• মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ১১:১৮ পূর্বাহ্ন

স্কুল ছাত্র-ছাত্রী ক্রয় বিক্রয়; স্বামী বাহার ও স্ত্রী নাসরিন পেয়েছেন আলাদ্দিনের চেরাগ!

জুয়েল খন্দকার নিজস্ব প্রতিবেদক / ৩৪৬ বার পঠিত
আপডেট: বুধবার, ২৯ জুন, ২০২২

রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর থানার বড় গ্রামে রাফিউ প্রি-ক্যাডেট এন্ড হাইস্কুলের চাঞ্চল্যকর তথ্য খুঁজতে গিয়ে বেড়িয়ে এলো থলের বিড়াল। আমাদের অনুসন্ধানে বেড়িয়ে আসে একই পরিবারের তিন সন্তান রাফিউ স্কুলে পড়তেন কিন্তু জানা যায় করোনা চলাকালীন লকডাউনেও সরকারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেও স্কুল খোলা রেখে শিক্ষার্থীদের পড়ানোসহ স্কুলে পরীক্ষাও চালিয়েছিলেন এই রাফিউ প্রি-ক্যাডেট এন্ড হাইস্কুল। একই পরিবারের তিন সন্তানের জননী জানান, করোনা কালিন আমার বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাইনি কিন্তু স্কুল থেকে ২/৪ দিন পর পর আমার বাসায় লোক পাঠাতেন উক্ত স্কুলের কর্তৃপক্ষ, যাতে করে আমার বাচ্চাদেরকে স্কুলে পাঠানো হয়। ঠিক পরীক্ষার সময়তেও লোক পাঠানো হয় কিন্তু যেখানে দেশ ভয়াবহ অবস্থায় ও বিশ্ব করোনা মোকাবেলায় হিমসিম খাচ্ছে, সেখানে আমার বাচ্চাদেরকে স্কুলে পাঠাতে সাহস পাইনি কিন্তু সরকার অটোপাশ দিলেও এই স্কুলে ফি নিয়ে পরীক্ষা নেয়া হয়েছে।

পরে আমার দুই বাচ্চা অষ্টম শ্রেণি ও এক বাচ্চা ষষ্ঠ শ্রেণিত্র ভর্তি করানোর পর থেকে বাচ্চাদের সাথে শিক্ষক রফিক স্যার ও রিতু ম্যাডামসহ স্কুলের মালিক বাহার ও বাহার স্যারের স্ত্রী নাসরিন ম্যাডাম আমার মেয়েদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতেন, মাঝে মাঝে গায়েও হাত তুলতেন। শুধু তাই নয় বাহার স্যার একদিন বলেন করোনা চলাকালীন বেতন পরিশোধ না করলে দৈহিক ভাবে আদায় করে নেবেন বলে নোংরা ভাষায় গালিগালাজও করেন।

তিন মাস পর বাচ্চাদের পড়িয়ে সাড়া বছরের বেতন ও এক মাস কোচিং করিয়ে তিন মাসের বেতনের দাবী করছেন, স্কুলটির বেতনের কিছু টাকা মওকুফ করতে বললে নাসরিন ম্যাডাম নারাজ হোন ও বিভিন্ন ভাবে হুমকি-দমকি দিতে থাকেন। কমিশনার আমার আত্নীয়, পুরো টাকা পরিশোধ না করলে রেজাল্ট কার্ড ও টিসি কিছুই দেওয়া হবেনা এই কথা বলে আমাকে অনেক গালিগালাজও করেন তিনি।

রাফিউ প্রি-ক্যাডেট এন্ড হাইস্কুলের মালিক বাহার ও স্ত্রী নাসরিন এর বিষয়ে আমাদের কাছে আসলে আমরা মুঠোফোনে নাসরিন ম্যাডামকে ফোন করে বাচ্চারা দেশের বাড়িতে গিয়ে ভর্তি হবে, বাচ্চারাতো করোনা কালিন অনেক বেতন দিয়েছেন এক মাস কোচিং করেছেন তিন মাসের কোচিং এর বেতন চাচ্ছেন, এই কথা বললে তিনি সাংবাদিকদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন একটি টাকাও মওকুফ করা হবেনা। পুরো টাকা দিয়ে রেজাল্ট কার্ড ও টিসি নিতে হবে এক পর্যায়ে তিনি সাংবাদিকদেরকে বোকা বানাতে বলেন তাদেরকে প্রবেশ পত্র দেওয়া হয়েছে সেই প্রবেশ পত্রে রোল নাম্বার ও রেজিস্ট্রেশন নাম্বার দেওয়া আছে তারা চাইলে ভর্তি হতে পারবে ও যে কোন কাজ করতে পারবে বললে আমরা বাচ্চাদের প্রবেশ পত্র চেক করে দেখি সরকারী কোন প্রবেশ পত্র তো থাক দূরের কথা একই স্কুলের ছাত্রীর দুইটি প্রবেশ পত্রে ছাত্রীর নাম দুই রকম একটিতে রোল নাম্বার আছে আরেকটিতে রোল নাম্বার নেই!

