• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৪৫ অপরাহ্ন

সাংবাদিকতার শপথনামা

সাঈদুর রহমান রিমন / ২৪৪ বার পঠিত
আপডেট: মঙ্গলবার, ৩ আগস্ট, ২০২১

জনগণের ভোটের মাধ্যমে গণরায় প্রাপ্তির পরও একজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর থেকে মান্যবর প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত সকল পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিকে তার দায়িত্ব গ্রহণের পূর্বেই শপথ বাক্য পাঠ করা বাধ্যতামূলক।

শপথবিহীন তার দায়িত্বভার গ্রহণ ও পালন কোনটাই সহীহ শুদ্ধ বলে পরিগণিত হয় না। তাহলে বৃহত্তর জনসেবা নিশ্চিতকরণসহ রাষ্ট্রকে সহায়তা করার মতো গুরুত্ববহ ভূমিকা পালনের আগে কেন একজন সাংবাদিক শপথহীন থাকবেন? রাষ্ট্র, জনগণ এবং সর্বোপরি নিজের বিবেকের কাছে তার কেন দায়বদ্ধতামূলক অঙ্গিকার থাকবে না?
সহকর্মি ভাই বোনেরা নিজের বুকে হাত দিয়ে নিজের কাছেই একবার প্রশ্ন করুন তো, দীর্ঘ সাংবাদিকতার জীবনে একবারও এমন শপথবাক্য পাঠ করেছেন কি না? এবার ভাবুন নিজের পেশাদারিত্বের ক্ষেত্রে নিজেই কতটুকু সহীহ শুদ্ধ থাকতে পারছি। যদি আমাদের ন্যূনতম অঙ্গিকার না থাকে, এ সমাজ এ রাষ্ট্রের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতার কোনো ঘোষণা না থাকে, তাহলে আমাদের পেশাদারিত্বে স্বচ্ছতা কোথায়?

সাংবাদিকতা একটি স্বাধীন পেশা। এ পেশা গ্রহণ করতে কোনো ধরনের ‘লাইসেন্স’-এর প্রয়োজন পড়ে না। তাই তথ্য বিকৃতি কিংবা তথ্য গোপন করার জন্য তার লাইসেন্স বাতিলের কোনো প্রশ্নই আসে না। কিন্তু একজন আইনজীবীর, ডাক্তারের পেশায় আসতে লাইসেন্স-এর দরকার পড়ে। একজন আইনজীবী কিংবা একজন ডাক্তার ভুল করলে, অভিযুক্ত হলে তার লাইসেন্স বাতিল হতে পারে। লাইসেন্স লাগে না বলে. একজন সাংবাদিকের দায় অনেক বেশি। সমাজ তার কাছ থেকে অনেক বেশি দায়িত্বশীল আচরণ আশা করে। অধিকারের প্রশ্নে কখনো কখনো একজন সাংবাদিককে ‘সেল্ফ সেন্সরড্’ হতে হয়। সত্য প্রকাশে তাকে অন্যদের চেয়ে অনেক বেশি ধৈর্যশীল এবং বস্তুনিষ্ঠ হতে হয়।

নৈতিকতার প্রশ্নে থাকতে হয় অবিচল। নৈতিকতা ছাড়া একজন সাংবাদিক সাংবাদিক হওয়ার যোগ্যতাই রাখেন না। সাংবাদিকের অস্ত্র- কলম। তিনি যা ইচ্ছা, তা-ই লিখতে পারেন। এ ব্যাপারে তিনি স্বাধীন! কিন্তু স্বাধীনতা মানে যথেচ্ছাচার নয়। তাকে রাষ্ট্রীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্টতা, দেশের আইন, সংস্কৃতি, রুচি, সমাজ ব্যবস্থা ও ধর্মিয় অনুভূতি মাথায় রেখে কলম ধরতে হয়। এর সাথে আরো একটা প্রশ্ন জড়িত। সেটি হচ্ছে, মানবিক বোধের বাইরে তিনি কিছুই করতে পারেন না। একজন মানবিক বোধসম্পন্ন মানুষই কেবল সাংবাদিক হওয়ার যোগ্যতা রাখেন।

সরকারিভাবে কোনো শপথ বা অঙ্গিকারনামা বাধ্যতামূলক করে চাপিয়ে দেয়া হয়নি, তবে গণমাধ্যমের সকল শাখার দায়িত্বশীল প্রতিনিধিবর্গেরস মন্বয়ে সার্বজনীন আচরণবিধি প্রণয়ন হয়েছে। বিএমএসএফ এর সিনিয়র সহ-সভাপতি সাঈদুর রহমান রিমন সার্বজনীন এ আচরণবিধিকে ‘শপথনামা’ হিসেবে গ্রহণ করার প্রস্তাব দিয়েছেন। বিএমএসএফ এতে সর্বসম্মত ভাবে একমত পোষণ করেছে বলে সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা সাধারন সম্পাদক আহমেদ আবু জাফর জানিয়েছেন। অতএব, এটাই হোক আমাদের শপথনামা…

=======


আরো পড়ুন