• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৩৩ অপরাহ্ন

অলোচিত সেই শিক্ষিকার মৃতদেহ উদ্ধার

/ ১৩৩ বার পঠিত
আপডেট: রবিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২২

সেন্ট্রাল ডেস্কঃ

কলেজছাত্রকে বিয়ে করে অলোচিত সেই শিক্ষিকা খাইরুন নাহারের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। খাইরুন নাহারের স্বামী মামুনের দাবি, শিক্ষিকা ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মামুনকে আটক করে নাটোর থানায় নিয়ে এসেছেন।

রবিবার সকালে নাটোর শহরেরবলারী পাড়া এলাকার সাবেক কমিমশনার নান্নু শেখের বাড়ির চারতলা ফ্লাট থেকে খায়রুন নাহারের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

খায়রুন নাহার স্বামী মামুনকে নিয়ে ওই বাসায় ভাড়া থাকতেন। খারুন নাহারের স্বামী মামুন বলেন, ‘রাত ২টার দিকে খায়রুন নাহার খুব অসুস্থ বোধ করলে আমি ওষুধ নিতে হাসপাতালে যাই। ফিরে এস দেখি দরজা খোলা। তখনই আমার আশঙ্কা জাগে। বেড রুমে ঢুকে দেখি খায়রুন নাহার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে সিলিংয়ের সঙ্গে ঝুলছে। আমি তাকে নামানোর জন্য বটির খোঁজে রান্না ঘরে যাই। কিন্তু বটি না পেয়ে লাইটার জ্বালিয়ে ওড়নায় আগুন ধরিয়ে দেই। ওড়না অর্ধেক পুড়ে গেলে টান দিয়ে ছিঁড়ে তার দেহ নামিয়ে খাটে শুইয়ে দেই। এরপর দৌড়ে গিয়ে আমি নিচতালায় নাইট গার্ড নিজাম উদ্দিনকে খবর দেই। ফিরে এস দিখি সে মারা গেছে। ’ তিনি আরো বলেন, অনেক রাত হওয়ায় আমি পাশের ফ্লাটের কাউকে ডাকিনি।

নাইট গার্ড নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘শনিবার রাত ১১টার দিকে বাসায় ঢোকেন মামুন। আবার রাত আড়াইটার দিকে বের হন। কেন বের হচ্ছেন- জানতে চাইলে মামুন বলেন, ওষুধ কিনতে যাচ্ছি। পরে সকাল ৬টার দিকে মামুন আবার ফেরেন।’

নিজামুদ্দিন বলেন, ‘বাসায় ফেরার পর মামুন আমাকে ডাকেন। আমি চার তলায় গিয়ে দেখি, খাইরুন নাহারের লাশ ঘরের মেঝেতে।’

প্রতিবেশী ও শিক্ষিকার আত্মীয়-স্বজনদের কেউ কেউ দাবি করছেন- এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।

শিক্ষিকার চাচাতো ভাই সাবের হোসেন বলেন, ‘সকালে একটা ফোন আসে, আমার বোন নাকি আত্মহত্যা করেছে। খবর শুনেই গুরুদাসপুর থেকে নাটোরে আসি। এসে দেখি, বোনের মরদেহ ঘরের মেঝেতে পড়ে আছে। মরদেহের গলায় বেশ কিছু দাগ। মনে হচ্ছে, ঘটনাটি আত্নহত্যা নয়, পরিকল্পিত খুন। আমরা এ ঘটনার বিচার দাবি করছি।’

নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, ‘এই দম্পতির খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা হয়। এই সমালোচনার কারণেই খাইরুন নাহার আত্নহত্যা করেছেন কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে ঘটনাটির তদন্ত করছে।’

সহকারী অধ্যাপক খায়রুন নাহার গুরুদাসপুর উপজেলার চাঁচকৈড় পৌর এলাকার মো. খয়ের উদ্দিনের মেয়ে। তার স্বামী মামুন হোসেন একই উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের পাটপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে ও নাটোর নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

এর আগে এক ছেলের জননী খায়রুন নাহারের ডিভোর্স হয়েছিল আগের স্বামীর সঙ্গে। পরে ছয় মাসের প্রেমের পর গত বছরের ১২ ডিসেম্বর কাজী অফিসে গিয়ে মামুনকে বিয়ে করেন। বিয়ের ৬ মাস পর গত জুলাই মাসে ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে বেশ আলোচনা-সমালোচনা হয়।

এরপর রবিবার ভোরে ভাড়া বাসা থেকে খায়রুন নাহারের মরদেহ উদ্ধার করা হলো।


আরো পড়ুন