শুধু তাই নয় এই স্কুলে শাকিব নামের এক ছাত্রের অভিভাবকদের অভিযোগ, শাকিব এই স্কুলেরই ছাত্র ছিলেন। সপ্তম শ্রেণী পর্যন্ত পড়েও শাকিব বানান করেও পড়তে পারেনা। এই বিষয়ে স্কুলের হেড মাস্টার নাসরিন ম্যামকে জিজ্ঞেস করলে তারা মা-বাবাকে স্কুল থেকে গালাগাল ও নানান হুমকদমকি দিয়ে স্কুল থেকে বাহির করে দেয়। শাকিব এখন কোন স্কুলে ভর্তি হতে পারেনি বলে শাকিব এর পরিবারের অভিযোগ। এই বিষয়ে ইতি মধ্যে গণমাধ্যমে একটি কলরেকর্ড ফাস হয়েছে।

করোনা চলাকালীন সারা বাংলাদেশে স্কুল বন্ধ থাকলেও বন্ধ রাখেনি বাহার ও তার স্ত্রী নাসরিনের অবৈধবাবে গড়ে তোলা রাফিউ প্রি-ক্যাডেট এন্ড হাই স্কুল ও অল সেইন্টস স্কুল। এরা কখন সরকারি নিয়ম কিংবা বিধিবিধান কখনই মানেনি সব সময় ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে বেতন আদায়ের উপরে পরে থাকেন কোন ছাত্র-ছাত্রীর বেতন বকেয়া পরলেই শুরু হয় অমানবিক ভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন।

করোনা চলাকালিন বাংলাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলি যখন বন্ধ রেখে হিমসিম খাচ্ছিলেন ও অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধও হয়ে যায় কিন্তু ঠিক সেই সময়টা কাজে লাগিয়েছেন বাহার ও তার স্ত্রী নাসরিন। ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে বেতন ও কোচিং এর টাকা আদায় করলেও শিক্ষকদের বেতন না দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে একাধিক শিক্ষকের বাহার ও তার স্ত্রী নাসরিন বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয় ভবন মালিককে করোনার দোহাই দিয়ে, করোনার পরেও স্কুল ভালো চলছেনা বলে ভবনের ভাড়া না দিয়ে অন্য ভবনে এই রাফিউ স্কুল নিয়ে যায়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খোলার প্রায় এক বছর পর পর্যন্তও বিভিন্ন সময়ে ভবনের মালিককে হুমকিদমকি দিতেন কথিত কমিশনার তার আত্নীয় এসপি ডিসি ইত্যাদি পরিচয়ে।

করোনা কালিন অনেক স্কুল বন্ধ হয়ে গেলে ছাত্র-ছাত্রী ক্রয় বিক্রয় এর আয়ের উৎসের মাধ্যমে কয়েক কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন ইতিমধ্যে এডিসন ও বিএফএল স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী ও স্কুলের নাম সহ কিনে নিয়েছেন। করোনা কালিন ছাত্র-ছাত্রী ক্রয় বিক্রয়ের টাকা দিয়ে কামরাঙ্গীরচরে একটি বাড়িও করেছেন বাহার ও স্ত্রী নাসরিন। গোপন সূত্রে জানা গেছে, এই বাহারের বিরুদ্ধে ছাত্র বলাৎকারের অভিযোগ রয়েছে কিন্তু ছাত্রের পরিবার অসহায় বলে হুমকিদমকি দিয়ে বিষয়টি ধামা চাপা দিয়েছেন।


আরো পড়ুন