• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৪৯ অপরাহ্ন

আধিপত্য বিস্তার’কে কেন্দ্র করে নির্মম ও নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা মামলার প্রধান আসামী সাহাব উদ্দিন আটক

/ ৯৪ বার পঠিত
আপডেট: বুধবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২

ডেস্ক রিপোর্টঃ

চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড এলাকায় আধিপত্য বিস্তার’কে কেন্দ্র করে মেম্বারের ছোট ভাইকে নির্মম ও নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা মামলার প্রধান ও ১ নং এজহারনামীয় আসামী সাহাব উদ্দিন’কে আটক করেছে চট্টগ্রাম র‍্যাব-৭ । নিহত ভিকটিম মুমিনুল হক পেশায় একজন কৃষিজীবি এবং গরু ব্যবসায়ী ছিলেন। তার ভাই আকবর হোসেন চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড থানাধীন মুরাদপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের নির্বাচিত মেম্বার। তাদের এলাকায় কতিপয় ব্যক্তি মাঝে মধ্যেই বিভিন্ন প্রকার অপকর্ম করত। নিহত ভিকটিমের ভাই ওয়ার্ড মেম্বার হওয়ায় ভিকটিম ও তার ভাই দুজনেই উক্ত অপকর্মকারী ব্যক্তিদের অসাধু কার্যকলাপে বিভিন্ন সময় বাধা প্রদান করত। এরুপ বাধা প্রদানের জন্যই উক্ত দুস্কৃতিকারীদের কাছে ভিকটিম মুমিনুল ও তার ভাই শত্রুতে পরিণত হয়। এই নিয়ে দুস্কৃতিকারীদের সাথের নিহত ভিকটিম মুমিনুল ও তার ভাইয়ের সাথে বিরোধ চলে আসছিল এবং কিছুদিন পূর্বে উক্ত দুস্কৃতিকারীদের বিভিন্ন অপকর্মের বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে নিহত ভিকটিম মুমিনুল হকের সাথে বাকবিতন্ডা হয় ও তাকে বিভিন্ন রকম হুমকিও প্রদান করে।

গত ২৯ জুন ২০২২ খ্রিঃ তারিখ নিহত ভিকটিম মুমিনুল হক তার ছেলে ও ভাতিজাসহ গরু ক্রয়ের উদ্দেশ্যে মুরাদপুরস্থ ফকিহাট বাজারে যায়। সেখানে দরদাম মত গরু কিনতে না পারায় তারা ঐদিন বিকেলে একটি অটোরিক্সা যোগে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পথিমধ্যে তারা মুরাদপুরস্থ আমিন মোহম্মদ সী-রোডে নতুন গ্যাস অফিসের সামনে পৌছালে ০৪টি সিএনজি নিয়ে এসে দুস্কৃতিকারীরা পরিকল্পিতভাবে তাদের অটোরিক্সার গতিরোধ করে। তখন নিহত ভিকটিম মুমিনুল হক তার ছেলে ও ভাতিজাসহ সবাই তাদেরকে জিজ্ঞাসা করতে থাকে কেনো তাদের পথ আটকানো হয়েছে। সে সময় অন্য একটি সিএনজি থেকে নেমে এসে জৈনিক এক ব্যক্তি বলে অটোরিক্সার ভিতরে মুমিনুল বসা আছে তাকে মেরে ফেল। একথা বলার সাথে সাথে দুস্কৃতিকারীরা তাদের হাতে থাকা দেশী ধাড়ালো অস্ত্র ছুড়ি, রাম দা, খুর, চাকু ও ক্রিস দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে মুমিনুল হকের শরীরে বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপরি আঘাত করে। এসময় মুমিনুল হক গুরুতর আহত হয়ে রাস্তার উপর লুটিয়ে পরে তখন দুস্কৃতিকারীরা মুমিনুলের পরিহিত শার্টের পকেট ও লুঙ্গির ভিতরে থাকা নগদ ০১ লক্ষ ৪৬ হাজার টাকা এবং একটি মোবাইল নিয়ে পালিয়ে যায়।

পরবর্তীতে মুমিনুল হককে গুরুতর আহত ও রক্তাক্ত জখম অবস্থায় তার ছেলে, ভাতিজা মিলে আশপাশের লোকজনের সহযোগীতায় তাকে প্রথমে সীতাকুন্ড সেবা ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসা জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করে। এ বিষয়ে নিহত ভিকটিম মুমিনুল হকের ছেলে আলী হোসেন সবুজ বাদী হয়ে গত ০১ জুলাই ২০২২ খ্রিঃ তারিখ চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড থানায় ০৮ জন নামীয় এবং ০৯/১০ জনকে অজ্ঞাতনামা করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে যার নং- ০১ জুলাই ২০২২ খ্রিঃ, ধারা-৩৪১/৩০২/৩৭৯/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০।

এই মামলাটি রুজু হওয়ার পর থেকেই উক্ত ঘটনার সাথে জড়িত পলাতক আসামীদের গ্রেফতার করার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম র‍্যাব-৭ গোয়েন্দা নজরদারী শুরু করে। নজরদারীর এক পর্যায়ে র‍্যাব-৭, চট্টগ্রাম জানতে পারে, উক্ত হত্যা কান্ডের মূল পরিকল্পণাকারী ও এজাহারনামীয় ১নং প্রধান আসামী মোঃ সাহাব উদ্দিন চট্টগ্রাম মহানগরের চকবাজার এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র‍্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল অদ্য ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২২খ্রিঃ তারিখ বর্ণিত এলাকায় ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করে আসামী মোঃ সাহাব উদ্দিন (৩৪), পিতাঃ নুরুজ্জামান প্রকাশ লাতু, গ্রামঃ হাসানাবাদ, থানাঃ সীতাকুন্ড, জেলাঃ চট্টগ্রাম‘কে আটক করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামী অকপটে স্বীকার যে, সে উপরে উল্লেখিত আকবর আলী মেম্বারের ছোট ভাই মুুমিনুল হককে নির্মম ও নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা মামলার মূল পরিকল্পণাকারী ও এজাহারনামীয় ১নং প্রধান পলাতক আসামী।

উল্লেখ্য যে, সিডিএমএস পর্যালোচনা করে ধৃত আসামী মোঃ সাহাব উদ্দিন এর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড থানায় হত্যা, হত্যা-চেষ্টা, মারামারি, চুরি এবং ছিনতাইসহ সর্বমোট ৪টি মামলা পাওয়া যায়। গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।


আরো পড়ুন