• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৬:৪৪ অপরাহ্ন

নড়াইলের স্বপ্নের খোঁজে’র এবার ৪৬৬ কিলোমিটার স্বপ্নযাত্রা বন্যাদুর্গতদের পাশে 

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল প্রতিনিধি / ১৩৬ বার পঠিত
আপডেট: বুধবার, ২৯ জুন, ২০২২

সুনামগঞ্জের দুরত্ব ৪৬৬ কিলোমিটার। আর সিলেটের দুরত্ব প্রায় ৪০০ কিলোমিটার। শত শত কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে অদম্য সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন ‘স্বপ্নের খোঁজে ফাউন্ডেশন’ এর সদস্যরা। স্বেচ্ছাসেবী এই সংগঠনটি সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়েছে। এ লক্ষ্যে মাঝারি ট্রাকে ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে নড়াইল থেকে সিলেট ও সুনামগঞ্জে ছুটে গেছেন সংগঠনের সদস্যরা
উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে জানান, তারা মঙ্গলবার (২৮ জুন) সকাল ৮টা থেকে ত্রাণ নিয়ে ছুটছেন সুনামগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায়। এর আগে সোমবার সুনামগঞ্জ সদরের বিভিন্ন এলাকায় বানভাসি ৫০০ লোকের মাঝে রান্না করে রাতের খাবার দিয়েছেন স্বপ্নের খোঁজে ফাউন্ডেশনের সদস্যরা। সিলেট ও সুনামগঞ্জে তিন ধরে ত্রাণ বিতরণ করবেন তারা।
ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে-চার কেজি করে চাল, এক কেজি করে ডাল, পেঁয়াজ, আলু ও তেল, আধা কেজি করে রসুন, চিড়া ও মুড়ি এবং একটি করে স্যানিটারি ন্যাপকিন, পানি বিশুদ্ধকরণ ওষুধ ও স্যালাইন। ২২০টি পরিবারের মাঝে এসব খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হবে। এছাড়া ১৫০ শিশুর জন্য নতুন পোশাক রয়েছে। বন্যা কবলিত দুর্গম এলাকায় এসব ত্রাণসামগ্রী ও নতুন পোশাক পৌঁছে দিচ্ছেন স্বপ্নের খোঁজে ফাউন্ডেশনের সদস্যরা।স্বপ্নের খোঁজে ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মির্জা গালিব সতেজ জানান, ২০১৭ সালে সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে অসহায়, ছিন্নমূল ও ভাসমান বেদে সম্প্রদায়ের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন তারা। মানবিক কাজ তাদের সবসময় উৎসাহিত করে। এরই ধারাবাহিকতায় এবার বানভাসি সিলেট ও সুনামগঞ্জবাসীর পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা তাদের। পড়ালেখার খরচ থেকে টাকা জমিয়ে সংগঠনের সদস্যরা বন্যাদুর্গতদের জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন। এছাড়া তাদের আত্মীয়-স্বজন, প্রবাসী ছাড়াও নড়াইল শহরের রূপগঞ্জ, মাইজপাড়া এবং লোহাগড়া বাজারের ব্যবসায়ী ও পথচারীরা এ কাজে তাদের সহযোগিতা করেছেন। সবমিলে দুই লাখ টাকার ত্রাণ বিতরণ করছেন তারা। পরবর্তীতে আরো ত্রাণ দেয়ার ইচ্ছা আছে। এ কাজে উৎসাহ যুগিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় পিপিএম (বার), সিভিল সার্জন ডাক্তার নাছিমা আকতার, সহ অনেকে।

মির্জা গালিব সতেজ বলেন, ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে ছিন্নমূল শিশুদের নিয়ে আনন্দ অনুষ্ঠান ভাগাভাগি করে নেয়ার মধ্য দিয়ে স্বপ্নের খোঁজে ফাউন্ডেশনের পথচলা শুরু হয়। সেই থেকে সুবিধাবঞ্চিত শিশু, ভাসমান বেদে সম্প্রদায় ও অসহায় মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন তারা। এরই ধারাবাহিকতা ভাসমান বেদে সম্প্রদায়ের মাঝে শিক্ষা ও জীবনযাত্রা মানউন্নয়ন নিয়ে কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘জয় বাংলা ইয়ুথ পুরস্কার-২০২১’ জয়লাভ করে স্বপ্নের খোঁজে ফাউন্ডেশন। ‘সুখ স্বপ্নের সন্ধানে কাজ করব মোরা একই বন্ধনে’-এ স্লোগানে ভবিষ্যতেও এমন আয়োজন অব্যাহত রাখতে চায়। আমাদের প্রত্যাশা তরুণ প্রজন্মসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ এমন ইতিবাচক কাজে অনুপ্রাণিত হবেন।
বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমে মির্জা গালিব সতেজ ছাড়াও উপস্থিত আছেন সংগঠনের সদস্য সোহাগ ফরাজী, শামীম হোসেন, আল আমিন, সৌরভ মোল্যা, শেখ সাদী,  চয়ন দে, মহিউদ্দিন, রানা রায়, সৈয়দ পর্বত ও খালিদ পারভেজ। এদিকে স্বপ্নের খোঁজে ফাউন্ডেশন করোনাকালীন সময়ে অসহায় মানুষকে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ, বিনামূল্যে সবজি বাজার, গরিব কৃষকের ধান কর্তন, চিকিৎসাসেবা, হাসপাতাল ও এতিমখানায় ইফতার বিতরণ, ঈদে ছিন্নমূল ও বেদে সম্প্রদায়ের শিশুদের মাঝে নতুন পোশাক উপহার দেয়াসহ বিভিন্ন ইতিবাচক কাজ করে যাচ্ছে। সংগঠনে বর্তমানে সদস্য সংখ্যা ৪৫ জন। এদের বেশির ভাগই কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী। #


আরো পড়ুন