• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৪২ অপরাহ্ন

লক্ষ্মীপুরে শিশু হত্যায় সৎবাবার যাবজ্জীবন! 

অ আ আবীর আকাশ, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি / ১৩৭ বার পঠিত
আপডেট: মঙ্গলবার, ২৬ জুলাই, ২০২২

লক্ষ্মীপুরে মামুন নামের ১২ বছরের এক শিশুকে হত্যার দায়ে তার সৎবাবা মো. মাকসুদ ওরফে মাসুদকে (৩২) যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের রায় দিয়েছে আদালত।
একই সাথে তার ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদণ্ডের রায় প্রদান করা হয়। মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় প্রদান করেন। রায় প্রদানের সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। মাসুদ নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আলাইয়ারপুর ইউনিয়নের চৌপল্লী গ্রামের হাসান চৌকিদারের ছেলে।
নিহত শিশু মামুন দণ্ডপ্রাপ্ত মাসুদের দ্বিতীয় স্ত্রীর প্রথম সংসারের সন্তান। দাম্পত্য বিরোধকে কেন্দ্র করে ২০১৮ সালের ২১ জানুয়ারি রাতে মামুনকে নাকমুখ চেপে ধরে হত্যা করে মৃতদেহ নালায় ফেলে রাখে সৎবাবা মাসুদ।
হত্যার ঘটনায় মামুনের মা রাহেনা বেগম সুমি বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মাসুদ তার সৎছেলে মামুনকে হত্যার ঘটনা স্বীকার করে। ওই মামলায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার টুমচর ইউনিয়নের টুমচর গ্রামের ৪নং ওয়ার্ডের মৃত কলিম উল্যার মেয়ে রাহেনা বেগম সুমির সাথে বরিশালের আবু ছিদ্দিক নামে এক ব্যক্তির সাথে বিয়ে হয়। ওই সংসারে সুমন ও মামুন নামে তার দুই শিশুপুত্র ছিলো। সাংসারিক বনিবনা না হওয়ায় ২০১২ সালে সুমি এবং ছিদ্দিকের সাথে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে।
পরে সুমি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের আলাইয়ারপুরের বাসিন্দা মো. মাকসুদ ওরপে মাসুদকে বিয়ে করে চট্রগ্রামে বসবাস শুরু করে। সুমির দুই শিশুপুত্র শুরুতে লক্ষ্মীপুরের টুমচরে নানীর বাড়িতে থাকতো। নানী মারা যাবার পর সুমি তাদেরকে চট্রগ্রামে তার কাছে নিয়ে যায়। এনিয়ে তার ২য় স্বামী আবু ছিদ্দিকের সাথে মনোমালিন্য দেখা দেয়। তাই বড় ছেলে সুমনকে অন্যত্র কাজে দিয়ে দেয়, ছোট ছেলে মামুনক তাদের কাছে রাখে।
২০১৮ সালের ২১ জানুয়ারি সুমি তার ছেলে মামুন ও স্বামী মাকসুদকে নিয়ে লক্ষ্মীপুরের টুমচর গ্রামের বাড়িতে আসে। ওইসময় এলাকায় একটি মাহফিল চলছিলো। মাহফিল থেকে যাবার পথে মামুনের সৎবাবা মাসুদ তাকে ডাব খাওয়ানোর কথা বলে একটি নির্জন বাগানে নিয়ে সেখানে নাকমুখ চেপে ধরে হত্যা করে মৃতদেহ নালায় ফেলে রাখে। রাতে সে বাড়িতে গিয়ে অন্যদের সাথে মামুনকেও খুঁজতে থাকে। পরদিন দুপুরে মামুনের মৃতদেহ পাওয়া যায়। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
এ ঘটনায় মামুনের মা সুমি অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করলে পুলিশ সৎবাবা মাসুদকে জিজ্ঞাসবাদ করলে সে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে। ২০১৮ সালের ৩ অক্টোবর পুলিশ মাসুদকে হত্যা মামলায় অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে রায় প্রদান করেন।
জেলা জজ আদালতের সরকারী কৌঁশুলী অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।


আরো পড়ুন