• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০২:৫৫ অপরাহ্ন

বৈধ ভিসায় জর্ডান গিয়ে ভয়ঙ্কর ফাঁদে বাঙালি নারীর উপর চলছে সীমাহীন পৈশাচিকতা-ভিডিও

/ ২৪০ বার পঠিত
আপডেট: শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২২
বৈধ ভিসায় জর্ডান গিয়ে ভয়ঙ্কর ফাঁদে বাঙালি নারীর উপর চলছে সীমাহীন পৈশাচিকতা-ভিডিও

নিজস্ব প্রতিবেদক:

সরকার অনুমোদিত বৈধ ভিসায় কাজের জন্য জর্ডান গিয়েই কঠিন ফাঁদে আটকে পড়েছেন সোখানুর বেগম (৩২)। সেখানে এক বাড়িতে কাজের নামে আটকে রেখে তার উপর চালানো হচ্ছে সীমাহীন বর্বরতা। দিনভর বাসা বাড়ির কাজে নিয়োজিত থাকলেও রাত হলেই তার উপর নেমে আসছে আসর বসাচ্ছে, সেখানে মদেই ভিজিয়ে দেয়া হচ্ছে সোখানুর সারাদেহ।

মদ গিলিয়ে গিলিয়ে তাকে বেহুশ বানিয়ে ফেলা হয়। তারপরও নিস্তার মিলে না বাঙালি এ নারীর। মেঝেতে বেহুশ অবস্থায় পড়ে থাকা সুখানুরকে কিল, লাথি, চর মেরে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয় এবং একাধিক পুরুষ তার হাত, কোমর ধরে ধরে নাচতে বাধ্য করে। কয়েক ঘন্টার বর্বরতায় মুষঢ়ে যাওয়া সোখানুরের তবুও যেন রেহাই নেই। এবার মদ পানাহারে বেসামাল হওয়া একেকজন দশাসই পুরুষ হাম্লে পড়ে তার উপর, রীতিমত খুব্লে খেতে থাকে তারা। এ পৈশাচিকতা চলে রাতভর।

সেখানে বন্দীদশায় বর্বরতার শিকার সোখানুরের আকুতি, মিনতি, আর্তনাদে আকাশ বাতাস কেঁপে উঠছে, সে কান্নায় দেশে থাকা সোখানুরের মায়ের আহাজারি সইতে পারছে না কেউ। তাইতো সোখানুরদের গ্রামের বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়া এলাকা থেকে হৃদয়বান কয়েক ব্যক্তি হাজির হয়েছিলেন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রনালয়ে। সুখানুর কান্নার রোল আর অভিযোগগুলোর রেকর্ডিং শুনয়েছিলেন দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের। আট্কে পড়া নারীর বাঁচার আকুতি শুনে মন্ত্রনালয়ের কয়েক কর্মকর্তারও চোখ ভিজে উঠে। সিনিয়র সহকারী সচিব সারওয়ার আলম তৎক্ষনাত দাপ্তরিক চিঠি তৈরি করে সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সী বরাবর পাঠিয়ে দেন। মাত্র সাত দিনের সময়সীমায় সোখানুরকে উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনার কড়া হুশিয়ারীও জারি করেন তিনি।

কিন্তু কোনো কিছুই পাত্তা দিচ্ছে না রিক্রুটিং এজেন্ট। প্রতাপশালী এজেন্টের সামনে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রনালয়ও রীতিমত অসহায় হয়ে আছেন। বিজয়নগরস্থ ‘মেসার্স প্যাট্রিয়ট ইন্টারন্যাশনাল’ নামক ওই রিক্রুটিং এজেন্ট এখন বলছেন, মেয়েটি একাধিক হাতে কেনাবেচার পর এখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। কিন্তু বৈধ ভিসায় পাঠানো বাঙালি নারী কেন একাধিক হাতে ক্রয় বিক্রয়ের শিকার হবেন? সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্ট এখন খুঁজে বেড়াচ্ছেন দালাল নামক সাব এজেন্টদের। যাতায়াতের যাবতীয় খরচ দিলে তবেই তারা সোখানুরকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পারবেন। এজেন্টের এ দাবিকে সমর্থন দিয়ে সিনিয়র সহকারী সচিবও টাকার জোগান দিতে পরামর্শ দেন।

তখন বাধ্য হয়েই সোখানুরের বাবা মা জায়গা জমি বিক্রি করে বিমান টিকিট বাবদ খরচের টাকা তুলে দিয়েছে এজেন্টের হাতে, তবুও চলছে নানারকম টালবাহানা। বরং প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রনালয়ে অভিযোগ করায় ও রিক্রুটিং এজেন্ট অফিসে চাপাচাপি করার কারণে সোখানুরসহ আটকে পড়া নারীদের উপর ভযাবহ শারিরিক নির্যাতন চালানো হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে। তথ্যসূত্র জানিয়েছে, সেখানে কেবলই সোখানুর একা নয়, তার মতো এক ডজনেরও বেশি নারী অভিন্ন স্টাইলে বন্দী হয়ে পড়েছেন, শিকার হচ্ছেন সীমাহীন বর্বরতার।

হতভাগ্য নারী পুরুষ সকলেই প্যাট্রিয়ট ইন্টারন্যানাল রিক্রুটিং এজেন্টের মাধ্যমে জর্ডান গিয়েই ভয়াবহ বিপাকে পড়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদিকে অভিযুক্ত রিক্রুটিং এজেন্ট প্যাট্রিয়ট ইন্টারন্যশনালের বিরুদ্ধে বৈধ ভিসার আড়ালে আদম পাচারসহ এন্তার অভিযোগ রয়েছে। মারাত্মক সব অভিযোগে ইতিপূর্বে প্যাট্রিয়টের এজেন্সী লাইসেন্স স্থগিত ঘোষণা করা হলেও অদৃশ্য ইশারায় পূণরায় তার ব্যবসা চালানোর সুযোগ পায়।


আরো পড়ুন