• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৫৭ অপরাহ্ন

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে গেলো কৃষকদের

/ ৯২ বার পঠিত
আপডেট: বুধবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২২

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে এবং অতিবৃষ্টিতে সাগরপাড়ের গ্রামগুলোর কৃষকরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কারণ তাদের বছরের একমাত্র ফসল আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। এই পরিস্থিতি অনিশ্চয়তায় ফেলে দিয়েছেন কৃষকদের।

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার একটি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, আমন ধানের বিস্তীর্ণ সবুজ মাঠ পানিতে তলিয়ে গেছে। গ্রামটিকে রক্ষার জন্য সাগরের ধার দিয়ে বেড়িবাঁধ রয়েছে। কিন্তু তাতে রক্ষা পায়নি ফসলের মাঠ।

প্রত্যন্ত গ্রামটির একজন কৃষক আবুল বাশার হাওলাদার ছয় বিঘা জমিতে আমন ধানের আবাদ করেছেন। তার পুরো আবাদই পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়া তার দুই বিঘা জমিতে টমেটোসহ বিভিন্ন ধরনের সবজির পুরোটাই নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘সোমবার একদিনেই রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে। আমার জমিতে আমন ধান যখন বের হচ্ছে, তখন পানিতে তলিয়ে যাওয়ার ফলে এগুলো চিটা হয়ে যাবে। মানে তাতে চাল হবে না। আমি এখন নিরুপায়’

৫৫ বছর বয়সী হাসিনা বেগম বলেন, এবারের ঘূর্ণিঝড় বেশি শক্তিশালী হবে না, তা আমি আগে থেকে বুঝতে পেরেছিলাম। এ জন্য বাড়ি থেকে তিন কিলোমিটার দূরের আশ্রয়কেন্দ্রে যাননি। ’ বাড়িতে টিনের বেড়া এবং টিনের ছাউনি দেওয়া কয়েকটি ঘরের একটিতে হাসিনা বেগম তার নাতি-নাতনিসহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঝড়ের মধ্যে অবস্থান করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের এলাকায় এবারের ঝড়ে কোনো মানুষ মারা যায়নি। কিন্তু জমির ফসলের অনেক ক্ষতি হয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা এ আর এম সাইফুল্লাহ জানান, উপজেলাটিতে কিছু জমিতে আমন ধান পাকার আগের অবস্থায় রয়েছে। কিছু আছে গাছে ধান বেরুনোর অপেক্ষায়, আর কিছু জমিতে ধানের ফুল এসেছে। তিনি জানান, আমনের ফুল এসেছে, এমন ফসল কিছু অতিবৃষ্টিতে নষ্ট হয়েছে। এরসঙ্গে কিছু শাকসবজির ক্ষতির আশঙ্কা আমরা করছি।

এদিকে ঝড়ে বেশ ক্ষতি মাছের। কলাপাড়ার দু’টি গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি পরিবারই জমিতে আবাদের পাশাপাশি ছোট ছোট পুকুরে মাছ চাষ করে থাকেন। এমন একজন মাছ চাষী আল-আমীন হাওলাদার। তিনি পাঁচটি পুকুরে মাছ চাষ করেন। তিনি জানান, এই মাছ চাষ করেই তিনি সংসারের চালাচ্ছেন পাঁচ বছর ধরে। এখন চাষের মাছ ভেসে যাওয়ায় তিনি অসহায় হয়ে পড়েছেন।

কলাপাড়াসহ পটুয়াখালী অঞ্চলের মানুষ বছরে একটিমাত্র ধানের আবাদ করে থাকেন। আমন ছাড়া বোরো বা অন্য কোনো ধান তাদের এলাকায় হয় না। এই আমন ধানই তাদের সারাবছরের চালের চাহিদা মেটায়। সেই আমন নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এখন তারা বিপদে আছেন।


আরো পড়ুন