আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
অবশেষে কারাগারেই যেতে হলো মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাককে। উচ্চ আদালতে আপিল খারিজ হওয়ার পর মঙ্গলবার তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে ২০২০ সালে দুর্নীতির দায়ে তাঁকে ১২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। খবর বিবিসির।
মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রীয় তহবিল ওয়ান মালয়েশিয়া ডেভেলপমেন্ট বেরহাদের (ওয়ানএমডিবি) কোটি কোটি মার্কিন ডলারের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অপরাধে তাকে এই দণ্ড দেয়া হয়। একই সঙ্গে তাঁকে প্রায় ৫ কোটি মার্কিন ডলার জরিমানাও করা হয়েছিল।
উচ্চ আদালত রাজাকের সাজা বিলম্বিত করার অনুরোধও প্রত্যাখ্যান করেছেন। ২০২০ সালে ওই দণ্ড ঘোষণার পর উচ্চ আদালতে আপিল করেছিলেন তিনি। আপিলের সময় জামিনে বেরিয়ে আসেন। শুরু থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন রাজাক।
ওয়ানএমডিবি দুর্নীতির মামলার সাত অভিযোগের সবগুলোতে নাজিব রাজাককে দোষী সাব্যস্ত করেন মালয়েশিয়ার আদালত। প্রতিটি অভিযোগের জন্য আলাদাভাবে সাজা ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে ক্ষমতার অপব্যবহারের দায়ে একটি অভিযোগে নাজিবকে ১২ বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া দায়িত্বে থেকে অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গের তিনটি অভিযোগের প্রতিটিতে তাঁকে ১০ বছর করে এবং মুদ্রা পাচারের তিনটি অভিযোগের প্রতিটিতে ১০ বছর করে সাজা দেওয়া হয়। রায়ে বলা হয়, নাজিবের সব কটি ধারার সাজা একসঙ্গে কার্যকর হবে। ফলে সব মিলিয়ে সর্বোচ্চ ১২ বছর জেল খাটতে হবে তাঁকে।
এদিকে নাজিবের স্ত্রী রোসমাহ মানসোর অর্থ পাচার ও কর ফাঁকির অভিযোগের মুখোমুখি হলেও তাঁর দোষ প্রমাণিত হয়নি। তবে শিগগিরই আবার একটি সৌর হাইব্রিড প্রকল্পের সঙ্গে সম্পর্কিত দুর্নীতির অভিযোগের মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাঁকে। আগামী ১ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট এই মামলার রায় দেবেন।
২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য ওয়ানএমডিবি নামে এই সার্বভৌম ফান্ড প্রতিষ্ঠা করেছিলেন নাজিব নিজেই। বিদেশে অংশীদারির ব্যবসা ও বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি ত্বরান্বিত করতেই এটা প্রতিষ্ঠা করা হয়। কিন্তু দুর্নীতি এর তহবিলকে একদম শেষ করে ফেলে। ওয়ানএমডিবি থেকে সাড়ে ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার আত্মসাতের অভিযোগে আরও বেশ কয়েকটি ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ রয়েছে নাজিবের বিরুদ্ধে। আইনজীবীদের অভিযোগ, নাজিব ওই রাষ্ট্রীয় তহবিলের ১০০ কোটি ডলারের বেশি অর্থ নিজের ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবে সরিয়ে নেন।
সাবেক রাজনৈতিক শিষ্য নাজিবের দুর্নীতিতে ক্ষুব্ধ হয়ে মালয়েশিয়ান ইউনাইটেড ইন্ডিজেনাস পার্টি গঠন করে আনোয়ার ইব্রাহিমের দল পিপলস জাস্টিস পার্টির সঙ্গে জোট বেঁধে ২০১৮ এর নির্বাচনে সফল হয়েছিলেন মাহাথির। দায়িত্ব নিয়ে নাজিবের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মাহাথির।