• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:০৫ অপরাহ্ন

জনপ্রিয় হচ্ছে হাইব্রিট মেটে আলুর চাষ

/ ১২৩ বার পঠিত
আপডেট: বুধবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২
জনপ্রিয় হচ্ছে হাইভিটের মেটে আলুর চাষ

নওগাঁ প্রতিনিধিঃ
নওগাঁয় জনপ্রিয় হচ্ছে হাইব্রিট মেটে আলুর চাষ। জেলায় এ সবজিটি গাছ আলু নামেও পরিচিত। মাটির নিচের পাশাপাশি এই গাছের লতায়ও আলু উৎপন্ন হয়। চল‌তি মৌসু‌মে মান্দা উপজেলায় ৬ একর জমিতে এই হাইব্রিট মেটে আলুর চাষ হ‌য়ে‌ছে। এ উপজেলায় আবহাওয়া মেটে আলু চাষের উপযোগী হওয়ায় ফলনও ভালো হবে বলে আশা করছেন কৃষিকেরা।


জেলার কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলার নিচু এলাকা ছাড়া প্রায় সব এলাকায় কম বেশি মেটে আলুর চাষ হয়েছে। যার পরিমাণ এক‌শ হেক্টর জমি। কৃষকরা মূলত দেশীয় নানা জাতের মেটে আলুর চাষ করেন।
উপজেলার শামুকখোল, গাইহালা ও কুসুম্বাসহ গ্রামের বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকেরা ব্যাপকভাবে মেটে আলুর চাষ করেছেন। অধিকাংশ জমিতেই মাচায় চাষ করা হয়েছে। এর জন্য নতুন করে কোনো মাচা তৈরি করতে হয়নি কৃষকের। মেটে আলু রোপণের আগে ওই জমিতে ঝিঙে কিংবা উচ্ছে চাষ করেছেন কৃষক। এ সব ফসল উঠে যাওয়ার পর মেটে আলু চাষ হচ্ছে।


বর্তমানে প্রতিটি মাচায় মেটে আলুর সবুজ পাতা আর আঁকাবাকা লতা এক অপরূপ সৌন্দর্যের সৃষ্টি করেছে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় এটি গড় আলু, গুইচ্যা আলু, লেমা আলু, ধুসড়ী আলু, আলতাপাট, চুবড়ি আলু, হরিণখালি, মাছরাঙ্গা, হাতিপায়া, মৌ প্রভৃতি নামে পরিচিতি লাভ করলেও মূলত এর ৪ থেকে ৫টির মতো জাত আছে বলে জানা গেছে।
কৃষকরা বলেন, বৈশাখ কিংবা জ্যৈষ্ঠ মাসে জমিতে মেটে আলুর বীজ রোপণ করতে হয়। ওই সময়ে জমিতে উচ্ছে কিংবা ঝিঙের চাষ থাকে। এই ফসল মরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মেটে আলুর লতা মাচায় (বানে) উঠিয়ে দিতে হয়। কোনো সার বা বিষ ছাড়াই শীতের শুরুতে আলু উঠতে শুরু করে। পোকা মাকড়ের উৎপাত কম, সে কারণে কীটনাশক ব্যবহার করা লাগে না। বিঘা প্রতি খরচ হয় ১০-১২ হাজার টাকা। ভালো ফলন হলে বিঘা প্রতি ৬০-৭০ হাজার টাকার আলু বিক্রি করা সম্ভব।


মান্দা উপজেলার সামুককল গ্রামের মেটে আলু চাষি বিমল চন্দ্র, ও শ্রী মুক্তা রানী বলেন, এবছর আমি ২৫ শতক জমিতে গাছো গড়াআলু চাষ করেছি। আর কয়েক দিনের মধ্যে বাজারে ‍উঠানো শুরু করবো পাইকারী ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হবে, এবং এই গড়াআলু চাষে আমি লাভবান হবে ।


দেলুয়াবাড়ি গ্রামের মেটে আলু চাষি কুবাদ আলী বলেন, আমার ২ বিঘা জমিতে গাছো গড়াআলু চাষ করেছি। চারা রোপনের ৩ মাসের মধ্যেই এই গড়াআলু পাওয়া যায়। কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ দিয়ে গাছের পোকার উপদ্রব দমন করেছি। আর কয়েক দিনের মাথায় বাজারে বিক্রি করা শুরু করবো । উপজেলার কুসুম্ভা গ্রামের চাষি আজিজুল হক বলেন, আমার ২ বিঘা জমিতে উন্নত জাতের মেটে আলু চাষ করেছি। এ সপ্তাহের মধ্যে বাজারে উঠানো শুরু করবো। আশা করছি বাজার দর ভালো থাকলে ৬০ হাজার টাকার মতো লাভ করতে পারবো।


স্থানীয় উপসহকারী কৃষি অফিসার সহিদুল ইসলাম বলেন, এবছর আবহাওয়া ভালো থাকায় ভালো ফলন হয়েছে। বাজারে ভালো দামও রয়েছে। আমরা মাঠপর্যায়ে গাছো মেটে আলু চাষিদের পরামর্শ ও সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি।
নওগাঁর মান্দা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ডা. শায়লা শারমিন বলেন, “মেটে আলু চাষে ব্যয় ও পরিশ্রম দুটোই অন্য যে কোনো ফসলের চেয়ে কম। সে কারণে দিন দিন কৃষকের কাছে মেটে আলুর চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।”


আরো পড়ুন