• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:১৬ পূর্বাহ্ন

চাকরি না ছাড়ায় নববধূকে গলা কেটে হত্যা

মোঃ জীবন আহমেদ ফারুক, স্টাফ রিপোর্টার / ১২৩ বার পঠিত
আপডেট: বৃহস্পতিবার, ২৮ জুলাই, ২০২২

মানিকগঞ্জ এর ঘিওর উপজেলায়, সুমি আক্তার ও মো. রাসেল মোল্লা ওরফে রূপকের বিয়ে হয়েছিল মাত্র আড়াই মাস আগে। কথা ছিল বিয়ের পরও সুমি চাকরি করবেন। কিন্তু বিয়ের পর রূপক ও তাঁর পরিবার তাঁকে চাকরি ছাড়তে চাপ দিতে থাকে। সুমি চাকরি ছাড়তে না চাওয়ায় শেষ পর্যন্ত তাঁকে হত্যা করেন স্বামী রূপক।

আজ বুধবার রাজধানীর মালিবাগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গ্রেপ্তার রূপকের দেওয়া স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে এ তথ্য জানায় সিআইডি।

আজ বুধবার দুপুরে মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মানিকগঞ্জের ঘিওরে নববধূর গলা কেটে হত্যা মামলার আসামি স্বামী মো. রাসেল মোল্লা ওরফে রূপক গতকাল মঙ্গলবার গভীর রাতে ধরা পড়েন সিআইডির হাতে। সিআইডির এলআইসি শাখার একটি দলের অভিযানে রূপককে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান।
সি আই ডি জিজ্ঞাসাবাদে রূপকের দেওয়া স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির এলআইসি শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরী ইউনিয়নের কাকজোর গ্রামের সুমি আক্তারকে (২২) বিয়ে করেন পার্শ্ববর্তী শোলধারা গ্রামের মো. রাসেল মোল্লা ওরফে রূপক (২৮)।

প্রায় আড়াই মাস আগে উভয় পরিবারের সম্মতিতে গত ১৫ মে তাঁদের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় কথা ছিল, বিয়ের পরও সুমি চাকরি করবেন। কিন্তু বিয়ের পর সুমির চাকরি ছাড়ার বিষয় নিয়ে দফায় দফায় ঝামেলা তৈরি হয় স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে। এ ঘটনার জেরে গত ২১ জুলাই রূপকের সঙ্গে সুমির কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে রূপক সুমিকে মারধর করেন। একপর্যায়ে রূপক সুমি আক্তারকে কিল-ঘুষি ও লাথি মারতে থাকলে রূপকের মা রওশন আরা বেগম তাঁকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু রূপক আরও বেশি উত্তেজিত হয়ে ঘরে থাকা ধারালো দা দিয়ে সুমির গলায় কোপ দিয়ে জখম করলে,
তিনি মারা যান। সুমির মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত পালিয়ে যান রূপক।

ঘটনার পরদিন নিহত সুমির বাবা রহম আলী (৬০) রূপককে একমাত্র অভিযুক্ত করে মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এ মামলার পর ছায়া তদন্ত শুরু করে সিআইডি। সর্বশেষ গতকাল ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ থানা এলাকা থেকে রূপককে গ্রেপ্তার করে সিআইডি।

জানা গেছে, মানিকগঞ্জ জজ কোর্টে অ্যাডভোকেটের সহকারী হিসেবে রূপক প্রায় নয় বছর ধরে কাজ করতেন। আড়াই মাস আগে উভয় পরিবারের সম্মতিতে সুমির সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের আগে থেকেই সুমি আক্তার এসডিআই নামের একটি বেসরকারি সংস্থায় বানিয়াজুরী ইউনিয়নে মাঠকর্মী হিসেবে কাজ করতেন। বিয়ের সময় কথা ছিল, সুমি আক্তার বিয়ের পরও চাকরি করবেন। কিন্তু বিয়ের পর স্বামীর পরিবারের সদস্যদের মত পাল্টে যায়।

এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান বলেন, ‘বিয়ের মাত্র আড়াই মাসের মাথায় চাকরি নিয়ে সৃষ্ট দাম্পত্য কলহের জেরে নববধূ সুমি আক্তারকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় একমাত্র এজাহারনামীয় আসামিকে দ্রুততম সময়ে গ্রেপ্তার বাংলাদেশ পুলিশের একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন।


আরো পড়ুন