• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১১:০৫ অপরাহ্ন

মাধবদীতে ইউপি মেম্বার সুদী হকুলের সুদী টাকার অত্যাচারের কবলে এলাকাবাসী!!

/ ৪২৩ বার পঠিত
আপডেট: মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৯

অনলাইন ডেস্ক:- নরসিংদী সদর উপজেলার মাধবদীতে নুরালাপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য ফখরুল ইসলাম। এলাকাবাসীর কাছে তিনি পরিচিত সুদী (সুদখোর) হকুল মেম্বার হিসেবে। সুদের ব্যবসা সংক্রান্ত ব্যাপারে প্রায়ই তার নেতৃত্বে সদলবলে এলাকায় বিভিন্নজনের উপর হামলা, মামলাসহ ভয়ভীতি প্রদর্শন ও বাড়ীঘর ভাংচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও নানা অপকর্মের সাথে সে জড়িত বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। তার এবং তার বাহিনীর ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। কেউ মুখ খুললেই তার দ্বারা নানান অত্যাচারের শিকার হতে হয়।

সরেজমিনে ঘুরে সত্যতা পাওয়া গেছে হকুল বাহিনীর অত্যাচারের। সাংবাদিক কাছে একে একে মুখ খোলেন এলাকাবাসী। গত ৩০ অক্টোবর বুধবার রাতে নুরালাপুর ইউনিয়নের কান্দাপাড়া এলাকায় কয়েকটি বাড়িতে ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জন্য হকুল মেম্বারের লোকজনকেই এলকাবাসী দায়ী করছে। এ ঘটনার এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও আতঙ্ক কাটেনি ভুক্তভোগী পরিবারের।

প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী জানান, ঘটনার রাতে কান্দাপাড়া এলাকার মানিক মিয়া ও জুলহাস মিয়ার বাড়িসহ উজ্জলের মুদির দোকান ও ছাত্র কল্যাণ সমিতির আসবাবপত্র ভাংচুর চালিয়ে লুটপাট চালায় হকুল বাহিনী। হামলাকারী ও লুটেরাদের দলে ছিলো হকুলের ছোট ভাই সাগর গং, একই গ্রামের আহসানউল্লার তিন ছেলে সোহেল, রুবেল, পাবেল, মস্তাফিজুর রহমানের ছেলে রনি ও জনি, হাবু মিয়ার ছেলে দৌলত বাদশাহ, মতি মিয়ার ছেলে আসিফ, আবুলের ছেলে কাউসার সহ অজ্ঞাত নামা আরো ১০/১৫ জন যুবক। এ ঘটনায় সুদী হকুল মেম্বার নিজেই নেতৃত্ব দিয়েছেন বলে জানান ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা।

এদিকে, ভুক্তভোগীর স্বজনরা জানায়, গত ৩০ অক্টোবর হকুল মেম্বারের উকিল জামাই রুবেল এর সাথে একই এলাকার মানিকের ভাতিজা শাহিন ও তার ভাই মামুনের রং দেয়ার কাজ নিয়ে নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। পরে ঐদিন সন্ধ্যায় মেম্বারের দলবল নিয়ে এসে মৃত তাইজুলের ছেলে মানিকসহ তার তিন ভাইয়ের বাড়িতে হামলা চালায়। এতে মানিকের ভাতিজা মামুনকে পিটিয়ে আহত করে হকুল বাহিনীর লোকজন। তাদের তান্ডবের পর থেকে বাড়িতে কেউ থাকতে পারছেনা এমনকি ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা স্কুলেও যেতে পারছেনা। এ খবর পেয়ে সাংবাদিকরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আসলে হকুল মেম্বারের ভাই সাগর দলবল নিয়ে ভুক্তভোগীদের বাড়িতে পুনরায় ভাংচুর করে। পরে (৪ নভেম্বর) সোমবার রাতে উজ্জলের মুদি দোকানটি আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়।

এব্যাপারে অভিযুক্ত হকুল মেম্বার জানায়, তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। মানিক ও তার বংশের সবাই ডাকাত দলের সদস্য। আমি এ ঘটনার মিমাংসা করতে গেলে মানিক ও মামুন রাম দা নিয়ে আসে। তা দেখে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। পরে আমি ভয়ে পুলিশ ও চেয়ারম্যানকে খবর দেই। তাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।

নুরালাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ফয়সাল ভূইয়া জানান হকুল সুদের ব্যবসা করে ঠিক আছে, তবে তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নাই। তার ভয়ে কান্দাপাড়া এলাকায় কেউ আতঙ্কে আছে বলে তা জানা নাই। তিনি গত ৩০ অক্টোবরের ঘটনার বিবরণ দিয়ে বলেন, কান্দাপাড়া এলাকায় মানিক মিয়ার সাথে দ্বন্দ্ব বাজে ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার ফখরুলের লোকজনের। এঘটনার মিমাংসায় বসলে উভয় পক্ষের মাঝে হাতা-হাতি হয়, এসময় ফখরুল মেম্বারকে রামদা নিয়ে হত্যার উদ্যেশে তেড়ে আসে তাদের প্রতিপক্ষ। তাদের কাছে প্রায় ১১টা রাম দা ছিলো বলে অভিযোগ করে ফখরুল মেম্বার। পরে ঐদিন রাতে সমাঝোতা করার জন্য ইউপি চেয়ারম্যান নিজেও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। কিন্তু দুই পক্ষের উত্তেজনার কারনে বিষয়টি মিমাংসায় জটিলতা দেখা দেয়। এসময় ফখরুলের লোকজন পাশের একটি সমিতি ও একটি টিনের ঘরে আঘাত করে। পরে তাৎক্ষনিক আইনের সহযোগিতা নেয়া হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিবেশ শান্তু করে বলে জানান চেয়ারম্যান।

মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু তাহের দেওয়ান জানান, এ ঘটনায় থানায় দুটি অভিযোগ করা হয়েছে। উভয় অভিযোগের সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরো পড়ুন