• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:২১ অপরাহ্ন

অপহরণের পর শিকল বেঁধে মুক্তিপণ ও শ্রম আদায় ২ জন ভিকটিম উদ্ধারসহ গ্রেফতার-৮

/ ১০৮ বার পঠিত
আপডেট: বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক:

চট্টগ্রামের হাটহাজারীর দুর্গম পাহাড়ি উদালিয়া নামক এলাকায় মধ্যযুগীয় বর্বর কায়দায় অপহরণ পূর্বক পায়ে শিকল বেঁধে মুক্তিপণ ও ইট ভাটায় জবরদস্তিমূলক শ্রম আদায়; র‍্যাব-৭ চট্টগ্রামের বিশেষ অভিযানে ২ জন ভিকটিম উদ্ধারসহ ৮ জন নির্দয় পাষন্ড আসামী গ্রেফতার।

ভুক্তভোগী ভিকটিম চট্টগ্রাম মহানগরীর উত্তর হালিশহর এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে পরিবার সহ বসবাস করতেন এবং রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। গত ২০ জানুয়ারি ২০২৩ ইং তারিখ ১৮৩০ ঘটিকায় ভিকটিম রিকশা নিয়ে বাড়ী থেকে বের হয়। দীর্ঘসময় অতিবাহিত হলেও ভিকটিম ফিরে না আসায় ভিকটিমের বাবা এবং তার পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখোঁজি করেন। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও কোন সন্ধান না পেয়ে ভিকটিমের বাবা হালিশহর থানায় একটি হারানো জিডি করেন যার জিডি নং-১১১০, তারিখ- ২১ জানুয়ারি ২০২৩ ইং।

পরদিন ২১ জানুয়ারি ২০২৩ ইং তারিখে ভিকটিমের বাবার মোবাইলে জনৈক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি ফোন করে ১,৫০,০০০/-(এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা চাঁদা দাবি করে এবং চাঁদার টাকা না দিলে ভিকটিমকে মেরে ফেলার ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে। ভিকটিমের বাবা গরীব এবং চাঁদা দেয়ার মত সামর্থ না থাকায় ছেলের জীবন নিয়ে চিন্তিত হয়ে বিষয়টি চট্টগ্রাম র‍্যাব-৭ কে অবহিত করে।

র‍্যাব-৭, চট্টগ্রাম বর্ণিত অপহরনের বিষয়টি গুরুতে¦র সাথে গ্রহণ করতঃ ভিকটিমকে উদ্ধার এবং উক্ত অপহরনের সাথে জড়িত আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারী অব্যাহত রাখে। এরই ধারাবাহিকতায় র‍্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল অদ্য ২৬ জানুয়ারি ২০২৩ খ্রিঃ তারিখ আনুমানিক ০২০০ ঘটিকায় চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী থানাধীন বারৈহাট এলাকার একটি ভাড়া ঘর হতে অপহৃত ভিকটিমসহ মোট ০২ জন ভিকটিমকে পায়ে লোহার শিকল এবং হাত বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে এবং অপহরণকারী চক্রের ০৮ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলো ১/ শাহাদাৎ হোসেন চৌধুরী ওরফে কালু চেয়ারম্যান(৬৮), পিতা-মৃত মাস্টার জেবল হোসেন, সাং-পশ্চিম ধলই, থানা-হাটহাজারী, জেলা-চট্টগ্রাম মহানগর, ২/ মোঃ খোকন (৩২), পিতা মোঃ মনির আহমেদ, সাং-উত্তর কচ্ছপিয়া, থানা- চরজব্বার, জেলা- নোয়াখালী, ৩/ মোঃ আলা উদ্দিন (৩৭), পিতা- আনার আহমদ, সাং-চরপানাউল্লাহ, থানা- সুবর্ণচর, জেলা- নোয়াখালী, ৪/ মোঃ ইউসুফ(৩৬), পিতা-মৃত নিজাম উদ্দিন, সাং-পশ্চিম চরজব্বার, থানা- চরজব্বার, জেলা-নোয়াখালী, ৫/ শহিদুল্লাহ রাজু(৩৩), পিতা-মোঃ মোস্তফা, সাং-গোড়াপুর, থানা-নোয়াখালী সদর, জেলা- নোয়াখালী, ৬। মোঃ নাজিম (৩৬), পিতা- মোঃ শাহজাহান, সাং-চরপানাউল্লাহ, ৭/ মোঃ জহিরুল ইসলাম(৪৮), পিতা-মৃত আবুল হাশেম, সাং-চরভাগ্যা, থানা-সুবর্ণচর, জেলা-নোয়াখালী এবং ৮/ মোঃ সেলিম(৫১), পিতা-মৃত আব্দুল মতিন, সাং-পশ্চিম চরজব্বার, থানা- চরজব্বার, জেলা-নোয়াখালী।

গ্রেফতারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন এলাকা হতে শিশুসহ বিভিন্ন বয়সী লোকজনকে অপহরণ করে আটকে রাখত। পরবর্তীতে তাদের পায়ে শিকল বেঁধে মারধর করত এবং ভিকটিমদের পরিবারের কাছে মুক্তিপন বাবদ বিভিন্ন অংকের চাঁদা আদায় করত।

ভিকটিমদের পরিবারের নিকট হতে মুক্তিপণ আদায় করার পরও ভিকটিমদের না ছেড়ে ব্লাংক স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিত। পরবর্তীতে তাদের মধ্যযুগীয় কায়দায় দূর্গম পাহাড়ী এলাকায় অবস্থিত ইটভাটায় দিনে জবরদস্তিমূলকভাবে কাজ করাত এবং রাতের বেলা পায়ে শেকল বেঁধে খুঁটির সাথে তালামেরে রাখত। গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।


আরো পড়ুন