ঘদিন কারা ভোগ করে গত ২০২২ সালের জুনের দিকে জামিনে আসে। অস্ত্র মামলায় জামিনে বের হয়ে এসে আবারো আগের মতো বেপরোয়া হয়ে কিশোর গ্যাং লালন পালনসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ড করে বেড়াচ্ছে এই শীর্ষ সন্ত্রাসী। তার ভয়ে পশ্চিম বাকলিয়ার অনেক নিরীহ পরিবার এলাকা ছাড়া, অত্র এলাকার কেউই যদি তার অপরাধ অপকর্ম নিয়ে মুখ খুলে ঠিক তখনই তাকে গুনতে হয় মিথ্যা মামলা,হামলা,অপহরণ ও খুনের মতো জঘন্য অপরাধ।

জানা গেছে এই সেলুন নয় সেলুর কাছে রয়েছে ততধিক অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র। বৈধ-অবৈধ অস্ত্রের দাপটে বেপরোয়া এই সেলু।

চাঁদাবাজি, মাদক কারবার ও ময়লার ব্যবসায় একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ ছিল তার। কথায় কথায় অস্ত্র বের করে সাধারণ মানুষকে হুমকি-ধামকি দিতেন তিনি। বিচার সালিশিতে গিয়েও টেবিলে ওপর রাখতেন আগ্নেয়াস্ত্র। অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে টাকার বিনিময়ে করতেন একতরফা সালিশি। এভাবেই আশপাশের এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন এই ঘাতক সেলু।

অনুসন্ধানে উঠে আসে, আওয়ামী লীগ নেতার নাম ভাঙ্গিয়ে তিনি অনেক দিন ধরে এলাকায় চাঁদাবাজি করে আসছেন। সম্প্রতি এক ভবন নির্মাণে কয়েক লাখ টাকা চাঁদা চেয়েছিলেন সেলু। না পেয়ে ওই নির্মাণাধীন ভবন থেকে বালু তুলে নিয়ে আসার প্রতিবাদ করেন সেলু।

জানা গেছে বন্ধু-বান্ধবের ক্ষমতা ও সরকারি দলের নেতার নাম ভাঙ্গিয়ে বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি করতেন সেলু। এলাকায় নতুন ভবন নির্মাণ, জমি কেনা-বেচা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে নিয়মিত চাঁদা তুলতেন তিনি। এমনকি কেউ বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে চাইলেও তাকে টাকা দিতে হতো। কেউ প্রতিবাদ করলে দেখাতেন হামলা-মামলার ভয়।

অস্ত্র মামলার আসামি চিহ্নিত সন্ত্রাসী মো. সোহেল আহমেদ প্রকাশ সেলু সাথে আমাদের প্রতিবেদক একাধিকবার যোগাযোগ করতে চাইলে
(01992-977761) কলটি ধরেননি।

মো.সোহেল আহমেদ প্রকাশ সেলুর বিভিন্ন অপরাধ নিয়ে বাকলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো.আব্দুর রহিম বলেন,অপরাধী যেই হোক না কেন সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পেলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।

স্থানীয়রা বলেন, সোহেল আহমেদ প্রকাশ সেলু যখন এলাকায় না থাকে, তখন এলাকার মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারে। যখন সে এলাকায় থাকে তখন এলাকার সাধারণ মানুষ আতঙ্কের মধ্যে দিন যাপন করে। এই সন্ত্রাসের ভয়ে তার অপকর্মের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে রাজি নয়। আমরা এলাকাবাসী এই কুখ্যাত সন্ত্রাসীকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানাই।


আরো পড়ুন